ইমনের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরির পর বাংলাদেশের সহজ জয়
তামিম ইকবালের ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওমানের বিপক্ষে সেঞ্চুরির ৯ বছর পর এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের হয়ে শতকের খরা কাটালেন পারভেজ হোসেন ইমন। বাঁহাতি তরুণ এই ওপেনারের ছক্কার রেকর্ড গড়া ইনিংসের পর দাপুটে জয়ে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ। যেখানে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ২৭ রানে হারাল টাইগাররা।
শনিবার শারজাহ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দলের হয়ে একাই লড়ে গেলেন ইমন। অন্যরা যখন যাওয়া-আসার তালে ছিলেন, তখন ব্যাট হাতে ছক্কার ফুলঝুরি ছোটালেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। গুনে গুনে ৯ বার বল পাঠালেন সীমানা দঁড়ির ওপর দিয়ে। এক ইনিংসে যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড। পেয়ে গেলেন ৫৩ বলে দারুণ এক সেঞ্চুরিও। তার এই শতকের ওপর ভর করেই প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯১ রান করেছে বাংলাদেশ।
জবাবে সহজে হাল ছাড়েনি আমিরাত। শুরুতে মুহাম্মাদ ওয়াসিম, পরে আসিফ খান বেশ বিপাকেই ফেলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। শেষ পর্যন্ত পরিষ্কার ব্যবধানে জিতলেও এক পর্যায়ে পরাজয়ের চোখরাঙানিও ছিল বাংলাদেশের প্রতি। তবে শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি তিন অভিষিক্ত নিয়ে খেলতে নামা আমিরাত।
চারটি টি-টোয়েন্টি খেলে শারজাহতে বাংলাদেশের প্রথম জয় এটি। নিয়মিত অধিনায়ক হিসেবে লিটন কুমার দাসের শুরু হলো জয় দিয়ে।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ইমন ছাড়া বাংলাদেশের হয়ে বিশ রানের গন্ডিও পেরোতে পারেননি কেউ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান আসে তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাট থেকে। আমিরাতের হয়ে ৪ ওভারে ২১ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট নেন মুহাম্মদ জাওয়াদউল্লাহ।
এর আগে সবশেষ ৭ ম্যাচে মাত্র ৮৮ রান করেছিলেন ইমন। এবার সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে সেই ব্যর্থতা ভুলিয়ে দেন এই তরুণ ব্যাটার। ইনিংসের শেষ ওভারে জাওয়াদউল্লাহর বলে আউট হওয়ার আগে ৫৪ বলে কাটায় কাটায় ১০০ রান করে আউট হন তিনি।
দুর্দান্ত এই ইনিংস খেলার পথে ৯টি ছক্কার পাশাপাশি ৫টি চার মারেন ইমন। বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এত বেশি ছক্কা আগে কেউ মারতে পারেননি। এর আগে সর্বোচ্চ ছক্কা ছিল রিশাদ হোসেনের, ৭টি। ৬টি ছক্কা দুইবার মেরেছিলেন জাকের আলী।
রান তাড়ায় মুহাম্মাদ ওয়াসিম প্রথম থেকেই বুঝিয়ে দেন ব্যাটের তেজ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই এক ছক্কা ও তিন চারে হকচকিয়ে দেন তিনি শেখ মেহেদিকে। পরের ওভারে তানজিম হাসানকেও মারেন একটি ছক্কা দুটি চার।
আরেক ওপেনার মুহাম্মাদ জোহাইবকে অবশ্য দ্রুতই ফেরান হাসান মাহমুদ। তিনে নামা আলিশান শারাফুকে দাঁড়াতে দেননি মুস্তাফিজুর রহমান। তবে তৃতীয় উইকেটে ওয়াসিম ও রাহুল শার্মা কাঁপিয়ে দেন বাংলাদেশকে।
হাসানের এক ওভারে তিন চার ও এক ছক্কা মারেন রাহুল, তানভির ইসলামের ওভারে তিনটি চার মারেন ওয়াসিম। একাদশ ওভারে যখন একশ পেরিয়ে যায় আমিরাত, তাদের জয় তখন মনে হচ্ছিল খুবই সম্ভব।
তানজিম আক্রমণে ফিরে ওয়াসিমকে ফিরিয়ে ভেঙে দেন ৪২ বলে ৬২ রানের জুটি। আমিরাতের অধিনায়ক বিদায় নেন ৩৯ বলে ৫৪ করে। এই পেসার একটু পর বিদায় করেন রাহুলকেও (২২ বলে ৩৫)।
বাংলাদেশকে তবু স্বস্তি পেতে দেননি আসিফ খান। আগ্রাসী ব্যাটার টানা তিন বলে ছক্কা মারেন শেখ মেহেদিকে। এক প্রান্ত থেকে তিনি চেষ্টা চালিয়ে যান। তবে সঙ্গী পাননি কাউকে। শেষ পর্যন্ত তাই পারেননি তিনি আর তার দল। মুস্তাফিজের স্লোয়ার ও কাটারের জবাব দিতে পারেননি তারা।
আসিফ করেন চার ছক্কায় ২১ বলে ৪২। আমিরাতের শেষ ছয় ব্যাটারের কেউ ছুঁতে পারেননি দু অঙ্ক। ১০ রানের মধ্যে হারায় তারা শেষ ৫ উইকেট।