অপরাধমুক্ত সমাজ গঠনে রোজার ভূমিকা

মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব
২৫ মার্চ ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
অপরাধমুক্ত সমাজ গঠনে রোজার ভূমিকা

হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, রোজাকে তাওরাত শরিফে হাত্ব বা পাপমোচনকারী বলা হয়েছে। বাইবেলে ত্বাব পবিত্রকারী। রোজাদার পাপমুক্ত ও পবিত্র হয় বলে। যবুর শরিফে রোজাকে ‘কুরবাত’ নৈকট্য বলা হয়েছে। মানুষ অপরাধমুক্ত থেকে আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুযোগ পায় বলে। কোরআন শরিফে ‘রমাদান’ মানে দগ্ধ করা। ইবাদত-সাধনার দহনে মুমিন দেহ-মন জ্বালিয়ে পবিত্র করে বিধায় এই নাম।

হাদিসের ভাষ্যমতে, রোজার নামকরণেই অপরাধমুক্তির আবেদন আছে। বুখারি শরিফে বর্ণিত-

রাসুল (সা.) বলেন, রোজা ঢালস্বরূপ। ঢাল শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করে। রোজা অপরাধ ও পাপ থেকে হেফাজত করে।

রমজান ধীরে ধীরে বিদায় নিতে যাচ্ছে। আমাদের সমাজ, রাষ্ট্র ও ব্যক্তি কতটা অপরাধমুক্ত হয়ে উঠেছে। কতটা সভ্য, ভদ্র ও নৈতিক মূল্যবোধে গড়ছে আমাদের চেতনা-বিশ্বাস।

অপরাধমুক্ত সমাজের বাসিন্দারা সুশৃঙ্খল কর্মমুখী হবে। মূর্তমান হবে দেশপ্রেম ও মানবতার আদর্শে। ভ্রাতৃত্ববোধ, জনকল্যাণ ও সেবার ছোঁয়া থাকবে সব কাজে। রাসুল (সা.) বলেছেন, রোজাদারের প্রতি উত্তেজিতকে বলবে- আমি রোজাদার আমি কটু কথা বলব না। পবিত্র কোরআনের ভাষ্য থেকে অনুমান করা যায়, নৈতিক, সামাজিক মূল্যবোধ ও চারিত্রিক কল্যাণের ধারক বানানোর জন্য আল্লাহ রোজাকে ফরজ করেছেন।

কোরআন বলছে, হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হলো, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার। (সুরা বাকারা : ১৮৩)

তাকওয়ার ভিত্তি হলো, সততা ও নৈতিকতা। সমাজজীবনে যখন নৈতিকতার চর্চা ব্যাপক হবে, তখনই তাকওয়ার প্রদীপ জ্বলবে। ব্যক্তিজীবনে আদর্শিক সৌন্দর্য রক্ষার জন্য, নবীজি বলেছেন, উত্তম চরিত্রকে পরিপূর্ণতা দানের জন্য আমি প্রেরিত হয়েছি। (ইবনে মাজা) রোজাদারের জীবন আঙিনায় নৈতিকতার চর্চা হোক। বছরব্যাপী দীর্ঘ হোক এই চর্চার আবেদন।

শিক্ষক : শেখ জনূরুদ্দিন রহ. দারুল কোরআন মাদ্রাাসা, চৌধুরীপাড়া ঢাকা