দোলনচাঁপা-কনকচাঁপা যেন আওয়ামী পল্লী
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) মোহাম্মদপুর হাউজিং এস্টেটের আসাদ এভিনিউয়ে (গৃহায়ন কনকচাঁপা) ও সাত মসজিদ রোডের ডি-টাইপ কলোনিতে (গৃহায়ন দোলনচাঁপা) ৪৩০টি আবাসিক ফ্ল্যাট প্রকল্পের কাজ চলমান। এ প্রকল্পে অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা ১৯৬০ সাল থেকে বসবাসকারী বাসিন্দাদের। কিন্তু আওয়ামী লীগের শাসনামলে সরকারি দলের দাস হিসেবে পরিচিত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন কর্মকর্তা, জাগৃকের চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তারা নিজেদের পছন্দ মতো ফ্ল্যাট ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের সাবেক নেতা, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের তার আস্থাভাজন কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগের স্বার্থ রক্ষাকারী কর্মকর্তাদের এ প্রকল্পের ফ্ল্যাট দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে। উপরন্তু অধিকাংশ কর্মকর্তা রাজউকের অন্যান্য প্রকল্পে প্লট/ফ্ল্যাট বরাদ্দ পাওয়ার পরও তথ্য গোপন করে নীতিমালা ভেঙে এ প্রকল্পে ফ্ল্যাট বাগিয়ে নিয়েছেন।
দুঃখজনক হলেও সত্যি, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কতিপয় নেতা এবং দলদাস বা তোষামোদকারী কর্মকর্তাদের এহেন লোভের তোপে উৎখাত হয়েছেন এখানকার প্রকৃত বাসিন্দারা; বঞ্চিত হয়েছেন সাধারণ গ্রাহকও। তৎকালে অত্যন্ত সুকৌশলে কাজগুলো করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আর তাদের মাথার ওপর ছিলেন যিনি, জাগৃকের সেসব চেয়ারম্যানও নিজেদের জন্য ফ্ল্যাট বাগিয়ে নিয়েছেন।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, জাগৃকের এ প্রকল্পে ২৮৮ জন বিভিন্নভাবে বরাদ্দ নিয়ে বসবাস করতেন। বসবাসকারীদের মধ্যে অনেকের বরাদ্দপত্র ছিল, কারও ছিল সাময়িক বরাদ্দপত্র, কেউবা আবার ডিমান্ড নোটের ভিত্তিতে বাস করতেন। অফার লেটার, এমনকি জাগৃকে করা আবেদনের কাগজ দেখিয়েও বাস করতেন। জাগৃকও যথারীতি এসব বাসিন্দার কাছ থেকে ভাড়া আদায় করত। অবৈধ বলে কখনও তাদের বরাদ্দ বাতিল করেনি। অথচ তারা এখন বাতিলের তালিকায় যুক্ত হওয়ার শঙ্কায় ভুগছেন। ফ্ল্যাট বরাদ্দের সব শর্ত মেনে টাকা পরিশোধ করলেও তাদের মধ্যে কমপক্ষে ১০০ জনের নাম
বাতিল করার উপায় খুঁজছে জাগৃক কর্তৃপক্ষ। এ প্রকল্পে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের। এ ছাড়া কিছু ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা সাধারণ মানুষকে। এ প্রক্রিয়া লটারির ভিত্তিতে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। অথচ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, জাগৃকের কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অফিসের লোকজন ভাগ-বাটোয়ারা করে পছন্দমতো ফ্ল্যাট বাগিয়ে নিয়েছেন।
সরকারি প্রকল্পে আবাসিক ফ্ল্যাট/প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে- আবেদনকারী যদি নিজ নামে, স্বামী/স্ত্রী (সরকারি চাকরিজীবী স্বামী/স্ত্রীর ক্ষেত্র ব্যতীত), সন্তান/পোষ্যের নামে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ (সাবেক গৃহসংস্থান অধিদপ্তর)/ রাজউক (সাবেক ডিআইটি) অন্য কোনো সরকারি/আধাসরকারি/ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় প্লট/ ফ্ল্যাট বরাদ্দ পেয়ে থাকেন, তবে তিনি এই ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য আবেদন করার যোগ্য হবেন না। এ ছাড়া ইতোপূর্বে বরাদ্দপ্রাপ্ত প্লট/ফ্ল্যাট বিক্রয়/হস্তান্তর করে থাকলেও তিনি প্লট/ফ্ল্যাট বরাদ্দ পেয়েছেন মর্মে গণ্য হবে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে উক্তরূপ প্রমাণিত হলে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বরাদ্দ আদেশ বাতিল করা হবে এবং জমাকৃত অর্থ বাজেয়াপ্ত হবে।
জাগৃক চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. নুরুল বাসির আমাদের সময়কে এ সম্পর্কে বলেন, কেউ যদি একাধিক ফ্ল্যাট পেয়ে থাকেন, সেটা আমাদের জানাতে হবে। আমি জানি না। তবে আগের নীতিমালায় ছিল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারও ঢাকার বাইরে প্লট, ফ্ল্যাট থাকলে ঢাকায় একটা নিতে পারবেন। এখন সেই সুযোগ নেই। দোলনচাঁপা, কনকচাঁপায় কারা কীভাবে ফ্ল্যাট পেয়েছেন, সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।
আরও পড়ুন:
একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দোলনচাঁপায় ফ্ল্যাট বরাদ্দের অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরে মোহাম্মদপুর হাউজিং এস্টেট ডি টাইপ কলোনি কল্যাণ সমিতির সভাপতি মারগুব আহমেদ নাজম উদ্দীন আমাদের সময়কে বলেন, দোলনচাঁপা ও কনকচাঁপায় আওয়ামী পল্লী বানানো হয়েছে। সেখানে রাজনৈতিক পরিচয়ে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত অ্যালোটিদের হটিয়ে আওয়ামী লীগের তোষামদকারী কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ফ্ল্যাট দেওয়া হয়েছে। এ জন্য সম্পূর্ণ বরাদ্দ বাতিল করে পুনঃবরাদ্দ ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি। বলেন, দোলনচাঁপা ও কনকচাঁপা প্রকল্প এলাকায় আমরা ২৮৮ জন অ্যালোটি ছিলাম। যখন প্রকল্প গ্রহণ করে, তখন যাচাই-বাছাই করে ২৭৭ জনকে বসবাসকারী হিসেবে ফ্ল্যাট দেওয়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। জাগৃক কৌশলে আমাদের বাতিল করার জন্য প্রসপেক্টাসে কিছু নতুন শর্ত জুড়ে দেয়। তারা পানির বিল পরিশোধের কাগজ দিতে বলে। কিন্তু বিগত ৬০ বছর আমরা কখনও পানির বিল দিইনি। যেহেতু অ্যাকাউন্ট জাগৃকের নামে। তাই আমরা ভাড়ার সাথেই সব দিয়ে দিতাম। কিন্তু তারা শুধুমাত্র বাতিল করার জন্য এ শর্ত জুড়ে দেয়। তবে আমরা বুঝতে পেরে তখন আবেদন করি যে, আমরা হাউজিংয়ের ভাড়াটিয়া হিসেবে বিল পরিশোধ করব। তখন পে অর্ডারের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করা হয়। তারপরও সেখানকার বাসিন্দাদের বাতিল করার ছুঁতো খুঁজতে থাকে জাগৃক। এ জন্য তারা একটি যাচাই-বাছাই কমিটি করে। ওই কমিটির প্রধান (পরিচালক প্রশাসন), সদস্য সচিব নির্বাহী প্রকৌশলী ঢাকা বিভাগ-২, সদস্য ডিডি, ও সদস্য এসডি। শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানকে বুঝিয়ে কমিটিতে কো-অপ করা হয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সিভিল) মো. হারিজুর রহমানকে। এই কর্মকর্তার নিচের গ্রেডের কর্মকর্তা যেখানে সভাপতি সেখানে কীভাবে তিনি কমিটিতে স্থান পেলেন- এ প্রশ্ন তুলেছেন মারগুব আহমেদ নাজম উদ্দীন। তিনি বলেন, এখানে যত অনিয়ম হয়েছে, সবকিছুর নাটের গুরু এই হারিজুর রহমান। আমাদের বরাদ্দ পাওয়ার কথা ২৮৮ জন। আমরা আবেদন করি ২৫৭ জন। আর প্রসপেক্টাসে জানানো হয় ২৫৩ জন। এখানে আমাদের সাথে বৈষম্য করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের তোষামোদকারীদের মধ্যে ফ্ল্যাট পেয়েছেন যারা:
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হেমায়েত হোসেন। তিনি জাগৃক থেকে ১৮৫০ বর্গফুটের পাশাপাশি রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট নিয়েছেন। নীতিমালা ভেঙে লটারি ছাড়াই তাকে দোলনচাঁপার ৪ নম্বর ভবনের ৪-এ/৯ ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন নিয়েছেন দোলনচাঁপার ৪-এ/৪ নং ফ্ল্যাটের পাশাপাশি ঝিলমিল ও পূর্বাচল প্রকল্পের প্লট। যুগ্ম সচিব মো. মমতাজ উদ্দিন দোলনচাঁপা প্রকল্পের ৪-এ/৬ ফ্ল্যাটের পাশাপাশি পেয়েছেন ঝিলমিল প্রকল্পের প্লট। উপসচিব মো. ফরিদুল ইসলাম দোলনচাঁপার ৪-বি/৮ ফ্ল্যাটের পাশাপাশি ঝিলমিল ও পূর্বাচলে প্লট নিয়েছেন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরিফ আহমেদের একান্ত সচিব হেমন্ত হেনরী কুবি ঝিলমিল, পূর্বাচল প্রকল্প ও ময়মনসিংহে প্লট নিয়েছেন। এ ছাড়া ধানমন্ডি প্রকল্পে ফ্ল্যাট নিয়েছেন। উপসচিব লুৎফুন নাহার দোলনচাঁপায় ফ্ল্যাটের পাশাপাশি পূর্বাচলে প্লট নিয়েছেন। সিনিয়র সহকারী প্রধান মো. বরকাতুর রহমান দোলনচাঁপার ৩ নম্বর ভবনের ৩-এ/৮ ফ্ল্যাটের পাশাপাশি ঝিলমিল ও নড়াইল প্রকল্পে প্লট নিয়েছেন।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (সদস্য) ভূমি ড. মো. মইনুল হক আনছারী দোলনচাঁপার ৪ নম্বর ভবনের ৪-এ/৫ ফ্ল্যাটের পাশাপাশি পূর্বাচলে প্লট এবং ধানমন্ডি প্রকল্পেও ফ্ল্যাট নিয়েছেন। জাগৃকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান দোলনচাঁপার ২ নম্বর ভবনের ২-এ/৮ ফ্ল্যাট ছাড়াও রাজউকের উত্তরা প্রকল্পে প্লট, ঝালকাঠির নলসিটিতে প্লট নিয়েছেন। সময়ের শর্তও তিনি উপেক্ষা করেছেন।
সংরক্ষিত কোটায় কারা পেয়েছেন:
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. অলিউল্লাহ দোলনচাঁপায় ৪নং ভবনের এ/৮ ফ্ল্যাট ছাড়াও পূর্বাচলে প্লট নিয়েছেন। দুদকের সচিব মো. মাহাবুব হোসেন দোলনচাঁপা/কনকচাঁপা প্রকল্পে ফ্ল্যাটের পাশাপাশি পূর্বাচল ও ঝিলমিলে প্লট নিয়েছেন। ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমানের দোলানচাঁপা/কনকচাঁপা ফ্ল্যাটের পাশাপাশি পূর্বাচল, ঝিলমিলে প্লট রয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি মিয়া মোহাম্মদ হাসান জাহিদ তুষার দোলনচাঁপা/কনকচাঁপায় ফ্ল্যাট ছাড়াও পূর্বাচলে প্লট পেয়েছেন। আইন ও বিচার বিভাগের উপসচিব (প্রশাসন-২) এস মোহাম্মদ আলীর দোলানচাঁপা/কনকচাঁপা ফ্ল্যাট ছাড়াও ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট রয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আলমগীর হোসেন দোলনচাঁপা/কনকচাঁপা ফ্ল্যাট নিয়েছেন। জাগৃকের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকী দোলনচাঁপায় ফ্ল্যাট ছাড়াও পূর্বাচলে প্লট নিয়েছেন। অতিরিক্ত সচিব শাকিলা জেরিন আহমেদ দোলনচাঁপায় ফ্ল্যাটের পাশাপাশি পূর্বাচলে প্লট পেয়েছেন। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ দোলনচাঁপায় ফ্ল্যাট নিয়েছেন। সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন দোলনচাঁপায় ফ্ল্যাট নিয়েছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব-১ এম এম ইমরুল কায়েস দোলনচাঁপায় ফ্ল্যাট নিয়েছেন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব মাসুদ বিল্লাহও রয়েছেন এ তালিকায়।
নিজের নামে একাধিক প্লট/ফ্ল্যাটের বিষয়ে জাগৃকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, কনকচাঁপা ও দোলনচাঁপা প্রকল্পে আমি যখন আবেদন করি তখন ঢাকা উত্তর বা দক্ষিণে আমার নামে বা পরিবারের কারও নামে কোনো প্লট বা ফ্ল্যাট ছিল না, যা আমি হলফনামায়াও উল্লেখ করেছি।
কোন ভবনে কতটি ফ্ল্যাট : কনকচাঁপা ভবন-১ এ ফ্ল্যাট রয়েছে ৩০টি, ভবন-২ এ ১০৪টি, ভবন-৩ এ ৬৫টি এবং ভবন-৪ এ ৭৮টি ফ্ল্যাট। মোট ২৭৭টি। অন্য দিকে দোলনচাঁপা ভবন-১ এ ১৮টি, ভবন-২ এ ৯৪টি, ভবন-৩ এ ১৮টি এবং ভবন-৪ এ ২৬টি মোট ১৫৩টি। অর্থাৎ, কনকচাঁপা-দোলনচাঁপায় মোট ৪৩০টি ফ্ল্যাট। প্রসপেক্টাসের নির্দেশনা অনুযায়ী পূর্বে বসবাসদের জন্য নির্ধারিত ছিল ২৫৩টি আর সংরক্ষিত, গ্রেডেশন ও লটারির মাধ্যমে বরাদ্দকৃত ১৬৪টি। বাকি ১৩টি অবশিষ্ট থাকবে সেগুলো সাধারণ নাগরিকের কাছ থেকে আবেদন সংগ্রহ করে বিক্রি করবে জাগৃক।
যত অনিয়ম হয়েছে:
বরাদ্দ নীতিমালার অনুচ্ছেদ ৫.১ (ঠ), (ড) এ বর্ণিত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং প্রকল্প বাস্তবায়নকারী বিভিন্ন অধিদপ্তর/সংস্থার কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ সংরক্ষিত কোটায় আবাসিক ফ্ল্যাট বরাদ্দের আবেদনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীর চাকরি স্থায়ী হতে হবে। এ ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে চাকরি স্থায়ীসংক্রান্ত প্রমাণাদি দাখিল করতে হবে। স্ব স্ব সংস্থা হতে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষে আবেদন অগ্রায়ন করা হলেই কেবল এ কোটায় আবেদন বিবেচনা করা হবে। এখানে জাগৃকের একজন চেয়ারম্যান বরাদ্দের ক্ষেত্রে সকল শর্ত ভঙ্গ করেছেন। মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের (পদায়ন/ প্রেষণে নিয়োজিত) ন্যূনতম এক বছরের চাকরিকাল পূর্ণ হতে হবে। এটাও মানেননি জাগৃকের কিছু কর্মকর্তা। প্রতিটি ভবনের নিচতলা ও বেজমেন্ট কার পার্কিং হিসেবে ব্যবহৃত হবে। সেই শর্তও ভঙ্গ করা হয়েছে। ফ্ল্যাট বরাদ্দ শর্তাবলীর মধ্যে রয়েছে প্রকল্পের সব ফ্ল্যাট লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে। কিন্তু কর্মকর্তারা লটারির আগেই পছন্দমতো ফ্ল্যাট বাগিয়ে নিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
পাল্টে যেতে পারে আন্দোলনের ধরন
এ প্রকল্পে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের জন্য নির্ধারিত কোটা ছিল ১৬টি। সেখানে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৭টি। আর কোটার ১৬টির মধ্যে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারী পেয়েছেন মাত্র ছয়টি। বাকি ১১টি অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা ভাগ-বাটোয়ারা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।