চট্টগ্রাম বন্দরে জমেছে ৪২ হাজার কন্টেইনার

এনবিআরে কলম বিরতি

চট্টগ্রাম ব্যুরো
২৭ মে ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
চট্টগ্রাম বন্দরে জমেছে ৪২ হাজার কন্টেইনার

দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে ৫৩ হাজার ৫১৮ কন্টেইনার রাখার জায়গা রয়েছে। অপারেশনাল কার্যক্রমের জন্য ৮ হাজার খালি রাখতে হয়। ফলে ৪৫ হাজার কন্টেইনার জমলেই বন্দরে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। কাস্টমস কর্মকর্তাদের কলম বিরতির ফলে গত রবিবার পর্যন্ত বন্দরে জমেছে ৪২ হাজার ৩১৫ টিইইউস কন্টেইনার। জাহাজ থেকে দ্রুত কন্টেইনার খালাস না হওয়ায় বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ জাহাজের সংখ্যাও বাড়ছে।

জানা গেছে, দৈনিক অন্তত আড়াইশ কোটি টাকা আদায়ের প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টমস। গত রবিবার দিনভর ছিল অচলাবস্থা; আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে ছিল স্থবিরতা। কাস্টমস কর্মকর্তারা অফিসে

থাকলেও শুল্কায়নের কাজ করেননি। বিকাল পাঁচটার পর সীমিত পরিসরে কাজ করেছেন। ফলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে চার হাজার কন্টেইনার খালাস হলেও তা অর্ধেকে নেমে আসে। পণ্য খালাস করার পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় কন্টেননারবোঝাই আরও ১৮টি জাহাজ জেটিতে ভেড়ার অপেক্ষায় বহির্নোঙরে অবস্থান করছে।

সিআ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম আমাদের সময়কে জানান, পণ্য খালাস কার্যক্রম ব্যাহত হওয়াতে শিল্পের অনেক কাঁচামাল আটকে আছে। সময়মতো এগুলো কারখানাতে নিতে না পারলে উৎপাদন পিছিয়ে পড়বে। এতে রপ্তানি ব্যাহত হবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজারের বেশি আমদানি ও রপ্তানি নথি দাখিল করা হয়। গত রবিবার সারাদিন অপেক্ষা করেও পণ্যের শুল্কায়ন করতে পারিনি।

ঈদের আগে কর্মকর্তাদের এমন কর্মসূচি ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে জানান বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি এসএম আবু তৈয়ব। তিনি বলেন, কারখানায় কাঁচামাল সময়মতো নিতে পারছি না। অথচ আমাদের মাথার ওপর এখনও যুক্তরাষ্ট্রের বর্ধিত শুল্ক হার হুমকি হয়ে আছে।

চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল বলেন, এনবিআর কর্মকর্তাদের দাবি থাকলে সেটা সরকারের সঙ্গে বসে সমাধাণ করতে পারে। মানুষ ও অর্থনীতিকে জিম্মি করে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করা উচিত হয়নি। তাদের কলম বিরতির কারণে ব্যবসায়ীরা পণ্য খালাস নিতে পারছে না। আবার চারদিন ফ্রি টাইমের পর থেকে চারগুণ জরিমানা আরোপ করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। এতে ব্যবসায়ীরা চরমভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।

উল্লেখ্য, সরকার গত ১২ মে একটি অধ্যাদেশ জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে নতুন করে রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠনের ঘোষণা দেয়। এনবিআর বিলুপ্তির প্রতিবাদে ১৩ মে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি হতে ১৪ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত কলম বিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়। ২০ মে আলোচনার আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করা হলেও ২১ মে থেকে পুনরায় পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়। গত রবিবার পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলছিল। চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার সাইদুল ইসলাম জানান, গতকাল সোমবার থেকে পুরোদমে কাজ করছেন তারা।