লোকসান কমাতে ২ রুটে কমছে ফ্লাইট

গোলাম সাত্তার রনি
২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
লোকসান কমাতে ২ রুটে কমছে ফ্লাইট

আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চালিয়ে বিপুল লোকসান গুনতে হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে। আন্তর্জাতিক ২৩টি গন্তব্যের মধ্যে ১১ রুটে লাভ এবং ১২ রুটে লোকসান দিচ্ছে সংস্থাটি। লোকসান কমাতে লাভজনক রুটে ফ্লাইট বৃদ্ধি এবং লোকসানি রুটে কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে জাপানের নারিতা ও যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারের একটি করে ফ্লাইট কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যদিকে, যাত্রীর চাপ থাকায় লাভজনক ঢাকা-টরন্টো রুটে আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে আরেকটি ফ্লাইট বাড়ানো হচ্ছে।

বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম আমাদের সময়কে জানান, যাত্রী সংকটে জাপানের নারিতা ও যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ দুই রুটে একটি করে ফ্লাইট কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি রুটগুলো লাভজনক করতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে ঢাকা-টরন্টো রুটে যাত্রীদের ভালো সাড়া পাওয়ায় সপ্তাহে একটি ফ্লাইট বাড়ানো হচ্ছে।

বিমানের তথ্যমতে, আন্তর্জাতিক ২৩টি রুটের মধ্যে লাভজনক ১১টি রুট হলো ঢাকা থেকে লন্ডন, টরেন্টো, দুবাই, জেদ্দা, মদিনা, রিয়াদ, দাম্মাম, ব্যাংকক, কাঠমা-ু, কুয়ালালামপুর ও সিঙ্গাপুর। আর বেশি লোকসানের ৬টি রুট হচ্ছে ম্যানচেস্টার, কুয়েত, দিল্লি, কলকাতা, গুয়াংজু ও নারিতা। এ ছাড়া এক্সেস ব্যাগেজের ওজন সমন্বয় করে চারটি রুট লাভ আনার চেষ্টা হচ্ছে। সেগুলো হলো- আবুধাবি, মাসকাট, দোহা ও শারজাহ। এর মধ্যে ঢাকা-ম্যানচেস্টার

রুটে প্রতিটি ফ্লাইটে লোকসান গুনতে হচ্ছে ১ কোটি ১০ লাখ। গত এক বছর এই রুটে বিমান লোকসান দিয়েছে ১৮৭ কোটি টাকা। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি দুই মাসে লোকসান দাঁড়িয়েছে ১৭২ কোটি টাকা। নারিতা রুটেও ফ্লাইটপ্রতি লোকসান গুনতে হচ্ছে প্রায় কোটি টাকার মতো। যদিও রোম ও চেন্নাই রুটের বিষয় কোনো তথ্য দেয়নি সংস্থাটি। সে হিসাবে অর্ধেকের বেশি রুটে ফ্লাইট চালিয়ে লাভের মুখ দেখছে না বিমান। এ ছাড়া বিমানের বার্ষিক লাভ-ক্ষতির হিসাব নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, জাপানের নারিতা ও যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার রুটে বর্তমানে সপ্তাহে তিনটি করে ফ্লাইট চলে। লোকসান কমাতে ৩১ অক্টোবর থেকে অর্থাৎ শীতকালীন সূচিতে সপ্তাহে কেবল দুটি করে ফ্লাইট চলবে। এ ছাড়া যাত্রী সংকটে ভারতের ফ্লাইটও কমানো হয়েছে।

বিমানের দাবি, কয়েক বছর ধরে তারা লাভে আছে। গত অর্থবছরে (২০২২-২০২৩) ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে। এই বছরও (২০২৩-২০২৪) ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় হবে। শুধু কার্গো থেকেই ১২শ কোটি টাকা লাভ হবে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।

বিমানের তথ্যানুযায়ী, সংস্থাটিকে লাভজনক করতে অনটাইম পারফরম্যান্স, যাত্রীপ্রতি রাজস্ব বৃদ্ধি ও ব্যয় সংকোচনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি বোয়িং কোম্পানি থেকে নেওয়া নতুন উড়োজাহাজের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। এ ছাড়া যাত্রীসেবার মানেও দৃশ্যমান উন্নয়ন করা হয়েছে বলে দাবি সংস্থাটির। তা ছাড়া দোহা, আবুধাবি, শারজাহ ও মাসকাট রুট লাভজনক করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর বাইরে নতুন আন্তর্জাতিক গন্তব্যের মধ্যে মালে, কুনমিং, সিডনি, জাকার্তা, সিউল, উহান ও বাহরাইন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নিউইয়র্কে পুনরায় ফ্লাইট পরিচালনার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আর অভ্যন্তরীণ রুটে নতুন ফ্লাইটের পরিকল্পনায় উল্লেখযোগ্য গন্তব্যগুলো হলো- চট্টগ্রাম-যশোর, চট্টগ্রাম-সিলেট এবং ঢাকা-যশোর-কক্সবাজার এবং ঢাকা-বরিশাল-কক্সবাজার।