চবি ছাত্রদলের কমিটির খসড়া তালিকা ফাঁস
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা নিয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সামনে এসেছে। বিশেষ করে শাখার শীর্ষ পাঁচ নেতার মধ্যে মতবিরোধ প্রকট আকার ধারণ করেছে। এরই মধ্যে নিজেদের মধ্যেই কমিটির খসড়া তালিকা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা ও অসন্তোষ। এ ছাড়া খসড়া তালিকায় বিভিন্ন পদে থাকা প্রায় শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কেন্দ্রে অভিযোগও জমা পড়েছে। এতে কমিটি পূর্ণাঙ্গ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন পদপ্রত্যাশী কর্মীরা।
একাধিক নেতাকর্মী আমাদের সময়কে বলেন, দলীয়ভাবে যারা মাঠে সক্রিয় ছিল, তাদের সঠিক পদে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। অছাত্র, মাদক ব্যবসায়ী, ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের কর্মীদের দিয়ে কমিটি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এতে দ্বন্দ্ব আরও বাড়ছে।
তবে চবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই, রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা রয়েছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থেকে ক্যাম্পাসে সাংগঠিত হয়ে কর্মসূচি পালন করছি। পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল আমাদের সঙ্গে বসেছে; মতামত নিয়েছে। আশা করছি শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হবে। এতে কোনো বিতর্কিতদের ঠাঁই হবে না বলে জানান তিনি।
২০২৩ সালে ১১ আগস্ট চবি শাখা ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি গঠিত হয়। এতে আলাউদ্দিন মহসিনকে সভাপতি ও আব্দুল্লাহ আল নোমানকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন-উর-রশিদ মামুন, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান সাজ্জাদ
আরও পড়ুন:
হরতাল-অবরোধে শীতের পোশাক ব্যবসায় মন্দা
হোসেন হৃদয়। প্রায় দুই বছর শেষ হতে চললেও এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। এ নিয়ে হতাশ নেতাকর্মীরা।
গত রমজানের আগে পূর্ণাঙ্গ কমিটির নামে তালিকা জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয় কেন্দ্র থেকে। দায়িত্ব দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহইয়াকে। তিনি চবি ছাত্রদলের শীর্ষ পাঁচ নেতাকে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নামের তালিকা প্রস্তুত করতে বলেন। পূর্ণাঙ্গ তালিকা করতে বেশ কয়েকবার সভায় বসেন পাঁচ শীর্ষ নেতা; কিন্তু অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে তালিকা প্রস্তুত করতে পারেননি তারা। এমনিকি সভায় সাধারণ সম্পাদক নোমান ও সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন চরম বাগ্বিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এর মধ্যে এক সপ্তাহ আগে ২৫০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটির একটি খসড়া তালিকা তৈরি করার পর নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব নতুন করে শুরু হয়। আবার সেই তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার আগেই কর্মীরা অবগত হয়ে গেছেন কে কোন পদ পাচ্ছেনÑ এটা নিয়ে চাপা উত্তেজনা দেখা যায় কর্মীদের মধ্যে।
ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, ২৫০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটির লিস্টে অছাত্র, মাদক ব্যবসায়ী ও ছাত্রলীগের কর্মীদের পদায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে কেন্দ্রে অভিযোগ দেন চবি শাখা ছাত্রদলের শীর্ষ পাঁচ নেতা। এমন তথ্য পেয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি স্থগিত রাখে কেন্দ্রীয় সংসদ। বিষয়টি সমাধান করতে কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেত ও দুই যুগ্ম সম্পাদককে দায়িত্ব দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। গত শনিবার কেন্দ্রীয় নেতারা চবি ছাত্রদলের শীর্ষ পাঁচ নেতার সঙ্গে রুদ্ধশ্বাস বৈঠক করেন। তবে সেখানেও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
আরও পড়ুন:
আকতার পারভেজ সর্বোচ্চ ভোটে সিএসই পরিচালক
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেত বলেন, চবি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট। এখানে দক্ষ ও ত্যাগী নেতৃত্ব গড়ে তুলতে আমরা সবার মতামত নিচ্ছি। যারা ক্যাম্পাসে নির্যাতিত ও ফ্যাসিবাদবিরোধী কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন তাদের তালিকা নিয়েছি। খসড়া কমিটি ফাঁস নিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রদল বড় সংগঠন। সামান্য ওয়ার্ডের কমিটি হলেও আলোচনা-সমালোচনা হয়ে থাকে। বিভিন্ন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এগুলো স্বাভাবিক বিষয়। আমরা সবেমাত্র দায়িত্ব নিয়েছি। যাচাই-বাছাই করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। বিতর্কিত কাউকে কমিটিতে রাখা হবে না।