ব্যাটম্যানের গাড়ি কিনলেও রাস্তায় চালাতে পারবেন না নেইমার
ফুটবল মাঠে নৈপুণ্য কিংবা মাঠের বাইরের বিলাসী জীবনযাপন নেইমার মানেই যেন চমকে ভরা এক নাম। এবার নতুন চমক দিয়ে খবরের শিরোনামে এই ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার। কিনেছেন এক ‘অসাধারণ’ গাড়ি—সিনেমার সেই বিখ্যাত ব্যাটমোবাইল!
এ নিয়ে স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা জানায়, নেইমার যে গাড়িটি কিনেছেন, তা মূলত ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ডার্ক নাইট’ ট্রিলজির অনুপ্রেরণায় বানানো ব্যাটমোবাইল টাম্বলার—মাত্র ১০টি তৈরি হয়েছিল এই লিমিটেড এডিশনের গাড়ি। ব্যাটম্যান চরিত্রের ৮৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে তৈরি হওয়া এই গাড়ির বাজারমূল্য প্রায় ৩০ লাখ ডলার হলেও নেইমার সেটি কিনেছেন ১৫ লাখ ডলারে—বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৮ কোটি!
গাড়িটি আকারে যেমন বিশাল, ফিচারেও তেমনি বিস্ময়কর। ৪.৬৫ মিটার দীর্ঘ, ২.৮ মিটার প্রস্থের এই গাড়িটি তৈরি স্টিল ফ্রেম আর মোড়ানো কার্বন ফাইবার ও কেভলার দিয়ে। ৬.২ লিটার ভি৮ ইঞ্জিন, যার শক্তি ৫২৫ হর্সপাওয়ার! সঙ্গে সিনেমার মতো ‘ধোঁয়া বোমা’, একটি রেপ্লিকা জেট ইঞ্জিন, নড়াচড়া করতে পারা স্পয়লার, অকার্যকর মেশিনগান এবং ব্যাটম্যান ও রবিনের আদলে তৈরি দুটি সিটের ককপিট—সব মিলিয়ে যেন বাস্তবের মধ্যেই এক সিনেমা!
নেইমারের ব্যাটম্যান–ভালোবাসা নতুন নয়। তার পিঠে রয়েছে ব্যাটম্যান লোগোর ট্যাটু, ২০২২ সালে ‘দ্য ব্যাটম্যান’ সিনেমার প্রিমিয়ারে গিয়েছিলেন এবং রবার্ট প্যাটিনসনের ব্যাটমোবাইলে বসার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তার। এবার শুধু দেখেই থেমে থাকেননি, কিনেই ফেলেছেন স্বপ্নের সেই গাড়ি!
তবে এত খরচ আর শখের পরেও নেইমার এই ব্যাটমোবাইল রাস্তায় চালাতে পারবেন না। ইউরোপ ও ব্রাজিলের সড়ক নিরাপত্তা বিধিমালা অনুযায়ী, এই গাড়ির চলাচল নিষিদ্ধ। তাই এটি কেবলই থাকবে নেইমারের বিলাসবহুল গ্যারেজে, যেখানে আগে থেকেই রয়েছে এক ঝাঁক সুপারকার—অডি আর৮ স্পাইডার ভি১০ প্লাস, ফেরারি পুরোসাঁগে, বেন্টলি কন্টিনেন্টাল জিটি, অ্যাস্টন মার্টিন ডিবিএক্স ও ল্যাম্বরগিনি হুরাকান।
নেইমারের অর্থনৈতিক সামর্থ্যও এই ব্যাটমোবাইল কেনার জন্য যথেষ্ট বলেই প্রমাণ করে সেলিব্রিটি নেট ওয়ার্থ-এর তথ্য। তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৩৫ কোটি ডলার। পিএসজিতে প্রতি মৌসুমে বেতন পেতেন প্রায় ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার, এন্ডোর্সমেন্ট ও বোনাসে বাড়তি ২–৪ কোটি ডলার। সৌদি ক্লাব আল হিলালের সঙ্গে চুক্তিতে বছরে আয় হতো ১৬ কোটি ডলার, যদিও ক্লাব ছাড়ার সময় পেয়েছেন ১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
পিউমা, রেড বুল, বিটস, প্যানাসনিকের মতো বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে তার। এছাড়া দুবাইয়ের ৫ কোটি ডলারের পেন্টহাউস, যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে বিশাল সম্পত্তি ও ব্রাজিলে নিজের একটি ব্যক্তিগত দ্বীপও আছে তার।
শরীরে ব্যাটম্যানের ট্যাটু, গ্যারেজে ব্যাটমোবাইল, আর অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি ডলার—নেইমার যেন রূপকথার কোনো বাস্তব সুপারহিরো!