এবার সাজিদ-নোমানের স্পিন-বিষে নীল উইন্ডিজ
পাকিস্তানের দুই স্পিনার নোমান আলী ও সাজিদ খানের স্পিন যে কতটা ভয়ংকর, সেটা ইংল্যান্ড টের পেয়েছিল গত বছরের অক্টোবরে। ৩ ম্যাচের সিরিজের প্রথমটি ইনিংস ব্যবধানে জিতলেও শেষ ২টিতে ইংল্যান্ড হারে এই দুজনের স্পিন-বিষে নীল হয়েই। এবার এই স্পিন-জুটির ভয়ংকর রূপ দেখল পাকিস্তান সফরে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজও।
প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ২৩০ রানের জবাবে মাত্র ১৩৭ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যার মধ্যে ৯টি উইকেটই নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন সাজিদ-নোমান। ২৫ ওভার ২ বলের মধ্যে ২৩ ওভারই করেছেন এই দুজন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেট হারিয়ে ১০৯ রান তুলে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে পাকিস্তান। তাতে শান মাসুদের দলের লিড দাঁড়িয়েছে ২০২ রানে।
মুলতানে গতকাল শুক্রবার টেস্টের প্রথম দিনে খারাপ আবহাওয়ার কারণে খেলা হয়েছে মাত্র ৪১ ওভার ৩ বল। ৪৬ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারানোর পর দলকে এই শক্ত অবস্থানে নিয়ে আসেন সৌদ শাকিল ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। আজ দ্বিতীয় দিনেও দুর্দান্ত সেই ব্যাটিং চালিয়ে যান এই দুজন। ১৮৭ রানের মাথায় শাকিল ফিরলে ভাঙে জমে যাওয়া এই জুটি। ততক্ষণে দলের সঙ্গে ১৪১ রান যোগ করে ফেলেছেন তারা। ১৫৭ বলে ৬ চারের সাহায্যে ৮৪ রান করেন শাকিল। পঞ্চম উইকেট হারানোর পর আর ৪৩ রান যোগ করতে বাকি ৫ উইকেটও হারায় পাকিস্তান। ২৩০ রানে থামে প্রথম ইনিংসে দলটির পথচলা।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে চরম বিপদে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরুটা অবশ্য সাজিদ একাই করেন। শুরুর চার ব্যাটার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট, মিকাইল লুইস, কেসি কার্টি ও কেভাম হজকে ফেরান এই অফ স্পিনার। এরপর উইকেট শিকারে যোগ দেন নোমান। পরের পাঁচটি উইকেট একাই তুলে নেন তিনি। এই বাঁহাতি স্পিনারের শিকার আলিক আথানেজ, জাস্টিন গ্রেভস, টেভিন ইমলাচ, কেভিন সিনক্লেয়ার ও গুড়াকেশ মোতি। শেষ উইকেটটি শিকার করেন লেগ স্পিনার আবরার আহমেদ।
---৫ উইকেট নিয়ে মাঠ ছাড়ছেন নোমান। ছবি: পিসিবি
উইন্ডিজ ইনিংসকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। দলটি প্রথম ৬৬ রান করতেই হারায় ৮ উইকেট। অথচ শেষ ২ উইকেটে রান আসে ৭১। এই কৃতিত্ব শেষ তিন ব্যাটার মোতি, জোমেল ওয়ারিকান ও জেডন সিলসের। শেষদিকে আগ্রাসী ক্রিকেটও খেলেন এই তিনজন। ২৪ বলে ৪টি চার ও ১ ছক্কায় ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন ওয়ারিকান। ২৫ বলে মোতি ১৯ ও ১৩ বলে সিলস ৩ ছক্কায় করেন ২২ রান।
দিনের শেষভাগে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। দুই ওপেনার শান মাসুদ ও মোহাম্মদ হুরাইরা আগ্রাসী ব্যাটিং করেন এ সময়, বিশেষ করে মাসুদ। ৯৪ বলে ৬৭ রান যোগ করেন তারা। ৫৮ বলে ২৯ রান করে ক্যারিবিয়ান স্পিনার ওয়ারিকানের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন শোয়েব মালিকের ভাতিজা হুরাইরা। ৫ রান করে একই বোলারের বলে একই পদ্ধতিতে আউট হন বাবর আজমও। দিনের শেষ দিকে রান আউটের ফাঁদে পড়েন মাসুদ। শেষ হয় ২ চার ও ২ ছক্কায় ৭০ বলে তার ৫২ রানের ইনিংস। অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন কামরান গুলাম ও সৌদ শাকিল। শেষদিকে আলোকস্বল্পতায় একটু আগেই খেলা শেষ হয়।