হুমকিতে আমেরিকার গণতন্ত্র
জাতির উদ্দেশে বিদায়ী ভাষণে বাইডেন
ঘরে ও বাইরে গণতন্ত্র সমুন্নত রাখা ও এই ধারার বিকাশে নিরলস কাজ করে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রেই এখন গণতন্ত্র ব্যাপকভাবে হুমকির মুখে পড়ে গেছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন দেশটির বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। জো বাইডেন জাতির উদ্দেশে দেওয়া বিদায়ী ভাষণে মুখে নাম না নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের প্রতি ইঙ্গিত করে এও বলেনÑ আমেরিকায় গণতন্ত্রেরে বদলে গোষ্ঠীতন্ত্র বিকশিত হচ্ছে। তিনি এর বিরুদ্ধে প্রহরীর ভূমিকা নেওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
২০২০ সালে রিপাবলিকান নেতা, তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জো বাইডেন। এই ডেমোক্র্যাট নেতা গত চার বছরে অন্তত দুটি যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে অনেকটা প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে ফেলেন। তার সরকার রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতিরোধ যুদ্ধে এবং হাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসনে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছে।
২০২৪ সালের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের পরাজয়ের অন্যান্য কারণের মধ্যে অকারণে যুদ্ধে জড়ানোর বিষয়টিও ছিল বলে গত নভেম্বরে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মন্তব্য করেছিলেন। প্রথমে বাইডেন প্রার্থী ছিলেন, পরে তার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস দলটির পক্ষে প্রার্থী হিসেবে ভোট লড়েন। তাকে হারিয়ে আবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন ট্রাম্প। তিনি ২০ জানুয়ারি দেশটির ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। বিদায়
নেবেন বাইডেন।
আরও পড়ুন:
আকতার পারভেজ সর্বোচ্চ ভোটে সিএসই পরিচালক
বিদায়ের আগে জাতির উদ্দেশে ভাষণে ৮২ বছর বয়সী বাইডেন বলেন, ‘আজ আমেরিকায় চরম সম্পদ, ক্ষমতা ও প্রভাবের একটি অলিগার্কি বিকশিত হচ্ছে, যা আক্ষরিক অর্থে যুক্তরাষ্ট্রের সমগ্র গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এটি খুব অল্পসংখ্যক অতি ধনী লোকের হাতে ক্ষমতার বিপজ্জনক কেন্দ্রীকরণ।’
বাইডেন তার ভাষণে সামাজিক মাধ্যম ফ্ল্যাটফর্মগুলোকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, আমেরিকানরা ভুল তথ্য ও কুতথ্যের নিচে চাপা পড়ে যাচ্ছে, যা ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছে। সামাজিক মাধ্যম ফ্ল্যাটফর্মগুলোর জবাবদিহির আহ্বান জানান তিনি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় (এআই) বিপুল সম্ভাবনা দেখলেও এর বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেন বাইডেন। তিনি বলেন, এআই বিপুল সম্ভাবনা উপহার দিতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে প্রহরা না থাকলে তা নতুন হুমকির জন্ম দিতে পারে। রূপান্তরমূলক প্রযুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই চীনের ওপর নেতৃত্ব নিতে হবে বলে উল্লেখ করেন বাইডেন।
আরও পড়ুন:
বৃহত্তম হিমশৈল
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তার অর্জনকে হুমকির মুখে ফেলেছে প্রভাবশালী শক্তি। ক্ষমতা ও মুনাফার স্বার্থে তারা এই কাজ করছে।
আশাবাদী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বাইডেন তার ভাষণ শেষ করেন। তিনি আমেরিকানদের দেশ সম্পর্কে তার আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। আমেরিকানদের উদ্দেশে বাইডেন বলেন, এখন দেশের জনগণের প্রহরীর ভূমিকা পালন করার পালা।