খরচ বেড়েছে চালে মুরগি-ডিমে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
২১ জুন ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
খরচ বেড়েছে চালে মুরগি-ডিমে স্বস্তি

ঈদুল আজহার পর মাংসের চাহিদা কমে যাওয়ায় ক্রেতাও কমেছে। এতে মুরগির বাজারেও প্রভাব পড়েছে। মাংসের বাজারে মুরগির দাম এখন কিছুটা স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে রয়েছে। গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৫০ টাক কেজি পর্যন্ত নেমেছে। একইভাবে ডিমের দামও কমেছে। অন্যদিকে চালের দাম বেড়েছে।

কারওয়ানবাজারসহ রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ দোকানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। যেখানে ঈদের আগে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। সেই হিসাবে ঈদের ছুটির আগে-পরে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম ২০ টাকা কমেছে। অপরদিকে সোনালি মুরগি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ২৮০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ানবাজারে মুরগির খুচরা বিক্রেতা মো. আব্বাস আলী বলেন, ঈদের পর থেকেই বাজার পড়তির দিকে রয়েছে। কয়েক দিন হলো ব্রয়লারের কেজি ১৫০ টাকায় নেমে

এসেছে। ঈদের পর রাজধানীর বাজারে এখনও ক্রেতার উপস্থিতি কম। তার ওপর বাসাবাড়িতে কোরবানির মাংস থাকায় মুরগির মাংসের চাহিদাও কম।

এদিকে ডিমের বাজারেও একই চিত্র বলে জানান তেজগাঁও এলাকার ডিম ব্যবসায়ীরা। এখানকার ব্যবসায়ী মো. লাভলু মিয়া জানান, ঈদের পর বাজার পড়তির দিকে রয়েছে। বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে ফার্মের বাদামি ডিমের ডজনের দাম কমে ১২০ টাকা পর্যন্ত নেমেছে। অন্যান্য বাজার ও পাড়া-মহল্লায় আরেকটু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর অন্যান্য খুচরা বাজার খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বেশির ভাগ দোকানে ফার্মের বাদামি ডিমের ডজন ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে পেঁয়াজ ও আলুসহ শাকসবজির বাজার আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে। দামের খুব একটা হেরফের নেই। পেঁয়াজের কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং আলুর কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর কাঁচা বাজারে পটোল, ঢ্যাঁড়স ও ঝিঙের মতো বিভিন্ন সবজি ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে মিলছে।

সবজির বিক্রেতারা জানান, ঈদের পর থেকে রাজধানীর বাজারে সবজির দাম নিম্নমুখী। সরবরাহও স্বাভাবিক রয়েছে।

ঈদের পর এসব পণ্যের দাম নিম্নমুখী হলেও উল্টোপথে হাঁটছে চাল। ভরা মৌসুমেও সরু ও মাঝারি চালের দাম কমার পর হঠাৎই ঊর্ধ্বমুখে দৌড় দিয়েছে। ঈদের ছুটি শেষ হতে না হতেই চালের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এতে প্রতিদিনের দরকারি চালের পেছনে ভোক্তাদের খরচ অনেকখানি বেড়ে গেছে।

জানা গেছে, ঈদের ছুটির পরপরই সরু চালের, বিশেষ করে মিনিকেট চালের দাম ৭৫ টাকা কেজি থেকে এক লাফে বেড়ে ৮০ টাকা হয়েছে। ব্র্যান্ডভেদে কোথাও কোথাও ৮২ টাকাও বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আঠাশ চালের দামও গত দুই দিনে কেজিতে অন্তত ২ টাকা বেড়েছে।

কদমতলী এলাকার চাল ব্যবসায়ী মো. মিলন ও মালিবাগের সবুর মোল্লা জানান, কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই ঈদের পর সরু চালের দাম এক লাফে বস্তা (৫০ কেজি) প্রতি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে মিলগুলো। এতেই খুচরা ও পাইকারি বাজারে দাম লাফিয়ে বেড়েছে। অথচ বাজারে চালের সংকট নেই। এর আগে সংকট থাকলেও বোরো মৌসুমের নতুন চাল ওঠায় সরবরাহ বেড়েছে। বাজারে চালের সরবরাহ এখন পর্যাপ্ত রয়েছে।

এদিকে মিল মালিকরা বলছেন, ধানের দাম বাড়তি এবং মিলগুলোতেও খরচ বেড়েছে। এর প্রভাব দামের ওপর পড়েছে। এর মধ্যে ধানের অবৈধ মজুদদকারীরা বাজারকে অস্থির করে তুলেছে। তারা হঠাৎ ধানের দাম প্রতি মণে ৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। এর প্রভাব চালের দামেও পড়েছে।