বোনাস পরিশোধ করেনি ২ হাজার ৪৬৫ কারখানা
শ্রম ভবনের সামনে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
গত ২৬ মার্চ থেকে পোশাক কারখানায় পর্যায়ক্রমে ছুটি শুরু হয়েছে। এই ছুটি ২৯ মার্চ পর্যন্ত দেওয়া হবে। অথচ এখনও অনেক কারখানা ঈদুল ফিতরের বোনাস পরিশোধ করেনি। দেশের সব খাতের শিল্প-কারখানা, তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ, বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ, বেপজা, পাটকল ও অন্যান্য সংগঠনের সদস্যভুক্ত মোট ৯৬৯৫টি কারখানা চালু রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত ৭২৩০টি অর্থাৎ ৭৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ কারখানা শ্রমিকদের ঈদের বোনাস পরিশোধ করেছে। তবে এখনও বাকি রয়েছে ২৪৬৫টি অর্থাৎ ২৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ কারখানা। শিল্প পুলিশ সূত্রে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করেছে ২৪৭১টি অর্থাৎ ২৫ দশমিক
৪৯ শতাংশ কারখানা। আর মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করেনি ৭২২৪টি অর্থাৎ ৭৪ দশমিক ৫১ শতাংশ কারখানা। গতকাল ঈদের ছুটি হয়েছে ৬৮৬টি অর্থাৎ ৭ দশমিক ০৮ শতাংশ কারখানায়।
বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ ও বেপজা- এই সংগঠনগুলোর সদস্যভুক্ত শিল্প-কারখানার সংখ্যা রয়েছে ২৮৮৬টি। এর মধ্যে জানুয়ারি ও পূর্ববর্তী মাসের বেতন পরিশোধ করেছে ২৮৫৬টি অর্থাৎ ৯৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ কারখানা। বকেয়া রয়েছে ৩০টি অর্থাৎ ১ দশমিক ০৪ শতাংশ।
এ ছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য ২৮৯০টি কারখানার মধ্যে বেতন পরিশোধ করেছে ২৭৬৮টি অর্থাৎ ৯৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। বকেয়া রয়েছে ১২২টি অর্থাৎ ৪ দশমিক ২২ শতাংশ।
মার্চ মাসের জন্য ২৮৯০টি কারখানার মধ্যে বেতন পরিশোধ করছে ৬০৮টি অর্থাৎ ২১ দশমিক ০৪ শতাংশ। বকেয়া রয়েছে ২২৮২টি অর্থাৎ ৭৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
আরও পড়ুন:
আকতার পারভেজ সর্বোচ্চ ভোটে সিএসই পরিচালক
এসব সংগঠনভুক্ত ২৮৯০টি শিল্প-কারখানার মধ্যে ঈদের বোনাস পরিশোধ করেছে ২৩৪৯টি অর্থাৎ ৮১ দশমিক ২৮ শতাংশ কারখানা। বকেয়া রয়েছে ৫৪১টি অর্থাৎ ১৮ দশমিক ৭২ শতাংশ কারখানা।
অন্যদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার ঈদ বোনাস ও বকেয়া বেতনের দাবিতে রাজধানীর শ্রম ভবনের সামনে পোশাক শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। তিন মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদুল ফিতরের বোনাসের দাবিতে টিএনজেড গ্রুপের কয়েকশ শ্রমিক সকালে এ বিক্ষোভ করেন।
ঈদের লম্বা ছুটির আগে পাওনা বেতন ও বোনাসের দাবিতে দেশজুড়ে হাজার হাজার পোশাক শ্রমিক বিক্ষোভ করেন। ইতোমধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন, সুযোগ-সুবিধা ও ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ১২টি পোশাক কারখানার মালিকের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। বকেয়া নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিদেশ যাত্রার অনুমতি দেওয়া হবে না।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল আমাদের সময়কে বলেন, আশা করা যায় ঈদের আগেই শ্রমিক ভাইবোনরা বেতন-বোনাস নিয়ে ভালোভাবে ঈদের আনন্দ উপভোগ করবেন। তবে এতগুলো কারখানার মধ্যে দুই-চারটার সমস্যা সবসময়ই থেকে যায়। সেগুলোর বিষয়ে সরকার, মালিক-শ্রমিক পক্ষ মিলে সমাধান করে থাকে। আশা করা যায় এবারও সমাধান হবে।
আরও পড়ুন:
বৃহত্তম হিমশৈল
শ্রমিক নেতা মোশরেফা মিশু বলেন, সারা বছর মালিকরা ভালো থাকেন। কিন্তু ঈদ আসলেই মালিকদের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ নিয়ে গড়িমসি শুরু করে দেন। পাওনা চাইতে গেলে শ্রমিকদের বেধড়ক পেটানো হয়। এমনকি শ্রমিকদের জীবন পর্যন্ত দিতে হয়, তারপরও মালিকদের টনক নড়ে না। এটা খুবই দুঃখজনক।
মিশু আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সময় বেঁধে দেওয়ার পরও মালিকরা তাদের ইচ্ছামতো কাজ করছেন। তাদের কাছে সরকারের নির্দেশের কোনো গুরুত্ব নেই। শ্রমিকদের বোনাস পরিশোধ করে দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম