ট্রাস্টের টাকা আত্মসাৎ করেননি খালেদা জিয়া

খালাস চেয়ে লিভ টু আপিলের আদেশ আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
১১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
ট্রাস্টের টাকা আত্মসাৎ করেননি খালেদা জিয়া

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা আত্মসাৎ করেননি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বরং ওই টাকা ট্রাস্টের ফান্ডেই আছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আসিফ হাসান। যদিও এই দুর্নীতির মামলায়ই তাকে কারাদ- ভোগ করতে হয়েছিল। গতকাল রবিবার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে করা লিভ টু আপিলের শুনানি হয়। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আগামী সোমবার আদেশ দেওয়ার জন্য দিন ধার্য করেছেন।

এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।

দুদকের আইনজীবী মো. আসিফ হাসান আদালতকে জানান, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা আত্মসাৎ হয়নি, বরং ফান্ডটি স্থানান্তরিত হয়েছে এবং সুদসহ টাকা অ্যাকাউন্টে জমা আছে। তিনি মামলার ডকুমেন্ট থেকে খালেদা জিয়ার অভিযোগের সঙ্গে সম্পর্কিত না এমন উপাদান পেশ করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, বিচারিক আদালত একতরফা রায় দিয়েছে এবং হাইকোর্টের সাজা বাড়ানোর সিদ্ধান্তে আইনি ত্রুটি রয়েছে। কায়সার কামাল বলেন, ২০১৮ সালে রাজনৈতিক

প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে প্রথমে ৫ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল। হাইকোর্ট তা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন। এ সময় কায়সার কামাল হাইকোর্টের ওই রায়ের অংশবিশেষ উপস্থাপন করেন। অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান খালেদা জিয়ার ৩৪২ ধারায় দেওয়া বক্তব্য তুলে ধরে জানান, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল-সংক্রান্ত অনুদান গ্রহণ বা বিতরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। ওই দিনই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সাথে বৈঠকে খালেদা জিয়ার দ- মওকুফের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং পরের দিন গেজেট প্রকাশ করা হয়। এরপর ৩ নভেম্বর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা হাইকোর্টে আবেদন করেন এবং তাদের আবেদন মঞ্জুর করে উচ্চ আদালত পেপারবুক প্রস্তুতের অনুমতি দেন।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, রাষ্ট্রপতি দ- মওকুফ করেছেন, তবে খালেদা জিয়া ক্ষমার প্রতি বিশ্বাসী নন। তিনি দাবি করেন, তিনি অপরাধ করেননি এবং ক্ষমাও চাননি। আইনি পথে হেঁটে তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চান।

২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ খালেদা জিয়াকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাত বছরের সশ্রম কারাদ- এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা দেন। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদ- হয়। মামলার অপর তিন আসামি হারিছ চৌধুরী, জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং মনিরুল ইসলাম খানও একই সাজা পান। ২০১০ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে।