অভিষেকে দুঃস্বপ্নের রেকর্ড ম্যাকার্থির!
এমন অভিষেক কেবল দুঃস্বপ্নেই কল্পনা করা যায়। আয়ারল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার মাঠে নেমেই ইতিহাস গড়েছেন লিয়াম ম্যাকার্থি—তবে সেটা ভুলে যেতে চাওয়া এক ইতিহাস।
ব্রেডিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে ৪ ওভারে ৮১ রান দিয়েছেন এই ডানহাতি পেসার। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির অভিষেকে এত রান আর কোনো বোলার হজম করেননি। আসলে, টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খরচসাপেক্ষ স্পেল এটি। তার ওপরে আছেন কেবল গাম্বিয়ার মুসা জোবার্থে, যিনি ২০২৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দিয়েছিলেন ৯৩ রান।
টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশের বোলার হিসেবে তাই সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড এখন ম্যাকার্থির দখলে।
ম্যাকার্থি যখন বল হাতে নেন, স্কোরবোর্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ছিল ৪ ওভারে ৪৫। প্রথম বলেই শাই হোপ মারেন ছক্কা, পরের বলেও একই পরিণতি। প্রথম ওভারেই খরচ করেন ২১ রান। দ্বিতীয়বার বল হাতে নেন নবম ওভারে। এবার আক্রমণ চালান এভিন লুইস। এক ছক্কা ও চারটি চার মিলিয়ে ২৪ রান তুলে নেন ওই ওভারে। এরপর তৃতীয় ও চতুর্থ স্পেলে কিছুটা ‘সাশ্রয়ী’—দু’টি ওভারে দিয়েছেন ১৮ করে রান। সবমিলিয়ে ৪ ওভারে ২৪টি বলেই হজম করেন ১৬টি বাউন্ডারি—এর মধ্যে ১১টি চার ও ৫টি ছক্কা।
এই ম্যাচেই আরও তিনজন আয়ারল্যান্ড বোলার ৪ ওভারে ৫০-এর বেশি রান দিয়েছেন। আগুন ঝরানো ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তোলে ২০ ওভারে ২৫৬ রান, যা তাদের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টি-টোয়েন্টি সংগ্রহ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে মোট ২০টি চার ও ২০টি ছক্কা—অর্থাৎ ২০০ রান এসেছে শুধু বাউন্ডারি থেকে! সবচেয়ে বড় অবদান এভিন লুইসের। বাঁহাতি এই ওপেনার খেলেছেন মাত্র ৪৪ বলে ৯১ রানের ঝড়ো ইনিংস—৮টি ছক্কা ও ৭টি চারে সাজানো।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে আয়ারল্যান্ড ১৯৪ রানে থেমে যায়, হার মানে ৬২ রানে। ফলে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে জয় নিশ্চিত করে ক্যারিবীয়রা, যদিও প্রথম দুটি ম্যাচই বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছিল।
আয়ারল্যান্ডের পক্ষে এতদিন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়া বোলার ছিলেন ব্যারি ম্যাকার্থি। ২০১৭ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪ ওভারে দিয়েছিলেন ৬৯ রান। এই ম্যাচেও তিনি খেলেছেন, এবার দিয়েছেন ৫৫ রান!
এই ম্যাচ হয়তো লিয়াম ম্যাকার্থির জন্য ভুলে যাওয়ার মতো এক অভিষেক, কিন্তু ক্রিকেট ইতিহাসে তা রয়ে যাবে এক ব্যতিক্রমী নজির হয়ে।