এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানতের চেয়ে ঋণ বিতরণে গতি বেশি
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে এজেন্ট ব্যাংকিং খাতে ঋণ বিতরণে প্রবৃদ্ধি আমানতের তুলনায় অনেক বেশি। এই সময়ের মধ্যে ঋণ বিতরণ বেড়েছে প্রায় ২ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা বা ১০ দশমিক ৮৬ শতাংশ। গত এক বছরে এই প্রবৃদ্ধির হার প্রায় সাড়ে ৬১ শতাংশ। এর বিপরীতে আমানত বেড়েছে ১ হাজার ৭ কোটি টাকা বা মাত্র ২ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর বছরের ব্যবধানে আমানতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাড়ে ১৬ শতাংশের মতো।
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ব্যাংকের শাখায় গিয়ে অ্যাকাউন্ট না খুলে স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে প্রায় সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে। গ্রাহকরা সহজেই বায়োমেট্রিক যাচাইকরণসহ আমানত গ্রহণ, টাকা উত্তোলন, ঋণ গ্রহণ, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, ডেবিট কার্ড ও চেকবই সেবা পাচ্ছেন। এতে ব্যাংকের খরচ যেমন কমছে, তেমনি গ্রাহকদের ভোগান্তিও কমছে। বাড়তি কোনো চার্জও দিতে হচ্ছে না গ্রাহককে। ফলে এ সেবার জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে ৩১টি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করেছে এবং সক্রিয়ভাবে পরিচালনা করছে। মূলত আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতেই ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক এই সেবা চালুর নীতিমালা প্রণয়ন করে।
আরও পড়ুন:
আকতার পারভেজ সর্বোচ্চ ভোটে সিএসই পরিচালক
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ ত্রৈমাসিক (জানুয়ারি-মার্চ) প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের মার্চ শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আওতায় ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৪৬ লাখ ৭১ হাজার ৪২২টি, যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ছিল ৩ কোটি ৮০ লাখ ৭৮ হাজার ২৩০টি। ফলে এই সময়ের মধ্যে গ্রাহক বেড়েছে ৫ লাখ ৯৩ হাজার ১৯২ জন।
এ ছাড়া এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রাহকের বড় অংশই গ্রামের মানুষ। এ সময়ে গ্রামে গ্রাহক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৮৫৩ জন। অন্যদিকে এজেন্ট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টধারীর মধ্যে নারী গ্রাহকের সংখ্যা এখন ১ কোটি ২১ লাখ ৮৮ হাজার ৪২৪ জন।
আরও পড়ুন:
বৃহত্তম হিমশৈল
প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ২০২৪ সাল শেষে এজেন্ট ব্যাংকিয়ে আমানতের পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা, যা চলতি বছরের মার্চে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা। ফলে তিন মাসে এজেন্ট ব্যাংকিয়ে আমানত বেড়েছে প্রায় ১ হাজার ৭ কোটি টাকা বা ২ দশমিক ৪০ শতাংশ।
অন্যদিকে চলতি বছরের মার্চ শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আওতায় ঋণ বিতরণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল ২৪ হাজার ২৮ কোটি টাকা। ফলে তিন মাসে এ সেবায় ঋণ বিতরণ বেড়েছে প্রায় ২ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা বা ১০ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
আরও পড়ুন:
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম
শুধু আমানত ও ঋণ বিতরণই নয়, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আওতায় প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বিতরণেও বাড়ছে। প্রতিবেদন বলছে, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গত তিন মাসে রেমিট্যান্স বিতরণ বেড়েছে ৭ হাজার ৮১৪ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ২৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এর মধ্যে মার্চ পর্যন্ত শেষ তিন মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৬ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ।