লারার রেকর্ড ৪০০ ছোঁয়ার দোরগোড়ায় গিয়েও থেমে গেলেন মুল্ডার

স্পোর্টস ডেস্ক
০৭ জুলাই ২০২৫, ১৮:৪৬
শেয়ার :
লারার রেকর্ড ৪০০ ছোঁয়ার দোরগোড়ায় গিয়েও থেমে গেলেন মুল্ডার

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ভোর গড়াচ্ছে। হয়তো ঘুম থেকে উঠে গেছেন ব্রায়ান লারা। প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন অভিনন্দনের, ঠিক যেমন ২০০৩ সালে ম্যাথু হেইডেন তার ৩৮০ রানের ইনিংসে নিজের ৩৭৫ রানের রেকর্ড ভাঙার পর জানিয়েছিলেন।

এবারও এমনই এক মুহূর্ত তৈরি করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক উইয়ান মুল্ডার। বুলাওয়ে টেস্টে অভিষেক ম্যাচেই ইতিহাস গড়ে ফেলেছেন তিনি—অধিনায়ক হিসেবে টেস্ট অভিষেকে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান, এবং তা-ও মাত্র ২৯৭ বলে, যা টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম ট্রিপল সেঞ্চুরি।

তবে অবাক করার মতো ব্যাপার হলো, মুল্ডার ব্যক্তিগত ৩৬৭ রানে অপরাজিত থেকেই ইনিংস ঘোষণা করেন। তখনও দ্বিতীয় দিনের লাঞ্চ বিরতি, হাতে সময় প্রচুর। উইকেট ছিল ব্যাটিং স্বর্গ, জিম্বাবুয়ের বোলিং ছিল দিশেহারা, এবং তার মধ্যেই মুল্ডার ক্রিজে ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। অথচ মাত্র ৩৪ রান দূরে থাকা লারার ৪০০ রানের সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড স্পর্শ করার চেষ্টাও করলেন না তিনি!

এই সিদ্ধান্তে অবাক ক্রিকেটবিশ্ব। অনেকেই ভাবছেন, লারার প্রতি সম্মান দেখাতেই কি এমন সিদ্ধান্ত? নাকি ১৯৯৮ সালের মার্ক টেলরের মতো কিংবদন্তির রেকর্ড অক্ষত রাখার সৌজন্যবোধ কাজ করেছে মুল্ডারের মধ্যে? মার্ক টেলর যেমন ডন ব্র্যাডম্যানের ৩৩৪ রানের ইনিংস স্পর্শ করে থেমে গিয়েছিলেন, মুল্ডারও কি তেমন কিছু ভেবেছেন?

তবে প্রশ্ন তো থাকছেই—তিনি হেইডেনের ৩৮০ পেরিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস করেও থামতে পারতেন। সেটাও করেননি। এমনকি দলের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিং আরও কিছুক্ষণ চালিয়ে যাওয়া যেত, কারণ খেলা ছিল দ্বিতীয় দিনেই, হাতে ছিল তিনদিন।

দিন শেষে, যদিও রেকর্ড বইয়ে একাধিক ইতিহাস লিখে গেছেন মুল্ডার। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এখন তার। হাশিম আমলার ৩১১ রানের ইনিংসকে পেছনে ফেলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে হানিফ মুহাম্মদের ১৯৫৮ সালের ৩৩৭ রানের ইনিংসকেও ছাড়িয়ে গেছেন, যা এতদিন প্রতিপক্ষের মাঠে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিল।

তবু, সবকিছুর মাঝে একটি প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—মুল্ডার থেমে গেলেন কেন? সম্মান না কি কৌশল? হয়তো ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সেই জবাব পাওয়া যাবে। ততক্ষণ পর্যন্ত, ক্রিকেটপ্রেমীদের কৌতূহলের আগুনে ঘি ঢেলে চলেছে এই অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত।