অতিরিক্ত ৩ হাজার কোটি টাকা চায় ঠিকাদার

গোলাম সাত্তার রনি
২২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
অতিরিক্ত ৩ হাজার কোটি টাকা চায় ঠিকাদার

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণকাজ ৯৮.৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই টার্মিনালটি চালু করার লক্ষ্যে কাজ করছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এমন সময়ে নির্মাণকাজ বাবদ অতিরিক্ত ৩ হাজার কোটি টাকা দাবি করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত কাজ হয়েছে উল্লেখ করে এ টাকা দাবি করে তারা বেবিচককে চিঠি দিয়েছে। তবে চুক্তির বাইরে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আদৌ বেশি কাজ করেছে কিনা বা করে থাকলেও কী কাজ করেছে, তা খতিয়ে দেখতে নিরীক্ষা কমিটি গঠন করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবির যৌক্তিকতা খতিয়ে দেখতে গত ৮ অক্টোবর আট সদস্যের একটি নিরীক্ষা কমিটি গঠন করা হয়েছে। বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলীকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। সদস্য হিসেবে আছেন থার্ড টার্মিনালের প্রকল্প পরিচালক। এ ছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, কনসালটেন্ট ও বুয়েটের দুজন করে প্রতিনিধি রাখা হয়েছে কমিটিতে। সূত্রমতে, এই কমিটি থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজের ভেরিয়েশন অর্ডার, ভ্যালু ইঞ্জিনিয়ারিংসহ অন্যান্য বিষয় পর্যালোচনা করবে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ ও তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৭ সালের অক্টোবরে অনুমোদিত হয়। এটি বাস্তবায়নে খরচ হচ্ছে ২১ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা। প্রকল্পের সিংহভাগ অর্থ ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার আয়তনের টার্মিনালটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে জাপানের মিৎসুবিশি ও ফুজিতা করপোরেশন এবং কোরিয়ার স্যামসাংয়ের যৌথ উদ্যোগে গঠিত ‘অ্যাভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম’। আগামী বছরের শেষ দিকে টার্মিনালটি চালুর করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বেবিচকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অ্যাভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়ামের আবেদনটি জাস্টিফাই করা হচ্ছে। নিরীক্ষা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপকরা রয়েছেন। যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নকশার মধ্যে থাকা কাজ করেছে। প্রয়োজনে কিছু কাজ পরিবর্তন হয়েছে। তারা ওয়ার্ক অর্ডারের ভেতরেই কাজ পরিবর্তন করে অন্য কাজ করেছে। সেটার জন্য ৩ হাজার কোটি টাকা চেয়েছে। সেই কাজের মূল্য নির্ধারণ করবে এই কমিটি। এক্ষেত্রে দেশের স্বার্থ আগে দেখা হবে। ঠিকাদারের দাবি যুক্তিসঙ্গত না হলে আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী শহীদুল আফরোজ বলেন, ঠিকাদার টাকা দাবি করেছে। তারা কিছু অতিরিক্ত কাজ করেছে বলে আমাদের জানিয়েছে। আসলে কতটুকু কাজ করেছে বা আদৌ করেছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখতেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে কমিটি দুটি সভা করবে। আমরা দেখব দেশের স্বার্থ রক্ষা করে কতটুকু কমানো যায়। কাজের বাইরে একটি টাকাও দেওয়া হবে না।