নেপথ্যে আধিপত্যের দ্বন্দ্ব

কিলার চিহ্নিত গ্রেপ্তার হয়নি কেউ ।। স্ত্রীর মামলায় আসামি অজ্ঞাত

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৭ মে ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
নেপথ্যে আধিপত্যের দ্বন্দ্ব

রাজধানীর বাড্ডার গুদারাঘাট এলাকায় বিএনপি নেতা কামরুল আহসান সাধনকে আধিপত্য বিস্তারের জেরে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার নেপথ্যে ইন্টারনেট ব্যবসার দ্বন্দ্বও একটি কারণ বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। গুলির করার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর কিলারদের শনাক্ত করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন নিহতের স্ত্রী। তবে এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এদিকে হত্যার প্রতিবাদে মিছিল করেছে এলাকাবাসী। প্রকাশ্যে এমন হত্যাকা-ের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

গত রোববার রাতে গুলশান থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুলকে বাড্ডার গুদারাঘাট এলাকায় গুলি করে হত্যা করা হয়। গতকাল সোমবার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তার লাশ ময়নাতদন্ত করা হয়।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, কামরুলের বাসা গুদারাঘাট এলাকায়। তিনি এলাকায় ইন্টারনেটের ব্যবসা করতেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে যে দুজনকে গুলি করতে দেখা গেছে, তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তারা ভাড়াটে কিলার। এখন তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এসএন নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিষয়টিকে টার্গেটেড কিলিংই মনে করছি। সাধন একজন ইন্টারনেট ব্যবসায়ী হওয়ায় তার সঙ্গে কারও এ ব্যবসা নিয়েও দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। কিলিংয়ে অংশ নেওয়া দুই শুটারকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারা স্থানীয় না। তবে তাদের গ্রেপ্তারের পর হত্যাকা-ের আসল কারণ জানা যাবে।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, গত রবিবার রাতে আড্ডা দিচ্ছিলেন নিহত কামরুল ও আরও কয়েকজন বিএনপি নেতা। হঠাৎ দুই যুবক পেছন দিক থেকে এসে কামরুলকে গুলি করে। গুলি তার ঘাড়ে, কাঁধে, পিঠে, বুকের নিচে ও পেটে লাগে। পরে কিলাররা ফাঁকা গুলি করতে করতে এলাকা ত্যাগ করে। তবে ভয়ে ওই সময় কেউ বাধা দিতে বা তাদেরকে আটকানোর সাহস পায়নি। এরপর কামরুলকে উদ্ধার করে প্রথমে মহাখালীর বক্ষব্যাধিতে পরে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় সোমবার বাড্ডা থানায় হত্যা মামলা করেছেন নিহতের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার। তবে মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। মামলার এজাহারে বলা হয়, আমার স্বামী পেশায় একজন ইন্টারনেট ব্যবসায়ী এবং গুলশান থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। রবিবার সন্ধ্যার পর তিনি মধ্য বাড্ডার গুদারাঘাট এলাকার ৪নং রোডের জাফর হাওলাদারের মুদিদোকানের সামনে ফাঁকা রাস্তার ওপরে চেয়ারে বসে ছিলেন। রাত ১০টা ২ মিনিটে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা পরিকল্পিতভাবে তার স্বামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরি গুলি করে।

এলাকাবাসী তাদের জানিয়েছে, দুই শুটারকে তারা চিনতে পারেনি। কারণ তারা স্থানীয় না। তবে এ হত্যাকা-ের নেপথ্যে ইন্টারনেট ব্যবসার দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। কারণ কামরুল ইন্টারনেট ব্যবসা করতেন। যদিও কামরুলের সঙ্গে এলাকায় কারও কোনো প্রকার দ্বন্দ্ব নেই। বিগত কয়েক বছর থেকে এ ব্যবসা চালান। তবে সম্প্রতি সরকার পতনের পর ব্যবসা সম্প্রসার করছিলেন তিনি। এ নিয়ে হয়তো প্রতিপক্ষদের সঙ্গে বিরোধ থাকতে পারে।