আজও সরকারি সহযোগিতা পাননি শহীদ ময়নুলের স্ত্রী

সামিয়ান হাসান, বিয়ানীবাজার (সিলেট)
২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
আজও সরকারি সহযোগিতা পাননি শহীদ ময়নুলের স্ত্রী

স্ত্রী আর দুই সন্তান নিয়ে ছিল ময়নুল ইসলামের সংসার। ফল ব্যবসা করে ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারের চাহিদা পূরণ করতেন। অভাব-অনটনের মধ্যেও সুখ ছিল। স্বপ্ন দেখতেন বড় হয়ে একদিন তার মেয়ে চিকিৎসক আর ছেলে হবে বড় আলেম। তখন পরিবারে থাকবে না অভাব। কিন্তু ময়নুলের সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। একটি বুলেট তার স্বপ্ন ভাঙার পাশাপাশি স্ত্রী-সন্তানদের করে দিল অসহায়।

এদিকে স্বামীকে হারিয়ে ছেলেমেয়ে নিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে শিরিন বেগমের। স্বামী শহীদ হওয়ার চার মাস পার হলেও সরকারি কোনো সহযোগিতা পাননি। তাই ছেলেমেয়ের পড়ালেখাসহ সংসার চালানো নিয়েও পড়েছেন অনিশ্চয়তায়। বাসাভাড়া, সন্তানদের পড়ালেখার খরচ, পবিরাবের চাহিদা পূরণে তিনি দিশাহারা হয়ে পড়ছেন। স্থানীয় কিছু হৃদয়বান ব্যক্তির সহযোগিতায় চার মাস কোনোরকমে পার করলেও ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো কূলকিনারা পাচ্ছেন না।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সিলেটের বিয়ানীবাজার পিএইচজি উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে গুলিবিদ্ধ হন ময়নুল। আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন বিয়ানীবাজরার সরকারি পৌর গোরস্তানে বাবার কবরের পাশে ময়নুলের দাফন সম্পন্ন করা হয়।

ময়নুলের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মোল্লাপাড়া হলেও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বিয়ানীবাজার পৌর শহরের নয়াগ্রামে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। উপজেলা শহরে ফলের ব্যবসা করতেন। দুই সন্তানের মধ্যে ফাতিমা ষষ্ঠ ও শিহাব পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। তাদের পড়াশোনা এখন অনিশ্চিত।

শহীদ ময়নুলের স্ত্রী শিরিন বলেন, নিজস্ব জমি না থাকায় ভাড়া বাসায় থাকতে হয়। সরকার একটু জমি ও একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিলে আমার এতিম ছেলেমেয়েদের একটু মাথাগোঁজার ঠাঁই হতো। সন্তানদের ভবিষ্যৎ আর স্বামী হত্যায় প্রকৃত দোষীদের বিচার ছাড়া আমার আর কোনো চাওয়া নেই।