প্রধান উপদেষ্টার কাতার সফরে জ্বালানি সহায়তায় জোর দেওয়া হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
২২ এপ্রিল ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
প্রধান উপদেষ্টার কাতার সফরে জ্বালানি সহায়তায় জোর দেওয়া হবে

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাতার সফরে দেশটির সঙ্গে অর্থনৈতিক ও জ্বালানি সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। একই সঙ্গে দুর্নীতি, হত্যা মামলা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রীদের ফিরিয়ে আনতে সরকারের পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ‘প্রত্যাবাসন’ চাওয়া হবে। গতকাল সোমবার বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ কথা বলেন।

কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলুথানির আমন্ত্রণে ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন-২০২৫’-এ যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা চার দিনের সফরে দোহা গেছেন। আগামী ২২ ও ২৩ এপ্রিল তিনি দোহায় ব্যস্ত দিন কাটাবেন। প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ রয়েছেন।

শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫’-এ বক্তব্য দেবেন। সফরকালে তার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি রয়েছে। তিনি বলেন, ড. ইউনূসের অন্য কর্মসূচির পাশাপাশি কাতারের আমির ও উপপ্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা

কাতার চ্যারিটি ও কাতার ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং কাতারভিত্তিক টিভি চ্যানেল ‘আল জাজিরা’ একটি সাক্ষাৎকার দেবেন। কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের এলএনজি আমদানি নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে। তাই বৃহত্তর জ্বালানি খাতে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে। তিনি বলেন, ২৩ এপ্রিল একটি বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন হবে, যেখানে বাংলাদেশ ইতিবাচক সাড়া আশা করছে।

এ ছাড়া ভিসাসংক্রান্ত বিষয়েও আলোচনা এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি সেমিনার হওয়ার কথা রয়েছে। সেমিনারে অধ্যাপক ইউনূস নেতৃত্ব দেবেন। বিশ্বের অংশীদাররা অংশগ্রহণ করবেন সেই সেমিনারে। শফিকুল আলম বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বব্যাপী মনোযোগ ফিরিয়ে আনা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এই লক্ষ্যে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ২৫ এপ্রিল ভোরে দেশে ফিরে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

বিদেশে পলাতক আওয়ামী নেতাদের ‘প্রত্যাবাসন’ চাওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, যারা অভিযুক্ত, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ও খুনের মামলা আছে। তাদের ব্যাপারে আমরা সিরিয়াস এবং প্রত্যেকের আমরা প্রত্যাবাসন চাইব। তাদের বাংলাদেশের আইনের মুখোমুখি হতে হবে। তাদের আইনের আওতায় আনা আমাদের এবং পরবর্তী সরকারের নৈতিক দায়িত্ব।

বিদেশে পালিয়ে যাওয়া বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের নেতার হাতে ‘রক্ত লেগে আছে’ অভিযোগ করে শফিকুল আলম বলেন, তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত। বড় বড় দুর্নীতিতে যুক্ত।

নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের বিষয়ে ইসলামপন্থি দলগুলোর আপত্তির বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, প্রতিবেদনটি ঐকমত্য কমিশনে যাবে; তা নিয়ে তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলবেন। কারণ অনেকগুলো বিষয় রাজনৈতিকভাবে আলাপ-আলোচনার বিষয়। রাজনৈতিক দলগুলোই সিদ্ধান্ত নেবে আমরা প্রতিবেদনের কতটুকু নেব, কতটুকু নেব না।

সংবাদ সম্মেলনে উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।