ঝড় জোয়ার বৃষ্টিতে সারাদেশে দুর্ভোগ

আমাদের সময় ডেস্ক
৩১ মে ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
ঝড় জোয়ার বৃষ্টিতে সারাদেশে দুর্ভোগ


বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ উপকূল অতিক্রম করে গেলেও এর প্রভাবে ঝড়, জোয়ার ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে গতকাল শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের মতো নানা দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে কেটেছে জনজীবন। দক্ষিণাঞ্চলে বন্ধ রয়েছে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার নৌযান চালাচল। অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে উপকূলীয় জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল, পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে উপকূলের বিভিন্ন উপজেলার লাখো গ্রাহক। জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে গবাদিপশু, ঘেরের মাছ। এর মধ্য ভোলায় বাঁধ ভেঙে ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঁচ শতাধিক ঘর। খুলনার বেড়িবাঁধের ৩০০ মিটার নদীতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে অনেক জেলা ও উপজেলা শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বেশকিছু জেলায় নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এবার ভারী বৃষ্টিপাত হলেও গত কয়েক বছরের মতো এবার চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়নি। সংশ্লিষ্ট এলাকায় আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

ভোলা : ভোলায় নিম্নচাপের প্রভাবে নদনদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেড় হাজার

ঘরবাড়ি। স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, জেলার মনপুরা, তজুমদ্দিন ও দৌলতখান, চার কুকরি-মুকরি, ঢালচর, চর পাতিলা এলাকাসহ উপকূলের গ্রামগুলো ডুবে আছে। তজুমদ্দিন, দৌলতখান ও মনপুরা পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে অন্তত ২০টি গ্রাম। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজারো মানুষ। অন্যদিকে পানিতে ভেসে গেছে অসংখ্য পুকুর ও মাছের ঘের। জোয়ারে ভেসে গেছে শতাধিক গবাদিপশু। বৈরী আবহাওয়ায় গতকাল পর্যন্ত ২ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে অভ্যন্তরীণ ও দুরপাল্লার রুটের লঞ্চ চলাচল। জেলার বেশিরভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা।

পটুয়াখালী : নিম্নচাপের প্রভাবে গতকাল বিকালে গলাচিপার পানপট্রি বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন একটি বেড়িবাঁধ নতুন করে ভেঙে তিনটি গ্রাম; রাঙ্গাবালী উপজেলার মধ্য চালিতাবুনিয়া গ্রামের বেড়িবাঁধ ভেঙে পুরো চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। এদিকে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত লাগোয়া সি-বিচ সড়ক উদ্বোধনের আগেই সমুদ্রের ঢেউয়ে ধসে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে জেলার বেড়িবাঁধের বাইরে হাজারো ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর।

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : প্রবল ঝড়ো হাওয়া ও জলোচ্ছ্বাসে সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পটুযাখালীর কলাপাড়া উপজেলার প্রায় ৬০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। গতকাল বিকাল পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন চালু করা যায়নি। ধুলাসার ইউনিয়নের নয়াকাটা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহমান হাওলাদার বলেন, দুই দিন ধরে আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। খুবই সমস্যায় আছি।

রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) : বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ার, বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাসে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় ক্ষতচিহ্ন রেখে গেছে। ক্ষতি হয়েছে ঘরবাড়ি, মাছের ঘের, কৃষিজমি ও বেড়িবাঁধের। মাছের ঘের ও পুকুরেই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, উপজেলার ১ হাজার ৩০০টি পুকুর এবং ৪৫০টি মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে। কৃষি অফিসের তথ্যমতে, ৮ হেক্টর আউশ ধানের বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ২৬০ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বরিশাল : বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুই দিন ধরে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। নগরীর নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে জনভোগান্তি বাড়িয়েছে বৃষ্টি। বেশির ভাগ নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নগরীর বগুড়া রোড, মুন্সির গ্যারেজ, শীতলাখোলা মোড়, জিয়া সড়কসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পানি জমে গেছে। এতে করে যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারীরা। বগুড়া রোডের বাসিন্দা মিসবাহ হোসেন বলেন, একটু বৃষ্টিতে রাস্তাগুলো নদীতে পরিণত হয়। ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে টানা বৃষ্টি হয়েছে। তাই জলাবদ্ধতার কারণে বাসা থেকে বের হওয়া যায় না। বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা জানান, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব যাত্রীবাহী ও মালবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে।

খুলনা ও কয়রা : খুলনার কয়রা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামে কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গতকাল ভোরে গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধের ১৩-১৪/ ২ নম্বর পোল্ডারের পাঁচটি স্থানে ৩০০ মিটার অংশ নদীতে ধসে পড়ে। ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে হরিণখোলা-সংলগ্ন আরও কিছু এলাকা। হরিণখোলা গ্রামবাসী জানান, বৃহস্পতিবার স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদে অন্তত ৪ ফুট বেশি উচ্চতার জোয়ার হয়। গতকাল ভোরে ভাটার টানে পানি নামতে শুরু করলে কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী বেড়িবাঁধে হঠাৎ ফাটল ও ধসের সৃষ্টি হয়। এতে বেড়িবাঁধের ৩০০ মিটার অংশ মুহূর্তেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। গতকাল সকালে কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাঁধের যে কয়টি স্থান ধসে গেছে। ধসে যাওয়া স্থানগুলোয় সংস্কারের চেষ্টা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খুলনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, আপাতত ভাঙনের পরিধি যাতে না বাড়ে, এ জন্য বাঁধের গায়ে জিও ব্যাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সুবর্ণচর (নোয়াখালী) : নোয়াখালীতে ভারী বৃষ্টিপাত এবং গভীর নিম্নচাপের কারণে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন স্থানে ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। উপকূলীয় এলাকায় পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা, পাশাপাশি নদী ভাঙনও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় গত বুধবার থেকে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সঙ্গে নৌ-যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে। এতে প্রায় সাত লাখ মানুষ মূল ভূখ- থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। বেড়িবাঁধ না থাকায় অতিরিক্ত জোয়ারের পানি নিঝুমদ্বীপ পুরোপুরি প্লাবিত করেছে।

বরুড়া (কুমিল্লা) : কুমিল্লার বরুড়া পৌর সদর বাজারে সরকারি হসপিটালের সামনে বিদ্যুতের চারটি খাম্বা ঝড়ে ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বরুড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে গতকাল শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন মেরামতের কাজ শুরু হয়নি।

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) : টানা ভারী বর্ষণে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলি পর্যন্ত হাঁটুসমান পানিতে ডুবে গেছে। জলাবদ্ধতায় স্থবির হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষকে পড়তে হয়েছে চরম দুর্ভোগে। রাস্তায় থেমে আছে অটোরিকশা, রিকশা ও মোটরসাইকেল। অনেকে ব্যাটারিচালিত যান ঠেলে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তারাব পৌরনভা, গোলাক্দাইল, ভুলতা, কান্টন, কায়েতপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, যানবাহন চলাচল বন্ধ, দোকানপাটে ড্রেনের নোংরা পানি ঢুকে পড়েছে, বহু বাসাবাড়ির নিচতলা পানিতে তলিয়ে গেছে।

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দিনভর ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে নিম্নাঞ্চলে পানি জমলেও এবার নগরীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়নি। নগরবাসী বলছে, জলজট নিরসনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চার উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়ার পর সুফল মিলছে। আগে একটু বৃষ্টি হলেই চট্টগ্রাম নগরী তলিয়ে যেত। তবে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়ায় বিভিন্ন সড়কে গাছপালা উপড়ে পড়ে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটেছে। চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট, আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কোথাও তেমন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি। সাময়িক কিছু পানি জমলেও ২০-৩০ মিনিটের মধ্যেই পানি সরে গেছে।

জেলার রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, ফটিকছড়িসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় সড়কের ওপর গাছ উপড়ে পড়ে। এ কারণে এসব এলাকার সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে। এমনটাই জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস অফিসের কন্ট্রোল কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. ইসমাইল ভূইয়া বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২২৯ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাত আরও ২-৩ দিন অব্যাহত থাকবে। এ সময় পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে।

ঢেউয়ের তোড়ে তীরে চার জাহাজ : চট্টগ্রামে নিম্নচাপের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল ঢেউয়ে চারটি জাহাজ তীরে উঠে গেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় দুটি লাইটারেজ জাহাজ তীরে উঠে পাথরে আটকে যায়। এ ছাড়া কর্ণফুলী নদীর মোহনায় পতেঙ্গার অন্য পাশে আনোয়ারা উপকূলে আটকা পড়ে আরও দুটি জাহাজ। জানা গেছে, পতেঙ্গায় আটকা পড়া জাহাজ দুটি হলো এমভি আল-হেরেম ও বিএলপিজি সুফিয়া। এর মধ্যে আল-হেরেম জাহাজটি পণ্য খালাসের পর সাগরে নোঙর অবস্থায় ছিল। বিএলপিজি সোফিয়া জাহাজটি গত অক্টোবরে এলপিজি গ্যাস স্থানান্তরের সময় বিস্ফোরণ ও অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আনোয়ারা উপকূলে আটকে পড়া নৌযান দুটি হলো মারমেইড-৩ ও নাভিমার-৩। এর মধ্যে মারমেইড-৩ হলো বার্জ আর নাভিমার-৩ একটি কার্গো জাহাজ। জাহাজ দুটি চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পাথর ও কয়লা বহনে নিয়োজিত ছিল। জাহাজগুলোতে ওয়াচম্যানের দায়িত্বে থাকা মিসকাতুর রহমান নামে একজন স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, সাগরে প্রচ- ঢেউয়ের মুখে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নৌযান দুটি আনোয়ারা উপকূলে আছড়ে পড়েছে।

সুনামগঞ্জ : টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সব নদনদী ও হাওরের নিম্মাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে গতকাল শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সুরমা, কুশিয়ারা, রক্তি, যাদুকাটা, সোমেশ^রী, বৌলাই, পাটলাইসহ কোনো নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। এ ছাড়াও নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কোথাও রাস্তাঘাট প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মানুন হাওলাদার জানান, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আরও কয়েক দিন মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও বন্যার আশঙ্কা নেই। কারণ সুনামগঞ্জের হাওরগুলো এখনও পানিতে ভরপুর হয়নি।

বগুড়া : বগুড়ায় চলতি মৌসুমে রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে শহরের সাতমাথা, বড়গোলাসহ বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যান চলাচল বিঘিœত হয়। বগুড়া আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিট থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৬১ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা করেছে, যা এই মৌসুমে সর্বোচ্চ।

রাঙামাটি : নিম্নচাপের কারণে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। তবে নিষেধাজ্ঞা ও বৈরী আবাহাওয়া উপেক্ষা করে হ্রদে পর্যটকবাহী বোটসহ বিভিন্ন নৌযান চলাচল করতে দেখা গেছে। সকালে জেলা শহরের সার্ভার স্টেশন এলাকায় একটি কৃষ্ণচূড়া গা ে ভঙে কয়েক ঘণ্টার জন্য রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এ ছাড়া রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট মাটিধসের ঘটনা ঘটেছে।

ফেনী : নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ার ও স্রোতের কারণে জেলার সোনাগাজী উপজেলার উপকূলীয় চরচান্দিয়া, চরদরবেশ, চরমজলিশপুর ও বগাদানার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সোনাগাজী, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গতকাল ফেনীতে বৃষ্টি না থাকলেও বাড়ছে মুহুরী নদীর পানি। ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফুলগাজী ও পরশুরামের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ২ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।