ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে নির্বাচনের তফসিল

৩১ অক্টোবরের মধ্যে ভোটার হলে ভোট দিতে পারবে ।। পোস্টাল ব্যালটে শুধু প্রতীক থাকবে, প্রার্থীর নাম থাকবে না ।। আচরণবিধি চূড়ান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৮ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে নির্বাচনের তফসিল

ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, যেদিন ভোট হবে, তার ৬০ দিন আগে তফসিল। রমজান যদি ১৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়, তাহলে শপথ ও দায়িত্ব গ্রহণে দুই-চার দিন সময় দিতে হবে। সেভাবে হিসাব করেই তফসিল হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন ভবনে নবম কমিশন সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। বৈঠকে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে রোজার আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য যে চিঠি দিয়েছেন, আজকের মিটিংয়ে সেটা উপস্থাপন হয়েছে বলে জানান এই নির্বাচন কমিশনার।

প্রথমবারের মতো আগামী নির্বাচনে প্রবাসী বাঙালি ভোটারদের ভোট দেওয়ার সুযোগ তৈরি করছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে আবুল ফজল বলেন, প্রবাসীরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবেন। তাদের ব্যালট পেপারে শুধু প্রতীক থাকবে। প্রার্থীর নাম থাকবে না। প্রবাসীদের কাছে সিম্বল ব্যালট (প্রতীক সংবলিত) যাবে। প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর সিম্বল ব্যালটে ভোট দেবেন। ইসিতে এসে পোস্ট অফিস ব্যালট নিয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে নিবন্ধন করে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর তারা অনলাইনে প্রার্থীর তালিকা দেখতে পারবেন। সেই অনুযায়ী তারা পছন্দের প্রার্থী দেখে ব্যালটে থাকা প্রার্থীর প্রতীকে ভোট দেবেন। এবার তিনভাবে পোস্টাল ব্যালটে ভোট হবে। যারা প্রবাসে, কারাগারে ও ভোটের দায়িত্বে থাকেন; তাদের জন্য এই ব্যবস্থা থাকবে। এজন্য আগে নিবন্ধন করতে হবে। সেপ্টেম্বর থেকে প্রচার ও ভোটার-শিক্ষণের কাজ চলবে। আর শেষ মুহূর্তে প্রার্থী পরিবর্তন হলে আদালতের আদেশে সেখানে পোস্টাল ব্যালট হবে না। তবে আইনি কার্যক্রম যেন দ্রুত হয়, সে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

পোস্টাল ব্যালট ব্যয়সাপেক্ষ উল্লেখ করে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, এটা ব্যয়সাপেক্ষ পদ্ধতি। আনা-নেওয়া করতে ব্যালটপ্রতি ৫০০ টাকা, এরপর ছাপানোর খরচ আছে ১০০-২০০ টাকা। আবার নিবন্ধন কার্যক্রমের জন্য প্রকল্প নেওয়া হবে। প্রতি ১ লাখ ভোটারের জন্য সব মিলিয়ে ৬ থেকে ৭ কোটি টাকা লাগবে। তিনি জানান, ভোটার তালিকা আইনে সামান্য সংশোধন করা হয়েছে। এজন্য বছরের মাঝামাঝিতে ভোটার করে নেওয়া যাবে। ২০২৫ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যারা ১৮ বছর পূর্ণ করবে, তাদের তালিকায় যুক্ত করা হবে। এ সময়ে যারা ভোটার হবেন, তারা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। ১৮ থেকে ২০ লাখ তরুণ ভোটার যোগ হতে পারে বলে জানান তিনি।

ভোট সামনে রেখে আচরণবিধিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার রোধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘প্রবলেমটা হচ্ছে মিসইনফরমেশন, ডিসইনফরমেশন, ম্যাল ইনফরমেশন। এগুলো প্রতিহত করার জন্য আমরা আচরণবিধিটি ইনক্লুড করেছি।’ তিনি জানান, আচরণবিধিটা শুধু কিন্তু প্রার্থী এবং দলের জন্য। কিন্তু এই এআইর ব্যবহার তো এদের বাইরেও লোকজন করবে। শুধু তো রাজনৈতিক দল আর প্রার্থীরা করবে না। দেশ থেকে করবে, দেশের বাইরে থেকে করবে।  

ড্রোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা, সিসি ক্যামেরা নিয়ে নিমরাজি

নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো ধরনের ড্রোন ব্যবহার করা যাবে না বলে জানান এ নির্বাচন কমিশনার। এক প্রশ্নের জবাবে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘ড্রোন এবং কোয়ার্ডকপ্টার এ ধরনের কোনো কিছু কোনো প্রার্থী বা তার এজেন্ট বা কোনো কেউ ব্যবহার করতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশনের ব্যবহার করার কোনো প্রয়োজনীয়তা যদি আসে তখন সামনে আমরা আলোচনা করব। গণমাধ্যমও পারবে না।’ নির্বাচনে সিসি ক্যামেরার ব্যবহারকেও যপারে বলে জানান তিনি।