অর্থনৈতিক উন্নয়নে ৮ নীতি কৌশল অর্থ মন্ত্রণালয়ের
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারকে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদে আট ধরনের নীতি কৌশল গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়েছে, নিম্ন আয়ের জনগণকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাব থেকে সুরক্ষা দিতে সরকার ওএমএস (খোলা বাজারে খাদ্য পণ্য বিক্রি), টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডের মতো কর্মসূচি চালু করেছে। সরকার ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি তৈরির মাধ্যমে উপকারভোগীর সহায়তা প্রাপ্তি ব্যবস্থা পূর্ণ অটোমেশন করার উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে পারে।
বিদ্যুৎ খাতের বিষয়ে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ খাতে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সরকার ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে তিন বছর মেয়াদে একটি রোডম্যাপ করছে, যার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিক্রয় মূল্যের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে ভর্তুকি কমিয়ে এ খাতকে আর্থিকভাবে টেকসই করা হবে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, সরকার সার ব্যবস্থাপনা পুনর্মূল্যায়ন এবং কৃষি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপকরণের প্রাপ্যতা ও সরবরাহে যেন বিঘœ না ঘটে তা নিশ্চিত করছে।
ঋণ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন ও আর্থিক ঝুঁকি কমাতে সরকার অর্থ বিভাগের অধীনে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং বন্ড/বিল বাজার উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। নীতি কৌশলের বিষয়ে আরও বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ জোরদারে সরকার আর্থিক লেনদেনের অটোমেশন করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করবে। পাশাপাশি রাজস্ব আহরণ বাড়াতে ‘মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব কৌশল (এমএলটিআরএস,২০২৫)’ ও ‘ট্যাক্স এক্সপেন্ডিচার নীতিমালা’ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কাঠামোগত সংস্কার পরিকল্পনা গ্রহণ ও কার্যকরের মাধ্যমে সরকার ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতা উন্নয়নে দক্ষ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতি গ্রহণের পরিকল্পনা করেছে। একই সঙ্গে সরকার একটি দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন কৌশলপত্র প্রণয়ন করেছে, যার মাধ্যমে মধ্যমেয়াদে বিভিন্ন ঝুঁকি অর্থায়নের উত্তম বিকল্পের মূল্যায়নের
আরও পড়ুন:
একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী
উদ্যোগ নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে একটি সামগ্রিক দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং সাড়া প্রদান কৌশল তৈরি করা যেতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নীতি বিবৃতিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে তিনভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের ওপর মাঝারি মাত্রায় আর্থিক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান খাত সম্পর্কিত বিশ্লেষণে দেখা যায়, সম্মিলিতভাবে এসওই খাত দেশের সরকারের জন্য মাঝারি মাত্রার ফিসকাল ঝুঁকি সৃষ্টি করে। এসওই এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো সার্বিকভাবে সরকারের আর্থিক অবস্থার ওপর তিনভাবে প্রভাব ফেলে।
প্রথমত যদি এসওইর ঋণের জন্য গ্যারান্টি দেয় এবং তারা সেই ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়, তাহলে সরকারের তা পুনর্ভরণসহ আর্থিক ও অন্যান্য ক্ষতির ঝুঁকি থাকে। এটি ঘটতে পারে যদি প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হয়ে যায় বা তাদের প্রকল্পগুলো আশানুরূপ উৎপাদশীলতা দেখাতে ব্যর্থ হয়। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি না হলেও যদি তারা ক্রমাগত লোকসান করে, তাহলে তাদের সচল রাখতে সরকারকে বাড়তি পুঁজি জোগান দিতে হতে পারে। তৃতীয়ত যদি এসব প্রতিষ্ঠান প্রত্যাশিত মুনাফা না করতে পারে তাহলে সেটিও সরকারের রাজস্ব আয়ে চাপ বাড়াতে পারে। সার্বিকভাবে দেখা গেছে যে, এসওইসমূহের সম্পদকে সুচিন্তিতভাবে ব্যবহার করা প্রয়োজন, যাতে সর্বোচ্চ উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করা যায়।
আরও পড়ুন:
পাল্টে যেতে পারে আন্দোলনের ধরন