মূল ষড়যন্ত্রকারীরা বাইরেই থেকে গেছে
মাহবুব উল্লাহ, অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেছেন, বিডিআর বিদ্রোহের পর শত শত বিডিআর সদস্যকে আটক করা হলো। কিন্তু যারা আসল ষড়যন্ত্রকারী, তারা বাইরেই থেকে গেছে। তিনি বলেন, আসল ষড়যন্ত্রকারীদের না ধরে নিরীহ সৈনিকদের, যারা হয়তো অনেকে ভুল পথে পরিচালিত হয়েছেন, আবার অনেকে হয়তো নির্দোষও, তাদের গ্রেপ্তার করা হলো। আমি বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানাব, সত্যিকারের ষড়যন্ত্রকারী যারা, তাদেরও যেন বিচারের আওতায় আনা হয়। পাশাপাশি এও বলব, ওই ঘটনার পর ১৫ বছর হয়ে গেছে। বিচারাধীন অবস্থায় জেলখানায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে, আর কেউ কেউ হয়তো ছাড়া পেয়েছেন সাজা মওকুফের পর। এখনও ৮ শতাধিক সৈনিক জেলে আটক আছেন। আমার মনে হয়, একজন মানুষ হিসেবে এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ঘটনাটা দেখলে এর সমাধান খুব একটা কঠিন না।
পিলখানা হত্যাকা- পুনঃতদন্তের মাধ্যমে শহীদ সেনা পরিবারের সদস্যদের পুনর্বাসনসহ প্রহসনের বিচারে অভিযুক্ত ও চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের সুযোগ-সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল এবং জেলবন্দি বিডিআর সদস্যদের মুক্তির দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত আলোচনাসভায় ড. মাহবুব উল্লাহ এসব কথা বলেন। ‘৬৪ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর-২০০৯’-এর ব্যানারে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়।
অনুষ্ঠানে ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, এই যে যারা ২০০৯ সাল থেকে আজকে পর্যন্ত কারাগারে আছেন তারা যদি দোষী হয়ে থাকেন তাদের শাস্তি ভোগ করা হয়ে গেছে। আর যদি নির্দোষ হয়ে থাকেন, তাহলে তো তাদের প্রতি চরম অন্যায় করা হয়েছে। তাদের সন্তানদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে, তাদের পরিবারের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। তাই আমার পরামর্শ হচ্ছে- যারা দীর্ঘ কারাবাস করছেন তাদের মুক্ত করে দেওয়া হোক। এ জন্য আইনেরও সমর্থন আছে। আইন অনুযায়ী সরকার ও রাষ্ট্র যে কোনো বন্দিকে মুক্ত করে দিতে পারে, শর্ত সাপেক্ষে ও শর্তহীনভাবেও।
আরও পড়ুন:
একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রাজনৈতিক এই বিশ্লেষক বলেন, আমি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সৈনিক যারা আছেন, তাদের দিকটা যেন দেখেন এবং তাদের পরিবারের কষ্টের দিকটা যেন উপলব্ধি করেন এবং সেই অনুযায়ী মানবিকভাবে সিদ্ধান্ত নেন। এত বছর পর তাদের প্রতি যদি একটু দয়ামায়া দেখান তাতে মানুষ অসন্তুষ্ট হবে না বরং সন্তুষ্টই হবে।
চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য মো. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মেজর (অব) ইমরান, কর্নেল (অব) আব্দুল হকসহ আরও অনেক বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
