সংস্কারের আলাপ দীর্ঘ হলে সংকট আরও বাড়বে
কর্মশালায় তারেক রহমান
সংস্কার প্রস্তাবের আলাপ-আলোচনা যত দীর্ঘায়িত হবে, দেশ তত বেশি সংকটে পড়বে বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল রবিবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তিনি এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
রাজধানীর শ্যামপুরের কদমতলীর বালুর মাঠে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধান অতিথি তারেক রহমান। মহানগর দক্ষিণের ২৪টি থানার বিএনপিসহ ১১টি অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী এতে অংশ নেন। রাজধানীর যানজট, পরিবেশ দূষণ, স্বাস্থ্যসেবা, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে নেতাকর্মীদের প্রশ্নেরও জবাব দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের পরিচালনায় কর্মশালায় বিএনপির বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আ ন ম সাইফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন:
একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তারেক রহমান বলেন, যদি নির্বাচন প্রক্রিয়া দেরি হয়, যদি সংস্কার সংস্কার করে আমরা সংস্কারের আলোচনা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করতে থাকি তাহলে যে স্বৈরাচারকে বাংলাদেশের দল-মত, শ্রেনি-পেশা নির্বিশেষে সব মানুষ একত্রিত হয়ে এ দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে, সেই স্বৈরাচার সুযোগ পেয়ে যাবে আবার কাঁধে চেপে বসার। কাজেই যেসব বিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ, সমাজের বিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ, সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ যারা সংস্কারের কথা বলছেন, আপনাদের সবার কাছে রাজনৈতিক দলের অবস্থান থেকে আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই, এ আলাপ দয়া করে দীর্ঘায়িত করবেন না। কারণ আপনারা সংস্কারের আলাপ যত দীর্ঘায়িত করবেন দেশ তত বেশি সংকটের মুখে পড়বে, আপনারা সংস্কার আলাপ যত দীর্ঘায়িত করবেন, ষড়যন্ত্রকারীরা তত বেশি ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পাবে।
তারেক রহমান বলেন, সংস্কারের প্রস্তাবগুলো যদি বাস্তবায়ন করতে হয় তাহলে সবচেয়ে আগে নির্বাচনই প্রয়োজন। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যাদের দায়িত্ব দেবে, সংস্কারের কাজ তারাই শুরু করতে পারবে। তাদেরই শুরু করতে হবে। যারা নির্বাচিত হয়ে আসবেন, তারা জনগণের কাছে ওয়াদা করবেন যে, সুযোগ পেলে এসব সংস্কার বাস্তবায়ন করবেন। তিনি আরও বলেন, সংস্কারকে যত দ্রুত বাস্তবায়ন করা যাবে দেশকে, দেশের মানুষকে তত দ্রুত আমরা বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারব। এসব সংস্কার বাস্তবায়নে নির্বাচন ছাড়া আর কোনো রাস্তা নেই।
তারেক রহমান বলেন, আমি মনে করি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে যে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়, এটা সকলকে অনুধাবন করতে হবে। কোনো কোনো ব্যক্তি বলেন, নির্বাচন হলেই কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? আমি বলি, সঙ্গে সঙ্গে সব সমস্যার সমাধান হবে না। কিন্তু জনগণের রায়ের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার সুযোগ পাবে যারা, তারা সমস্যার জট আস্তে আস্তে খুলবে, খোলা যাবে।
নেতাকর্মীদের প্রতি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আসুন আজকের এ কর্মশালার মাধ্যমে সকলে প্রতিজ্ঞা করি যে, বাংলাদেশের মানুষ আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দিলে আমরা প্রত্যেকে যে যার অবস্থান থেকে সেই ওয়াদা সর্বোচ্চ পূরণে চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ, যে সংস্কারের ওয়াদা আমরা জনগণের সামনে দিয়েছি।
আরও পড়ুন:
পাল্টে যেতে পারে আন্দোলনের ধরন