রাষ্ট্র ও রাজনীতির পুনর্গঠন : ৩১ দফার ভিত্তিতে সংবিধান সংস্কারের ৬২টি প্রস্তাবনা

সাঈদ খান
০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
রাষ্ট্র ও রাজনীতির পুনর্গঠন : ৩১ দফার ভিত্তিতে সংবিধান সংস্কারের ৬২টি প্রস্তাবনা

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিএনপির ৩১ দফার ভিত্তিতে সংবিধান সংস্কারের ৬২টি যুগান্তকারী প্রস্তাবনা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে। এই সংস্কার প্রস্তাবনা দেশের প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের আকাক্সক্ষা-অভিপ্রায়ের লক্ষ্যকে সামনে রেখে রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সামাজিক কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তনের সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে, যা ভবিষ্যতে জনগণের জীবনে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। বিএনপির এই সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে শুধু দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ পরিবর্তিত হবে না, বরং রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানে নতুন এক শুদ্ধতার সূচনা হবে।

বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের আকাক্সক্ষা-অভিপ্রায় অনুযায়ী এবং ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের রক্তের অঙ্গীকারের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে সংসদীয় একনায়কতন্ত্রের সৃষ্টি রোধ করা যায়। প্রস্তাবনায় প্রধান বিষয়গুলো হলো : একই ব্যক্তি পরপর দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না; সংসদে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনা; উপরাষ্ট্রপতি ও উপপ্রধানমন্ত্রী পদ সৃজন; দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রবর্তন; সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন; অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ সুপ্রিমকোর্টের অধীনে রাখা; গণভোটের বিধান পুনঃপ্রবর্তন; এবং প্রজাতন্ত্র, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ, নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে সংস্কার প্রস্তাব।

এই প্রস্তাবনাগুলোর মাধ্যমে সরকারের ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে ক্ষমতার সুষ্ঠু সমন্বয় নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। বিশেষত, ৪৮, ৫৬, ১৪২ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন এবং গণভোটের বিধান পুনঃপ্রবর্তনের প্রস্তাবও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিএনপি আশা করে, এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে এবং জনগণের আকাক্সক্ষা পূর্ণাঙ্গভাবে প্রতিফলিত হবে।

২০২৪ সালের ২৬ নভেম্বর বিএনপির সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাবনা জাতীয় সংসদে সংবিধান সংস্কার কমিশনের কার্যালয়ে কমিশন প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজের হাতে তুলে দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

কিছু যুগান্তকারী প্রস্তাবনা

বিএনপির সংবিধান সংস্কারের ৬২টি যুগান্তকারী প্রস্তাবনায় আইনের অপব্যবহার রোধ এবং নাগরিক অধিকার সুরক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আইন বাতিল বা সংস্কারের কথা বলা হয়েছে, যা দেশের আইনগত কাঠামোকে আরও কার্যকর, স্বচ্ছ এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার দিকে পরিচালিত করবে। এই প্রস্তাবনাগুলোর কয়েকটি নিম্নরূপÑ

১. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন : বিএনপি এই আইনকে একটি ‘কালাকানুন’ বলে অভিহিত করে এর সম্পূর্ণ বাতিলের দাবি জানিয়েছে।

২. সংবিধানবিরোধী ও স্বেচ্ছাচারী আইন বাতিল : গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচারের পরিপন্থী সব আইন ও অধ্যাদেশ বাতিলের প্রস্তাব, যাতে কালাকানুনের অপপ্রয়োগ বন্ধ করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

৩. মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী আইন সংস্কার : বিশেষ ক্ষমতা আইন, সন্ত্রাস দমন আইনসহ যেসব আইন মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে, সেগুলো পুনর্মূল্যায়ন ও প্রয়োজনে বাতিল করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অপহরণ, গুম ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে আইনি কাঠামো শক্তিশালী করার কথা বলা হয়েছে।

৪. গণমাধ্যম ও সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন : সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা বন্ধ এবং তাদের মতপ্রকাশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান আইনের সংস্কারের লক্ষ্যে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য নতুন আইন প্রণয়নের দাবি জানানো হয়েছে।

৫. সাম্প্রদায়িক উসকানি ও বিদ্বেষমূলক আইন পর্যালোচনা : ধর্ম বা জাতিগত বিদ্বেষ রোধে ভারসাম্যপূর্ণ আইন প্রণয়ন করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বিদ্বেষ ছড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি করা আইন ও বিধানগুলোর পর্যালোচনা ও সংশোধনের সুপারিশ করা হয়েছে।

৬. আইনের প্রয়োগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা : মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সব ধরনের আইন জনগণের অধিকার সুরক্ষিত করে তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি এবং কালাকানুনের প্রয়োগ রোধে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

৭. নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা : বিচারবহির্ভূতভাবে আটক ও নির্যাতন বন্ধের লক্ষ্যে বেআইনি আটক, নির্যাতন এবং দমনমূলক আইনি ব্যবস্থাগুলো বন্ধ করার কথা তুলে ধরেছেন।

৮. বিদ্যুৎ আইন ২০১০ সংশোধন : বিদ্যুৎ প্রকল্পে গোপন চুক্তি ও দুর্নীতি বন্ধের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ আইন ২০১০-এর ১৬(১) ধারা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে সব চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ করা যায়।

৯. শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করার বিষয়ে কঠোর আইন প্রণয়ন : শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলে এমন কাজ থেকে মুক্তির জন্য শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ধাপে ধাপে শিশুশ্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করার রূপরেখা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

১০. সংসদ সদস্যদের মতামত প্রদানে স্বাধীনতা : সংসদ সদস্যদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আইন (সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন) সংশোধন করা হবে, যাতে কোনো সদস্য তার নিজস্ব রাজনৈতিক আদর্শ ও জনগণের স্বার্থে স্বাধীনভাবে বক্তব্য রাখতে পারেন এবং সরকারের প্রতি পূর্ণ দায়িত্বশীলতা প্রতিষ্ঠা হয়।

১১. প্রচার ও জনমত সৃষ্টি সম্পর্কিত আইন : গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় ‘পিপলস’ ল’ নামে পরিচিত যে আইন আছে, সেটির সংস্কার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমের ওপর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

১২. তথ্যপ্রযুক্তি আইন : তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার এবং এর অপব্যবহার রোধে থাকা আইনের পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে প্রাতিষ্ঠানিক এবং নাগরিক অধিকার রক্ষা হয়।

১৩. পাবলিক সেবা আইন : সরকারি অফিস এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা প্রদান প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ, কার্যকর ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ করার জন্য সংশোধন প্রস্তাব করা হয়েছে।

১৪. প্রতিরক্ষা আইন : প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বাহিনীর ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংশোধন ও সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে।

১৫. ভোটাধিকার আইন : ভোটাধিকার ব্যবস্থায় অধিকতর স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সংশোধন প্রস্তাব করা হয়েছে।

১৬. সামাজিক নিরাপত্তা আইন : শ্রমিকদের এবং দরিদ্র জনগণের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা এবং শ্রমিক অধিকার সম্পর্কিত আইনের সংস্কার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

১৭. জমির অধিকার আইন : কৃষকদের জমির অধিকার সুরক্ষা এবং ভূমি বেদখল রোধে নতুন আইন প্রবর্তন বা বর্তমান আইনগুলোর সংশোধন করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

১৮. স্বাস্থ্যসেবা আইন : স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে নাগরিকদের অধিকার এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সংশোধন প্রস্তাব করা হয়েছে।

১৯. নির্বাচন কমিশনসংক্রান্ত আইন : প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২ সংশোধন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যাতে সব রাজনৈতিক দলের মতামত অন্তর্ভুক্ত করা যায় এবং নির্বাচন কমিশনটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। এ ছাড়া ইভিএমের পরিবর্তে পেপার-ব্যালটের মাধ্যমে ভোট প্রদান নিশ্চিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা জনগণের আস্থার সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে পুনরুদ্ধার করবে। এটি ভোটের স্বচ্ছতা এবং জনগণের ভোটাধিকারের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে।

২০. দল নিবন্ধন আইন : রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন সংস্কার করার প্রস্তাব করা হয়েছে। যাতে নিরপেক্ষভাবে সব দলের জন্য সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং দলীয় প্রভাবমুক্ত রেখে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার বাতিল করার কথা বলা হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলো ভোটাধিকার সুরক্ষিত রাখার এবং জনগণের বিশ্বাসের ভিত্তিতে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য অপরিহার্য।

মূলত সংবিধান সংস্কারের এসব প্রস্তাবনার মধ্য দিয়ে আইনের শাসনকে দেশের গণতান্ত্রিক এবং সামাজিক কাঠামোর মূল স্তম্ভ হিসেবে দেখা হয়েছে, যেখানে রাষ্ট্রের সব কার্যক্রম আইন অনুযায়ী পরিচালিত হবে এবং কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী আইনের ঊর্ধ্বে থাকবে না। বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি, যাতে প্রত্যেক নাগরিক তার ন্যায্য বিচার পায় এবং কোনো প্রকার বৈষম্য বা পক্ষপাতিত্ব না ঘটে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের অধিকার সুরক্ষিত করার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।

এসব আইনের সংস্কার প্রস্তাব দেশের নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষিত করার জন্য এবং রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামো ও আইনি ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী, কার্যকর এবং স্বচ্ছ করতে গ্রহণ করা হয়েছে।

নতুন বাংলাদেশ

বাংলাদেশের ইতিহাসে বিএনপির ৩১ দফার আলোকে ৬২টি সুনির্দিষ্ট সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাবনা দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রশাসন এবং সামাজিক কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে। এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সুশাসনের প্রতি দায়বদ্ধ হয়ে উঠবে। একটি সুখী, সমৃদ্ধ এবং শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গঠনের জন্য এই সংস্কার প্রস্তাবনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার ভিত্তিতে একটি উন্নত রাষ্ট্র গঠন সম্ভব হবে, যেখানে প্রতিটি নাগরিক তাদের অধিকার, নিরাপত্তা এবং সুযোগ পাবে এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৩১ দফা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিশারি যা শুধু বিএনপির নয়, দেশের সব রাজনৈতিক দলের চিন্তা-ভাবনা থেকে প্রণীত একটি যুগোপযোগী কর্মসূচি। এটি দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য একটি সুসংগঠিত রূপরেখা, যেখানে জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরা হয়েছে, যেমন গণতন্ত্রের সুরক্ষা, শিক্ষা সংস্কার, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন, মানবাধিকার, দুর্নীতি দমন ও কৃষির উন্নতি।

৩১ দফা জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে জনগণের অংশগ্রহণ, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকার রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনার মডেল হিসেবে এবং ভবিষ্যৎ উন্নয়নে অগ্রগামী ভূমিকা রাখবে।


সাঈদ খান : ডাইরেক্টর, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও সাংগঠনিক সম্পাদক, ডিইউজে