হাসিনাকে ফেরত আনতে জারি হচ্ছে রেড নোটিশ : আইন উপদেষ্টা
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাসহ জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় জড়িতদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। গতকাল রবিবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ভবন সংস্কারকাজ দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
আসিফ নজরুল বলেন, যে খুনি গোষ্ঠী জুলাই-আগস্ট মাসে গণহত্যা চালিয়েছে, যারা পালিয়ে আছে, তাদের ধরার জন্য আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করতে যাচ্ছি। এটি খুব দ্রুত হবে। তারা (খুনিরা) যেখানেই থাকুক না কেন, আমরা তাদের গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে নিয়ে আসার জন্য সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেব এবং চেষ্টা করব।
আইন উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ব জনমতকে বিভ্রান্ত করতে নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আবেদন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আইসিসিতে দেওয়া আওয়ামী লীগের অভিযোগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমলে নিচ্ছে না বলে জানান আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, দেশের মর্যাদা ক্ষুণœ করতেই সরকারের বিরুদ্ধে আইসিসিতে অভিযোগ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। অভিযোগটি কোনোভাবেই গৃহীত হওয়ার কারণ নেই। নিজেদের আত্মরক্ষা ও মিথ্যা প্রচার চালানোর উপায় হিসেবে এ অভিযোগ করেছে।
দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, তদন্ত প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়ে আছে। সে ক্ষেত্রে এ প্রক্রিয়া শেষে সরকার যখনই বলবে, তখনই আমরা দল হিসেবে তাদের বিচারের মুখোমুখি করার জন্য প্রস্তুত করতে পারব।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুবনাল গঠন করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। এখন ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো দমন-পীড়নকে ‘গণহত্যা’ বিবেচনা করে এ আদালতে তা বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে সারাদেশে ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অর্ধশতাধিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে জমা পড়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবং আরেক মামলায় তার পরিবারের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে সেখানেই আছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তার দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কয়েকজন গ্রেপ্তার হলেও অধিকাংশই এখনও আত্মগোপনে রয়েছেন।
আরও পড়ুন:
পাল্টে যেতে পারে আন্দোলনের ধরন