বিতর্কমুক্ত বিপিএলের লক্ষ্য গভর্নিং কাউন্সিলের
ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক জটিলতা, উইকেটের মান নিয়ে প্রশ্ন, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর আর্থিক অসঙ্গতি এবং সংগঠনের নানা দুর্বলতা—এসব দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগকে (বিপিএল) করে তুলেছে বিতর্কিত একটি টুর্নামেন্ট। তবে এবার অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে বিতর্কমুক্ত বিপিএল আয়োজনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন টুর্নামেন্টের গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মাহবুব আনাম।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদের সভায়বিপিএলকে ঢেলে সাজাতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, টুর্নামেন্টের দুর্বলতা ও সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মাহবুব আনাম, সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন এবং বোর্ড পরিচালক ইফতেখার রহমান।
এর আগে সোমবার বিসিবি কার্যালয়ে ক্রিকেটারদের প্রতিনিধি হিসেবে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, জাকির হাসান ও এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে আলোচনা করেন তারা। ওই আলোচনায় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
পর্যায়ক্রমে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক, স্পন্সর এবং সমর্থকদের সঙ্গেও আলোচনার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মাহবুব। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে দুই ঘণ্টার আলোচনার পর তিনি বলেন, “আমরা সবার সঙ্গে উন্মুক্তভাবে কথা বলতে চাই। নিজেদের ভুলগুলো বুঝে না নিলে, তা শুধরানো সম্ভব না। আমরা চাই বিপিএল হোক বাংলাদেশের ক্রিকেটের গর্ব, যা বিশ্বে আমাদের ইতিবাচকভাবে তুলে ধরবে।”
তিনি আরও জানান, সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে যেসব পরামর্শ এসেছে, সেগুলোর যতটা সম্ভব বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে বিসিবি। “সব পরামর্শ একসঙ্গে বাস্তবায়ন করা সম্ভব না হলেও, ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে চাই,” বলেন মাহবুব।
বিপিএল শেষে অংশীজনদের নিয়ে পর্যালোচনামূলক বৈঠকের পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানান তিনি। ‘আগে টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে গেলেই সবাই ভুলে যেত। এবার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বিপিএল শেষ হওয়ার পর কোথায় ভালো করেছি, কোথায় ঘাটতি ছিল, তা বিশ্লেষণ করব।’
ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে মাহবুব বলেন, ‘খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকেও অনেক গঠনমূলক এবং বাস্তব পরামর্শ এসেছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, মিডিয়া এবং ক্রিকেটার—দুই পক্ষের মন্তব্যে বেশ মিল পেয়েছি।’
সবশেষে মাহবুব আনাম বলেন, ‘বিপিএলকে সফল করতে হলে সকল স্টেকহোল্ডারকে একসাথে কাজ করতে হবে। একতরফাভাবে কিছু সম্ভব নয়। আমাদের লক্ষ্য এক হলে বিপিএল নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।’
তবে ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে বিপিএল আয়োজনের প্রস্তুতি চললেও, ওই সময় জাতীয় নির্বাচন থাকায় সূচি নিয়ে রয়েছে কিছু অনিশ্চয়তা। বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই বিসিবি এগোচ্ছে বলে জানা গেছে।