লাজফার্মায় পণ্য না বিষ?
লাজফার্মার বিরুদ্ধে ভেজাল পণ্য বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি সাংবাদিক ও লেখক ইশতিয়াক আহমেদ লাজফার্মার মগবাজার এলাকার পুনাক সেন্টার শাখা থেকে তার সন্তানের জন্য প্রিঙ্গেলস (চিপস জাতীয় খাদ্য) কিনেছিলেন। সেই পণ্যে ভেজাল পেয়ে তিনি ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন ‘... প্রিঙ্গেলস নামের এক কৌটা বিষ কিনেছিলাম।’ তার এই পোস্টটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই কমেন্ট বক্সে এমন ভেজাল পণ্য পাওয়ার কথা জানান। এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকারেও অভিযোগ করেন তিনি।
ইশতিয়াক ফেসবুকে লিখেছেন, গত রবিবার (গত সপ্তাহে) উত্তরা শুটিং থেকে ফেরার পথে রাতে মগবাজার
পুনাক সেন্টারের লাজফার্মা থেকে ছেলে নির্বাণের জন্য একটা কিটকাট ও ছোট কৌটার একটা প্রিঙ্গেলস চিপস কিনি। যেতে যেতে রাত হয়ে যাওয়ায় সেটা আর সেদিন খায়নি। পরদিন রাতে বাসায় ফিরে দেখি, অবস্থা ভয়াবহ। নির্বাণ প্রিঙ্গেলস চিপস খেয়ে ঘণ্টাখানেক মুখে কিছু নিতে পারছে না এত বাজে স্বাদ চিপসের। তার মায়ের অবস্থা আরও খারাপ। রীতিমতো অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমিও মুখে দিয়ে দেখলাম, প্রায় বমি করার অবস্থা। বলা যায়, বিষ এটা।
আরও পড়ুন:
একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন উল্লেখ করে ইশতিয়াক বলেন, আমি সেই শাখায় ফোন দিলে ম্যানেজার প্রথমত অস্বীকার করে। পরে আজ সশরীরে তাদের শাখায় উপস্থিত হয়ে বললাম। তারা স্বীকার করল তাদের প্রিঙ্গেলসে এমন সমস্যা পাওয়া গেছে। আরও একজন অভিযোগ দিয়েছে। তারা প্রিঙ্গেলস কোম্পানির বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকারে মামলা করবে বলে জানায়।
ইশতিয়াক বলেন, অবাক হতে হয়, প্রিঙ্গেলসের একটা দেড়শ টাকার চিপস পুরোটাই বিষ। বাইরে লেখা এক্সপায়ার ডেট ঠিক, কিন্তু ভেতরে ভয়ংকর অখাদ্য। এটা কোনো পরীক্ষা ছাড়াই বাজারজাত করছে তারা এবং লাজফার্মার মতো ফার্মেসিও কোনো দায় ছাড়া বিক্রি করে চলছে।
এ বিষয়ে লাজফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করলে মোহাম্মদ লুৎফর রহমান জানান, এ বিষয়ে পুনাক সেন্টারে লাজফার্মা শাখার কর্ণধারকে ডাকলে তিনি জানিয়েছেন, ইশতিয়াকের পণ্যটির মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ঠিক ছিল। তারপরও সমস্যার কারণ খোঁজতে পণ্যটির পাইকারি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান রুবেল ট্রেডার্সকে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে পণ্যগুলো লাজফার্মা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
স্বাধীনতার পর খ্যাতনামা ফার্মেসি লাজফার্মা কলাবাগানে যাত্রা শুরু করে। উদ্যোক্তা লুৎফর রহমানের তিনটি শাখাসহ ঢাকায় লাজফার্মার শাখা বর্তমানে প্রায় ৪০টি। যদিও এই দীর্ঘ সময়ে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে প্রায় ১০০টি সাইনবোর্ড তথা ফ্র্যাঞ্চাইজ বিক্রি করেছেন মূল মালিক উদ্যোক্তা। প্রত্যেক সাইনবোর্ড ক্রেতাকে চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা দিতে হয় মূল মালিককে। কিন্তু ওষুধ, প্রসাধনী ও খাদ্যপণ্যের মান নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই প্রতিষ্ঠানটির। অভিযোগ আছে, মান নিয়ন্ত্রণ, সেবা নিশ্চিতের বিপরীতে গত কয়েক বছরে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এ নিয়ে ভোক্তাদের অভিযোগেরও শেষ নেই। বিভিন্ন সময় ভোক্তারা হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা প্রতিনিয়ত দুর্ব্যবহার ও অসহযোগিতা করেন বলে জানান ভোক্তারা। এসব অভিযোগের কোনো প্রতিকার নেই।
আরও পড়ুন:
পাল্টে যেতে পারে আন্দোলনের ধরন