বোর্ড সদস্যই তুলে ধরলেন স্বেচ্ছাচারিতা অনিয়ম-দুর্নীতি

লুৎফর রহমান কাকন
১০ মে ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
বোর্ড সদস্যই তুলে ধরলেন স্বেচ্ছাচারিতা অনিয়ম-দুর্নীতি

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য যেসব বোর্ড রয়েছে, সেসব বোর্ডের স্বেচ্ছাচারিতা, মনগড়া সিদ্ধান্ত, রাষ্ট্রের অর্থের যাচ্ছেতাই গচ্চাসহ নানারকম অনিয়ম-দুর্নীতির খবর পুরনো। এবার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন খোদ বোর্ডেরই এক সদস্য। তার নাম মো. আহসান উদদিন মুরাদ। জ্বালানি বিভাগের এই উপসচিব সম্প্রতি বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বরাবর একটি চিঠি দিয়েছেন। এতে তিনি বোর্ডের একজন সদস্য হিসেবে এর নানা অনিয়ম, দুর্নীতি তুলে ধরেছেন; প্রতিবাদ করেছেন বোর্ডসভার মনগড়া অনেক সিদ্ধান্তের। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এসব অন্যায় ও নীতি-নৈতিকতাবিরোধী সিদ্ধান্ত তিনি সমর্থন করেন না। তার সেই পর্যবেক্ষণমূলক চিঠি আমাদের সময়ের হাতেও এসেছে।

এ চিঠির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কর্তৃপক্ষ তাদের পূর্বনির্ধারিত একটি বোর্ডসভা স্থগিত করেছে ‘অনিবার্য কারণ’ দেখিয়ে। এর পাশাপাশি এই সদস্যকে বোর্ড থেকে সরিয়েও দেওয়া হয়েছে। অবশ্য এ বিষয়ে উপসচিব আহসান উদদিন মুরাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সরকারি কোম্পানিগুলোর বোর্ডসভায় সাধারণত সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা থাকেন। যেকোনো সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন হয় বোর্ডসভার অনুমোদন সাপেক্ষে। তবে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে, এসব বোর্ডসভায় মূলত সচিবদের (যিনি বোর্ড চেয়ারম্যান থাকেন) ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। অন্য সদস্যদের রাখা হয় স্রেফ নিয়মরক্ষায়। কারণ বোর্ডের অন্য সদস্যরা মতামত দিলেও সেটার বাস্তব প্রতিফলন হয় না। এমনকি বোর্ডসভার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মতামতের বাইরে কেউ মতামত দিলে সেটা রেজল্যুশনেও উল্লেখ করা হয় না। যে মন্ত্রণালয়গুলোর অধীনে কোম্পানিগুলো থাকে, এত দিন সেই মন্ত্রণালয়ের সচিবই থাকতেন বোর্ড চেয়ারম্যান। তবে অন্তর্বর্তী সরকার এসে এ নিয়ম ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কোম্পানিগুলোর একাধিক বোর্ডে অবসরপ্রাপ্ত সচিবসহ অন্য মন্ত্রণালয়ের সচিবদের দিয়ে বোর্ড গঠন করা হচ্ছে।

উপসচিব আহসান উদদিন মুরাদ তার চিঠিতে বোর্ডসভার কার্যবিবরণীর বিষয়ে তুলে ধরা পর্যবেক্ষণে বলেছেন, গত ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত ৭২৯ নম্বর বোর্ডসভার কার্যবিবরণীতে বিভিন্ন এজেন্ডায় তার বক্তব্য ও প্রস্তাবগুলো সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি। কিছু ক্ষেত্রে তার বক্তব্য সম্পূর্ণ বাদ পড়েছে, আবার কোথাও অপূর্ণাঙ্গভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে বক্তব্যসহ সম্পূর্ণ আলোচনাই বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেছেন, বিগত তিনটি সভাতেই তার আলোচনা-বক্তব্য সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি, যা নিয়ে পূর্বেও বারবার তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সংশোধিত কার্যবিবরণীতেও একই সমস্যা পরিলক্ষিত হয়েছে। এরপর তিনি যোগ করেছেন, এমনকি যেসব সভার জুম রেকর্ডিং আছে, সেসব সভার আলোচনায় অংশগ্রহণকারী সদস্যদের বক্তব্যও সঠিকভাবে উপস্থাপিত হয়নি। আবার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোনো সদস্যের নাম উল্লেখ না করে বলা হয় ‘একজন সদস্য বলেন। অথচ দেখা যায়, উক্ত সদস্যের সংশ্লিষ্ট এজেন্ডায় তীব্র বিরোধিতা বা তীব্র সমর্থন ছিল। কিন্তু এজেন্ডা পড়ে কোনো অবস্থাতেই বোঝার সুযোগ নেই, কোনো সদস্য উক্ত এজেন্ডার পক্ষে বা বিপক্ষে ছিলেন। আবার সভায় কোনো বিষয়ে দ্বিমত থাকলেও প্রায় সব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তে উল্লেখ করা হয় ‘সভায় সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়’। এক্ষেত্রে প্রস্তাবের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত যারা অনড় ছিলেন, তাদের বক্তব্যের উল্লেখ থাকা প্রয়োজন।

চিঠিতে তিনি আরও লেখেন, বিশেষ করে ক্রয়সংক্রান্ত প্রস্তাবের ক্ষেত্রে, সভায় যেসব সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ইতিবাচক-নেতিবাচক সমর্থন দিয়ে আলোচনার সূচনা করেন অথবা আলোচনার দিক পরিবর্তনে মূল ভূমিকা রাখেন, তাদের নামই উল্লেখ করা হয় না। সভার আলোচনার মোমেন্টাম চেঞ্জিং সব পয়েন্টগুলোতে যথাসম্ভব সংশ্লিষ্ট সদস্যের নাম উল্লেখ থাকা উচিত, যেন ভবিষ্যৎ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে সঠিক চিত্র উঠে আসে। এমতাবস্থায়, আমি সভার সব রেকর্ডিং ভবিষৎ অনুসন্ধানের স্বার্থে সংরক্ষণেরও আবেদন জানাচ্ছি।

বোর্ডসভায় প্রদত্ত একজন সদস্যের বক্তব্যের দায়ভার সম্পূর্ণ সংশ্লিষ্ট সদস্যের। তাই একজন সদস্য যে মতামতই দিন, তার প্রতিফলন যতটা সম্ভব কার্যবিবরণীতে থাকা প্রয়োজন। বিশেষ করে সব ‘নট গো এহেড ও গো এহেড’ সিগন্যাল সূচক মতামত আবশ্যিকভাবে ব্যক্তিগত। এটা কখনো নৈর্ব্যত্তিক হতে পারে না। যেহেতু কার্যবিবরণী হচ্ছে সোর্স অব ট্রুুথ, তাই সেটা এমন হওয়া উচিত যেন যে কেউ সভায় উপস্থিত না থেকেও বুঝতে পারেন এজেন্ডার গো এহেড এবং নট গো এহেড প্যাট্রন কে বা কারা ছিলেন। এমতাবস্থায় নিম্নে এজেন্ডাভিত্তিক গত সভায় আমার প্রদত্ত বক্তব্য-মতামতগুলো পুনর্ব্যক্ত করে কার্যবিবরণী সংশোধন অথবা এই আবেদনটি সভার কার্যবিবরণীর সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য আমি বিনীত অনুরোধ করছি।

বিস্ময়কর বাস্তবতা হলো, এ চিঠির পর পরবর্তী বোর্ডসভার আগেই তাকে বোর্ড থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং আগামী ১২ মে নতুন করে বোর্ডসভার আহ্বান করা হয়েছে।

আহসান উদদিন মুরাদ তার চিঠিতে এজেন্ডা ১-এর উল্লেখ করে বলেছেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ (ইএমআরডি) কর্তৃক জারিকৃত সাম্প্রতিক সার্কুলার অবহিতকরণ এবং আমার বক্তব্য হলো- একটি সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এজিএম-এ বোর্ড সদস্যদের জন্য বড় অংকের সম্মানী প্রদান নৈতিকভাবে সঠিক ছিল না এবং এতে স্বার্থের দ্বন্দ্ব ছিল। যেহেতু ইএমআরডি এই অর্থ গ্রহণকে নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য ও স্বার্থের দ্বন্দ্বপূর্ণ বলে ঘোষণা করেছেন, সেহেতু যারা ইতোমধ্যে এ অর্থ গ্রহণ করেছেন, তাদের নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে তা ফেরত দেওয়া। যেকোনো অর্থ গ্রহণ মোরালি আনএক্সপেক্টেবল এবং কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট ছিল এমন অফিসিয়াল ঘোষণার পর এই অর্থ আবশ্যিকভাবে আদায়যোগ্য। তিনি প্রস্তাব করেছেন, ইতোমধ্যে এজিএম সম্মানী বা অনুরূপ অর্থ গ্রহণকারী সব গ্রহীতার গৃহীত অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি লিখেছেন, এক্ষেত্রে দুজন পরিচালকের ভিন্নমতের জবাবে আমার বক্তব্য ছিল যে, কোনো কিছু গ্রহণ অবৈধ ঘোষিত হলে তা ফেরত দেওয়াই অত্যন্ত স্বাভাবিক। এখানে ফেরত প্রদানের জন্য আলাদা করে উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। যিনি এ ধরনের অর্থ গ্রহণ করেছেন, তারই নৈতিক দায়িত্ব তা ফেরত দেওয়া। যদি সে দায়িত্ব কেউ পালন করতে ব্যর্থ হন, সেক্ষেত্রে কোম্পানি অফিসিয়ালি অর্থ আদায়ে উদ্যোগ নেবে।

সভার এজেন্ডা-৪ ছিল কর্মচারী ও বোর্ড সদস্যদের এক্স-গ্রেসিয়া বোনাস বিতরণ প্রস্তাব সম্পর্কে। এ বিষয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, আমার প্রস্তাব হলো- এক. কোম্পানি বর্তমানে লোকসানে আছে। অপারেটিং ইনকাম নেগেটিভ এবং সরকারি বিনিয়োগসহ অন্যান্য সূচক বিবেচনায় কোম্পানির আর্থিক অবস্থা যা রিপোর্ট করা হয়, তার চেয়েও খারাপ; দুই. ম্যানেজমেন্টের উপস্থাপিত এবং দাবিকৃত সাশ্রয় কোনো নিরপেক্ষ মাধ্যম কর্তৃক যাচাইকৃত নয়। বোনাস দাবিকারী ব্যক্তিরাই সাশ্রয়ের দাবি করছেন, যা স্বার্থের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে। তদুপরি কোম্পানির সামগ্রিক পারফরমেন্সে এসব দাবি স্বার্থের দ্বন্দ্ব নেই এমন কাউকে দিয়ে যাচাই ছাড়া নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়; তিন. বোর্ড সদস্যদেরও এক্স-গ্রেসিয়া বোনাস প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। এটা একেবারেই অনুচিত। সরকার ইতোমধ্যে এ ধরনের চর্চা অনৈতিক ঘোষণা করে সার্কুলার জারির পর এ ধরনের প্রস্তাব উত্থাপনই অনভিপ্রেত। বোর্ড সদস্যরা কোনো অবস্থাতেই এ ধরনের বোনাস পেতে পারেন না। সামগ্রিক বিবেচনায় এক্স-গ্রেসিয়া বোনাস আপাতত বিবেচনা না করার অনুরোধ করছি। শেষ পর্যন্ত মেজরিটি সদস্য এক্স-গ্রেসিয়া বোনাসের প্রস্তাবের পক্ষে থাকলেও কোনো অবস্থাতেই যেন কোম্পানির পরিচালকরা এ বোনাস না পান। আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে এ ধরনের কোনো বোনাস গ্রহণ করব না।

চিঠিতে তিনি আরেকটি এজেন্ডার কারিগরি মূল্যায়ন অনুমোদনের বিষয়ে উল্লেখ করে বলেছেন, আমার প্রশ্ন ছিল, টেন্ডারকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবিকৃত অভিজ্ঞতা কি অফিশিয়াল ইমেইলে বা অন্য কোনো মাধ্যমে যাচাই করা হয়েছে? এ ধরনের যাচাই-বাছাইয়ের ত্রুটি নিয়ে ইতিপূর্বে সভায় একাধিকবার আলোচনা করেছি।

চিঠির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, পরিলক্ষিত সমস্যা : কোম্পানি অফিশিয়াল যে ইমেইল আদান-প্রদান দেখিয়েছে, তার অধিকাংশই বাউন্স হয়েছে (ইমেইল ঠিকানাই সঠিক নয়)। গত দুই সভায়ও আরেকটি কোম্পানির অভিজ্ঞতা সনদ যাচাইয়ে অনুরূপ সমস্যা উত্থাপিত হয়েছে। এটি একটি গুরুতর সতর্ক সংকেত (রেড ফ্লাগ)। তিনি তার প্রস্তাবে বলেছেন, চূড়ান্ত অনুমোদনের পূর্বে সংশ্লিষ্ট বোর্ড কমিটির মাধ্যমে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া যাচাই-বাছাই করা হোক। কোনো কোম্পানির দাখিলকৃত একটি দলিলও সন্দেহজনক হলে, সে কোম্পানিকে কাজ দেওয়ার সুযোগ নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত সব সনদের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে না। কোনো সনদ জাল প্রমাণিত হলে, সে কোম্পানির উক্ত জাল সনদ ছাড়াও যদি সব শর্ত পূরণ করে, তারপরও তাদের বিবেচনা করার সুযোগ নেই।

চিঠির শেষাংশে বলা হয়েছে, উপর্যুক্ত বক্তব্যসমূহ সভার কার্যবিবরণীতে সঠিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে অথবা আমার এই আবেদনটি কার্যবিবরণীর সঙ্গে সংযুক্ত করতে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। ভবিষ্যতে সঠিক রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য সভার কার্যবিবরণী প্রস্তুতকালে সংশ্লিষ্ট সদস্যদের পর্যালোচনার সুযোগ দেওয়ারও অনুরোধ রইল। এখানে উল্লেখ্য যে, বিগত দুটি সভায়ও আমার বক্তব্য সংশোধনীসহ সঠিকভাবে লিখিত হয়নি। ব্যক্তিগতভাবে আমার অবস্থান এই যে, আমার প্রদত্ত সব বক্তব্যের দায়ভার আমার, যা বেশিরভাগ সময়ই রেকর্ডেড থাকে। বক্তব্যের পরে অনেক পরিচালক তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। অনেক সময় সেসব মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয় বোর্ড। ইমপারসোনালভাবে বক্তব্য উপস্থাপন সাধারণ আলোচনার ক্ষেত্রে সাধারণ রীতি। সভায় পক্ষের বিপক্ষের সব মতামত ভবিষৎ অনুসন্ধানের জন্য সংশ্লিষ্ট বোর্ড সদস্যের পরিষ্কার অবস্থান উল্লেখপূর্বক সুলিখিত থাকা আন্তর্জাতিক রীতি এবং তা অনুসরণ করা সমীচীন মনে করছি। এ বিষয়ে বোর্ড চেয়ারম্যানের বিবেচনা আশা করছি।

এদিকে সরকারের একজন কর্মকর্তার এমন চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. এম শাসমুল আলম আমাদের সময়কে বলেন, এটা একটা নজিরবিহীন ঘটনা। যেখানে নানা স্বার্থে-লোভে কর্মকর্তা কর্মচারীদের আগ্রহ থাকে বোর্ডে থাকার এবং বোর্ড থেকে নানা সুবিধা পেয়েই তারা খুশি, সেখানে নিজের সুবিধাকে উপেক্ষা করে রাষ্ট্রীয় ও জনগণের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে একজন বোর্ড সদস্যের এমন প্রতিবাদ আমাদের আশা জাগিয়ে রাখে। তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে তাকে সাধুবাদ জানাই। এ ঘটনায় আমরা আশা দেখি, সত্যি পরিবর্তন হবে একদিন। তার এমন চিঠি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

ক্যাবের এই জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, তিনি (আহসান উদদিন মুরাদ) চিঠিতে যেসব যুক্তি তুলে ধরেছেন, তা শুধু বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডের বোর্ডের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়। সরকারের সব বোর্ডের সদস্যদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আমরা আশা করব, তার যুক্তিগুলো সরকার বিবেচনা করবে। তাকে বোর্ড থেকে সরিয়ে দেওয়ার নিন্দা জানিয়ে অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, এভাবেই ভালো লোকদের সরিয়ে রাখা হয়।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জান আমাদের সময়কে বলেন, বোর্ডের সদস্য থেকে সেই বোর্ডের অনিয়মের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট করে বলেছেন। সত্যি এটা প্রশংসার যোগ্য। এখন এ কর্মকর্তা চিঠিতে যেসব অনিয়ম ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উপস্থাপন করেছেন, আশা করব প্রতিটি বিষয় খতিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন, বোর্ডগুলোর কার্যক্রম যদি বোর্ড সদস্যদের কাছেই স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক না হয়, তবে সেটা রাষ্ট্রের স্বার্থ দেখবে কি করে? তিনি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বোর্ডগুলোর অতীত কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখার কথাও বলেন। যোগ করেন, প্রয়োজনে দুদকেরও এসব বিষয় দেখা উচিত।