মাহমুদউল্লাহর বিদায়ী ম্যাচে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
১৭ বছরের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ইতি ঘটলো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। তার বিদায়ী ম্যাচটি রাঙাতে চাইছিল বাংলাদেশ। তবে হতাশার ভারত সফরে আরও একবার হতাশ হয়েই মাঠ ছাড়তে হলো। টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতেও সবকটি ম্যাচ হেরে হোয়াইটওয়াশ হলো নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করে স্কোরবোর্ডে ২৯৭ রানের পর্বতপ্রমাণ সংগ্রহ তোলে ভারত। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রান তুলে বাংলাদেশ। টাইগারদের হার দেখতে হয় ১৩৩ রানের বিশাল ব্যবধানে। রানের হিসাবে এটি ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ জয়।
২৯৮ রানের বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে একদম প্রথম বলেই আউট হন পারভেজ হোসেন ইমন। এরপর শুরুটা ভালো করলেও তানজিদ হাসান তামিম ১২ বলে ১৫ ও নাজমুল হোসেন শান্ত ১১ বলে ১৪ রান করে আউট হন। বাংলাদেশের হয়ে ইতিবাচক ব্যাটিং করেন লিটন দাস। ওপেনিং থেকে চারে নেমে আজ ২৫ বলে ৪২ রান করেন তিনি। ৪২ বলে ৬৩ রান করে অপরাজিত থাকেন তাওহিদ হৃদয়। শেষ ম্যাচ খেলতে নামা মাহমুদউল্লাহ ৯ বলে ৮ রান করে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দেন। শেষ পর্যন্ত ১৬৪ রানে থামে বাংলাদেশ।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিল ভারত। প্রথম দুই ওভারে ২৩ রান দেওয়ার পর তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন তানজিম হাসান সাকিব। তার বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অভিষেক শর্মা। এরপর আরেক ওপেনার সাঞ্জু স্যামসনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন সূর্যকুমার। শুরু থেকেই এই দুই ব্যাটার বেদম পেটাতে থাকেন বাংলাদেশের বোলারদের। পেসার-স্পিনার কেউই নিস্তার পাননি তাদের হাতে। এর মধ্যে পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে তানজিম হাসান সাকিবের করা এক ওভারেই তুলে নেন ১৯ রান। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ভারত ওই ১ উইকেট হারিয়েই ৮২ রান করে ভারত।
দলীয় শতরান পূর্ণ করে ৪৩ বলে। ২২ বলে নিজের ফিফটি পূর্ণ করেন স্যামসন। পরে ৪০ বলে সেঞ্চুরি আদায় করে নেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে যা ভারতের দ্বিতীয় দ্রুততম। ২৩ বলে ফিফটি করেন সূর্যকুমার যাদব। এই দুজনের ১৭২ রানের জুটি থামে ১৩ ওভার ৪ বলে। ৪৭ বলে ১১১ রান করে বিদায় নেন স্যামসন। পরের ওভারে বিদায় নেন সূর্যকুমারও। ৩৫ বলে ৭৫ রান করেন তিনি। স্যামসন-সূর্যকুমারের বিদায়ের পর তাণ্ডব শুরু করেন হার্দিক পান্ডিয়া ও রিয়ান পরাগ। একসঙ্গে মাত্র ২৫ বল খেলেই ৭০ রান যোগ করেন তারা। পরাগ ১৩ বলে ৩৪ ও পান্ডিয়া ১৮ বলে ৪৭ রান করে ইনিংসের শেষের দিকে আউট হন। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৯৭ রান করে থামে ভারত।
টেস্ট খেলুড়ে ১২ দেশের মধ্যে এই স্কোরই টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ। এর আগে সর্বোচ্চ ২৭৮ রান করেছিল আফগানিস্তান। ২০১৯ সালে দেরাদুনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এই রান করেছিল তারা। সব ধরনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ আমলে নিলে আজকের ভারতের ইনিংস অবশ্য দুই নম্বরে থাকবে। টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এখনো নেপালের। গত বছরের সেপ্টেম্বরে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রান করেছিল পাহাড়ঘেরা দেশটি। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের বিপক্ষে আজকের ইনিংসটি ভারতের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান। এর আগে ২০১৭ সালে শ্রীলংকার বিপক্ষে ২৬০ রান করেছিল ভারত।
বাংলাদেশের কোনো বোলারেরই ইকোনমি দশের নিচে নেই। ২ ওভারে ৪৬ রান দিয়েছেন এক ওভারে ৫টি ছক্কা হজম করা রিশাদ হোসেন। ৪ ওভার বল করে সর্বোচ্চ ৬৬ রান দিয়েছেন ৩ উইকেট নেওয়া তানজিম হাসান সাকিব। বিদায়ী ম্যাচে এক উইকেট নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২ ওভারে ২৬ রান দিয়েছেন তিনি।