‘ওয়াশিংটন সুন্দর’ নামের পেছনের গল্প
নিউজিল্যান্ড-ভারতের পুনে টেস্টের প্রথম দিন গেল আজ। কিউইদের আজ ২৫৯ রানেই গুটিয়ে দিয়েছে স্বাগতিকরা। যার মূল কৃতিত্ব তামিলনাড়ুর স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দরের। সাড়ে তিন বছর পর টেস্টে ফিরেই ৭ উইকেট নিলেন তিনি। লাল বলের ক্রিকেটে এই প্রথম ৭ উইকেট পেলেন সুন্দর।
দুর্দান্ত বোলিংয়ের দিনে আলোচনায় ওয়াশিংটন সুন্দরের নামও। সাধারণত ভারতে এ ধরনের নাম রাখা হয় না। এই নামের পেছনে আছে ওয়াশিংটনের বাবার গল্প। তার এক শুভাকাঙ্ক্ষীর প্রতি ভক্তিস্বরূপ এই নাম রেখেছেন ওয়াশিংটনের বাবা সুন্দর।
খেলোয়াড়ি জীবনে তামিলনাড়ুর রঞ্জি দলে সুযোগ পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সুন্দর। তার তীব্র সংগ্রামের সেই দিনগুলোতে সাহায্য করেছেন সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়া এক ক্রীড়া উৎসাহী বয়স্ক ব্যক্তি। সেই ব্যক্তির নাম ছিল পিডি ওয়াশিংটন। সুন্দরের খেলায় তিনি যথেষ্ট উৎসাহ দিয়েছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরের পারিবারিক অবস্থা অত ভালো ছিল না। তাই ওয়াশিংটন তাকে ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম কিনে দেওয়া ও পড়ালেখা করতে সাহায্য করেছেন।
সুন্দর বলেন, ‘তিনি (পিডি ওয়াশিংটন) আমার খেলা দেখতে আসতেন সবসময় এবং আমাকে উৎসাহ দিতেন। যেহেতু আমি খুব ভালো কোনো জায়গা থেকে উঠে আসিনি, তাই তিনি এটা নিশ্চিত করতেন যে আমি যেন ক্রিকেটা চালিয়ে যাই এবং যাবতীয় সরঞ্জাম কিনে দিতেন। যেভাবেই পারতেন, সাহায্য করতেন আমাকে। তিনি ক্রিকেটের প্রতি এতটাই অনুরাগী ছিলেন যে সবসময় চেয়েছেন আমি যেন আমার স্বপ্নের দিকে ধাবিত হই।’
১৯৯ সালে পিডি ওয়াশিংটন মারা যান। তার কয়েক মাস পরেই সুন্দরের স্ত্রী একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সুন্দর বলেন, ‘সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় আমার স্ত্রী বেশ জটিলতার মুখোমুখি হয়েছিলেন। যদিও শিশুটি বেঁচে যায়। হিন্দু রীতি অনুযায়ী, আমি তার কানে ভগবানের নাম ‘শ্রীনিবাসন’ ফিসফিস করে বললাম। কিন্তু আমি তার নাম ওয়াশিংটন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। যে লোকটি আমার জন্য অনেক কিছু করেছেন, তার স্মরণেই রেখেছি।’