তাসকিন ও তার বন্ধুদের নাটকীয় দিন

ক্রীড়া প্রতিবেদক
২৯ জুলাই ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
তাসকিন ও তার বন্ধুদের নাটকীয় দিন

জাতীয় দলের পেসার তাসকিন আহমেদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন তারই বাল্যবন্ধু। সিফাতুর রহমান সৌরভ নামের ওই ব্যক্তির অভিযোগ, ফোনে ডেকে নিয়ে তাকে মারধর করেছেন ও হুমকি দিয়েছেন তাসকিন। এ সময় সঙ্গে ছিলেন আরেক বন্ধু ইশতিয়াক হৃদয়ও। এ ঘটনায় রবিবার গভীর রাতে মিরপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছেন সৌরভ। যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এ স্পিডস্টার। বিষয়টিকে পুরোটাই মিথ্যা বলে দাবি করেছেন তিনি। তাসকিন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে পুরোটাই মিথ্যা। আমি ওদের মারিনি।’

নিজের ফেসবুকে এক বিবৃতি দিয়ে নিজের অবস্থান আরও পরিষ্কার করে তাসকিন লিখেছেন, ‘সবাইকে অনুরোধÑ গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না। আমি আমার ছোটবেলার বন্ধুর গায়ে হাত তুলেছি এমন একটা ঘটনায় অনেক কিছুই ঘটে যাচ্ছে। আমার মনে হয় এমন গুজবে কান দিয়ে বিভ্রান্ত হবেন না এবং অন্য কেউ বিভ্রান্ত করবেন না।’

হঠাৎ করেই গতকাল নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হয়েছেন তাসকিন। এ নিয়ে ক্রিকেটাঙ্গন বেশ সরগরম ছিল। সৌরভের অভিযোগ, রবিবার রাতে মিরপুরে সনি সিনেমা হলের সামনে তাকে ডেকে নিয়ে কিল-ঘুষি মেরে আহত করেন ও হুমকি দেন তাসকিন। তিনি বলেছেন, ‘আমাকে ধরে হঠাৎ করে আমাকে শুধু মাথায় ঘুষি দিছে। গাড়ির মধ্যে আমাকে ছাড়ছেই না।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘দিনশেষে যাকে পাচ্ছে তাকে মারতেছে। আবার মারার পর কাউকে টাকা দিচ্ছে, হসপিটালে নিয়েও আবার চিকিৎসা করিয়ে টাকা দিচ্ছে।’ কেন এমনটা করেছেন তাসকিন এমন প্রশ্নের জবাবে সৌরভ জানিয়েছেন, মদপান ও নারী সঙ্গের কারণে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করায় এমন ঘটনা ঘটেছে।

তাসকিনের আরেক বন্ধু ইশতিয়াক হৃদয় বলেছেন, ‘বলতেছে (তাসকিন) সৌরভরে ফোন দে। আমি বললাম ‘না’, সৌরভকে কেন ফোন দিব? বলে, ওর ওপর আমার জিদ আছে।’ আহত হওয়ায় সৌরভকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাসকিনের পাশের বাসায় বসবাস করা সৌরভের খালা ঝুমা খান। তিনি বলেছেন, ‘আমিও বাইরে ছিলাম, এসে দেখি আমার এই ভাগ্নেকে মেরে-ধরে একাকার অবস্থা।’

ঝুমা খানের ফোন থেকে তাসকিনের বাবা আব্দুর রশিদকে ফোন করা হলে তিনি বলেছেন, ‘থুতু মারলে তো আমাদের ওপরেই পড়বে। কী বলবো রে মা, তোরা এগুলা বলিস না আর। এগুলা শুনলে লজ্জা লাগে। কোন সঙ্গে পড়ছিল আল্লাহ জানে।’ তাসকিনের উল্টো অভিযোগ, মারধর করা হয়েছে তার এক বন্ধুকে। তিনি বলেছেন, ‘ ওরা (সিফাতুর রহমান সৌরভ, ইশতিয়াক হৃদয়) আমার নামে মিথ্যা জিডি করে আমাকে বিব্রত করার চেষ্টা করছে।

আমার বন্ধু রসি নামে একজন আছেন, ওরা আমার এই বন্ধুকে মেরেছে। তাই আমি মোহাম্মদপুর থানার ওসি সাহেবকে ফোন করেছিলাম। পুলিশ গিয়ে ওদেরকে মোহাম্মদপুরে খুঁজেছে। এ জন্য এরা উল্টো আমার নামে জিডি করেছে।’ তাসকিন জানিয়েছেন, অভিযোগ দেওয়ায় সৌরভ তার কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। অভিযোগ প্রত্যাহার করার কথাও বলেছেন তিনি।

তাসকিন বলেছেন, ‘ওদের সবার সঙ্গে আমার ছোটবেলার সম্পর্ক। আমি সৌরভকে জিজ্ঞেস করেছি, তুই এটা কেন করলি? আমার নামে অভিযোগ কেন দিলি? আমি তো সেখানে ছিলামই না! সে বলেছে, সে নাকি এটা ইমোশনালি করে ফেলেছে। সৌরভ আমার কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছে, অভিযোগও প্রত্যাহার করেছে।’

বাবা আব্দুর রশিদের অডিওকল রেকর্ড নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘কিছু কথা ওরা রেকর্ড করেছে। আমার বাবা আবার ওই ঘটনার কিছুই জানত না। উনি পরে শুনে কিছু কথা বলেছে। সাথে এটাও বলেছে, ‘ওরা ছোট বেলার বন্ধু, এক সাথে মিলে মিশে থাকবে।’ আসলে গত কয় মাস ধরে ওদের সাথে এখন মিশি না, তাই এখন ওর মাথা খারাপ হয়ে গেছে।’

এদিকে তাসকিনের এ ইস্যুতে কথা বলেছেন বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু। তিনি বলেছেন, ‘ এটা নিয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়ে গেছে। এটা যদি ঘটে থাকে তাহলে সেটা খুব দুঃখজনক। আইকন প্লেয়ারের এসবে জড়ানো উচিত না।’