নতুন অধ্যায়ে টমাস মুলার
বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে রেকর্ড গড়ে, ট্রফির পর ট্রফি জিতে প্রায় আড়াই দশকের এক ঐতিহাসিক অধ্যায় শেষ করলেন টমাস মুলার। তবে ৩৫ বছর বয়সেও থেমে নেই তাঁর সাফল্যের ক্ষুধা। সেই ক্ষুধা মেটাতেই এবার জার্মান গ্রেটের গন্তব্য কানাডার ক্লাব ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপস এফসি।
মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সের এই ক্লাবে ২০২৫ মৌসুমের বাকি সময়টা মুলার খেলবেন স্ট্যান্ডার্ড ডিল চুক্তিতে। এরপর ২০২৬ মৌসুমে তার চুক্তি উন্নীত হবে ডেজিগনেটেড প্লেয়ার স্লট-এ, যেখানে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকে নির্ধারিত সীমার বাইরে যাওয়ার সুযোগ থাকে।
মুলারকে দলে ভেড়াতে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসকে এমএলএসের নিয়ম অনুযায়ী ‘ডিসকভারি রাইটস’ কিনতে হয়েছে এফসি সিনসিনাটির কাছ থেকে। এজন্য ৩ লাখ মার্কিন ডলার প্রদান করা হয়েছে, কিছু শর্ত পূরণ হলে পরের মৌসুমে যোগ হবে আরও ১ লাখ ডলার।
‘ডিসকভারি’ তালিকায় থাকা খেলোয়াড়ের সঙ্গে অন্য কোনো ক্লাব সরাসরি আলোচনা করতে পারে না। মুলারের আলোচনার অধিকার ছিল সিনসিনাটির, যদিও গত এপ্রিলেই তিনি ক্লাবটিতে যোগ দেওয়ার আগ্রহ দেখাননি বলে জানিয়েছে ইএসপিএন।
২০০০ সালে মাত্র ১০ বছর বয়সে বায়ার্ন মিউনিখের একাডেমিতে পা রাখেন মুলার। এরপর ২৫ বছরের ক্লাব ক্যারিয়ারে খেলেছেন ৭৫৬ ম্যাচ, যা ক্লাব ইতিহাসে সর্বোচ্চ। গোল করেছেন ২৫০টি, অ্যাসিস্ট ২৩৮টি। জিতেছেন ৩৩টি ট্রফি—যার মধ্যে রয়েছে একাধিক বুন্দেসলিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা।
ভ্যাঙ্কুভারে যোগ দিয়ে নিজের লক্ষ্য স্পষ্ট করেছেন মুলার। বলেন, ‘ভ্যাঙ্কুভারে যেতে মুখিয়ে আছি, দলকে চ্যাম্পিয়নশিপ জেতাতে সহায়তা করাই আমার মূল লক্ষ্য। এই শহর সম্পর্কে অনেক ইতিবাচক কথা শুনেছি, কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—আমি সেখানে যাচ্ছি জয়ের জন্য।’
বর্তমানে এমএলএস ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সের পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে হোয়াইটক্যাপস, ২৪ ম্যাচে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে। শীর্ষে থাকা স্যান ডিয়েগো এফসি খেলেছে এক ম্যাচ বেশি, পয়েন্ট ৪৬।
জার্মানির হয়ে ১৩১ ম্যাচ খেলে ৪৫ গোল করেছেন মুলার। ২০১০ বিশ্বকাপে পেয়েছেন গোল্ডেন বুট ও সেরা তরুণ ফুটবলারের পুরস্কার, আর ২০১৪ বিশ্বকাপে দেশের বিশ্বকাপ জয়ের পথে জিতেছেন সিলভার বুট ও সিলভার বল। ২০২3 সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানান তিনি।
ট্রফিপূর্ণ এক ক্যারিয়ারের পরে এবার নতুন চ্যালেঞ্জে নামছেন মুলার—উত্তর আমেরিকার ফুটবলে নিজের জায়গা করে নিতে। নতুন মঞ্চ, নতুন দল, কিন্তু পুরোনো সেই লক্ষ্যই—শিরোপা জয়।