বাউলিয়ানায় মাতোয়ারা পিঠা উৎসব
আমাদের সময়ের শীতকালীন আয়োজন
ঐতিহ্যবাহী বাহারি সব পিঠা-পুলির সমারোহ, সঙ্গে বাউল গান। আমাদের সময়ের আম্রকাননে গতকাল রবিবার আয়োজন করা হয়েছে বাঙালির ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ পিঠা ও বাউল উৎসবের। শীতের বিকালে ভাপা, চিতই, দুধচিতই, পাটিসাপটা, তেলের পিঠা, নারিকেলের কুলি পিঠা, গোকুল পিঠা, ম্যারা পিঠা, দুধপুলি, নকশি পিঠাসহ নানা স্বাদের পিঠা নিয়ে হাজির হন দেশের প্রতিথযশা রন্ধনশিল্পীরা।
দৈনিক আমাদের সময় ও আয়না সময়-এর আয়োজনে উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক মোহাম্মদ আলী হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন আমাদের সময়ের প্রকাশক ড. খোন্দকার শওকত হোসেন, পিএইচপি ফ্যামিলির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মোস্তফা জামাল হোসেন এবং ইউনিক গ্রুপের পরিচালক ও কোম্পানি সচিব শরীফ হাসান। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ ও পিএইচপি ফ্যামিলির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার এনামুল হক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আমাদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক মাঈনুল আলম। সঞ্চালন করেন আয়না সময়ের বিভাগীয় সম্পাদক লাবণ্য লিপি।
মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, পিঠা উৎসব মানেই বাহারি পিঠার মেলা। বাঙালির লোকজ ইতিহাস-ঐতিহ্যে রয়েছে পিঠাপুলি। যারা পিঠা বানিয়েছেন এবং এই আয়োজন করেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। বিশেষ করে আমাদের সময়ের যারা আছেন, তারাই আমাদের শক্তি। আপনাদের নিয়ে আমাদের পথচলা। আপনারা যেভাবে প্রতিষ্ঠানকে আগলে রেখেছেন, এ জন্য সবাইকে আবারও ধন্যবাদ জানাই।
আরও পড়ুন:
আকতার পারভেজ সর্বোচ্চ ভোটে সিএসই পরিচালক
ড. খোন্দকার শওকত হোসেন বলেন, পিঠা উৎসব বাঙালির ঐতিহ্যকে ধারণ করে। শহরের নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী সব পিঠার পরিচিতি তুলে ধরতে এ উৎসবের সুদূরপ্রসারী তাৎপর্য রয়েছে। আজকের পিঠা উৎসব তার একটি উদাহরণ। দৈনিক আমাদের সময় সব সময় চেষ্টা করে দেশের ঐতিহ্য ও মানুষকে নিয়ে কাজ করার। এই আয়োজনে যুক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, এত সুন্দর আয়োজনে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আমাদের সময়কে ধন্যবাদ জানাই। অল্প কিছুদিন হলেও এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি। আপনজনদের কাছে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। আপনারা অনেকেই আমার কাছে পরিবারের মতো। এ ছাড়া আপনাদের কাছে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা বার্তা নিয়ে এসেছি। আমরা আশা করি, সবাই দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার মাধ্যমে আমাদের দেশের মিডিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। পাশাপাশি দেশের অগ্রযাত্রায় সবাই অংশগ্রহণ করবেন।
আরও পড়ুন:
বৃহত্তম হিমশৈল
পিঠা উৎসবে বাহারি সব পিঠাপুলি নিয়ে উপস্থিত ছিলেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা, কাকলী সাহা, ফারজানা আনোয়ার, শাহনাজ ইসলাম, নয়না আফরোজ, মোস্তফা মনোয়ার মিতা, জিনিয়া ইসলাম, সিমা পুষ্প, ফারজানা বাতেন, শায়লা, কানিজ ফাতেমা, কোহিনূর বেগম, রাশিদা আক্তার, কানিজ ফাতেমা রুমা, ফেরদৌস আরা অনা, সিলভিয়া আক্তার প্রমুখ। এ ছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আজহারুল হক আজাদ, খালিদ মাহমুদ খান, বিপ্লব সাহা, লিপি খন্দকার, সাংবাদিক পল্লব মোহাইমেন, বুলবুল টুম্পা, তানিয়া, তাসলিমা, সোনিয়া হাবিব, আবেদা খাতুন মিতুল, ইতি, তনিফা রহমানসহ অনেকে।
আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে বিকালে কেক কাটার মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা করেন পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক মোহাম্মদ আলী হোসেন। এরপর বাউল গানের পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন আমন্ত্রিত শিল্পী দিতি সরকার। তার পরিবেশনায় ছিলÑ ‘তুই যদি আমার হইতি রে, আমি হইতাম তোর...’ এবং ‘কী জাদু কইরা বন্দে মায়া লাগাইছে...’ গান দুটি। এরপর মঞ্চে আসেন শিল্পী কামরুজ্জামান রাব্বি। তার কণ্ঠ ছিল পিঠা নিয়ে উত্তরবঙ্গের ভাওয়াইয়া গানÑ ‘মনটা মোর পিঠা খাইবার চায়’, ‘খাইতে আইয়া কমলা তোর বাপকে গিয়া বল...’, ‘এমন মায়ার কান্দন আর কাইন্দো না রাই বিনোদিনী’ গানগুলো। এরপর ডলি মণ্ডল পরিবেশন করেন ফকির লালন সাঁইজির ‘সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে...’ ও ‘মিলন হবে কত দিনে, আমার মনের মানুষেরও সনে..’ গান দুটি। শিল্পী শাহরিয়ার রাফাত গেয়ে শোনানÑ ‘তোমরা একতারা বাজাইও না, দোতারা বাজাইও না..’ ও ‘তোমার বাড়ির রঙ্গের মেলায় দেখেছিলাম বায়োস্কোপ’। এরপর মঞ্চে আসেন শিল্পী বিশ্বাস। তিনি গেয়ে শোনানÑ ‘রাগ কইরো না মনের মানুষ, মাফ কইরা দাও আমারে...’ ও ‘তিন পাগলের হলো মেলা নদে এসে...’। আলিজা পুতুল পরিবেশন করেনÑ ‘তোমায় হৃদ মাঝারে রাখবো, ছেড়ে দেবো না...’ ও ‘ধন্য ধন্য বলি তারে ...’। এরপর মঞ্চে আসেন বাউলশিল্পী আলমগীর সরকার। তিনি গেয়ে শোনানÑ ‘গ্রামের নওজোয়ান, হিন্দু মুসলমান...’ ও ‘বন্ধুর বাড়ি আমার বাড়ির মধ্যে প্রেমের নদী...’ গান দুটি। আছিয়া ইসলাম দোলা গেয়ে শোনানÑ ‘ফুল ফুটেছে গন্ধে সারা মন...’ ও ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো...’। উৎসবের সবশেষ পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন কণ্ঠশিল্পী খায়রুল ওয়াসী। তার কণ্ঠে ছিলÑ ‘এক জীবনে এক মানুষই হইলিরে দুজন, এই মনেতে বহাইলি দুঃখেরি প্লাবন...’ ও ‘চোখ লাল কিসে, পিরিতের বিষে নাকি অন্তরের দোষে...’ গান দুটি। খায়রুল ওয়াসীর পরিবেশনার মধ্য দিয়ে পর্দা নামে পিঠা ও বাউল উৎসবের। উৎসবের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল ফারজানা কুজিন, উজ্জ্বলা কেয়ার, এলিট লাইফস্টাইল, এমপেরিয়র ফ্যাশন ও ওয়্যারড্রোব।
আরও পড়ুন:
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম
উৎসবের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন দৈনিক আমাদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক মাঈনুল আলম, ভারপ্রাপ্ত বার্তা সম্পাদক মো. আশরাফুল ইসলাম, চিফ রিপোর্টার নজরুল ইসলাম, সিনিয়র রিপোর্টার শাহজাহান আকন্দ শুভ, তাওহীদুল ইসলাম ও মো. আরিফুজ্জামান মামুন। আরও ছিলেন আমাদের সময়ের অনলাইন ইনচার্জ মঈন উদ্দিন বকুল, শিল্প সম্পাদক রাজিব রায়, এডিটোরিয়াল বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর এমিলিয়া খানম, বিজ্ঞাপন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান রাশিদুল হাসান, অ্যাকাউন্টস বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মোহাম্মদ নুরুল আবছার, এইচআর অ্যাডমিনের মোহাম্মদ মুসা, বিনোদন বিভাগের তারেক আনন্দ প্রমুখ।