ডিজিএফআই দেশ ছাড়তে বাধ্য করে
গণমাধ্যমকে এসকে সিনহা
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রেখেছিলেন এবং ডিজিএফআইয়ের মাধ্যমে দেশত্যাগে বাধ্য করেন। ডিজিএফআইয়ের তৎকালীন প্রধান সাইফুল আবেদীন মধ্যরাতে আমাকে বিরক্ত করতেন এবং পদত্যাগ করে দেশছাড়ার জন্য চাপ দিতেন। শেখ হাসিনার নির্দেশ উপেক্ষা করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলেন বলেই তাকে দেশছাড়তে বাধ্য করা হয়।
সাত বছর আগে দেশ ছেড়ে যাওয়া বিচারপতি সিনহা বলেছেন, বর্তমান সরকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা যে মিথ্যা ও বানোয়াট তা প্রমাণের জন্য তিনি দেশে ফিরতে প্রস্তুত। বিদেশ থেকে দেশের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশে ফিরব। এখন শুধু গ্রিন সিগন্যালের জন্য অপেক্ষা করছি।
আরও পড়ুন:
একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী
২০১৫ সালের জানুয়ারিতে প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হওয়ার পর নিম্নআদালত যাতে বড় বড় চোরাকারবারি ও দুর্নীতিবাজরা জামিন না পায় সে উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকেই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয় জানিয়ে সিনহা বলেন, তিনি নির্বাহী বিভাগের পরিবর্তে নিম্নআদালত নিয়ন্ত্রণে বিচারকদের ক্ষমতা সুপ্রিমকোর্টের হাতে রেখে শৃঙ্খলা বিধিমালা প্রণয়নে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন এবং ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ষোড়শ সংশোধনীর মামলার রায় সরকারের অনুকূলে দিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর এই দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছায়।
বিচরপতি সিনহা বলেন, বাংলাদেশে আমার শেষ দিনগুলো ছিল খুবই ভয়ঙ্কর, যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমি প্রধান বিচারপতি ছিলাম, অথচ আমাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। আমার ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। আমার বাড়ির চারপাশে গোয়েন্দা পাহারা বসানো হয়। আমার একজন স্টাফ বাসায় ঢুকতে গেলে তাকে পেটানো হয়। তিনি বলেন, সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতিরা সরকারের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে আদালতে আমার সঙ্গে বসতে অস্বীকৃতি জানান এবং বলেন, হাইকোর্টের বিচারপতিরা তাকে সহযোগিতা করবেন না। এতে আমি প্রচণ্ড মানসিক চাপে পড়ি। তখন আমি ভেবেছিলাম, আমার দেশে থাকার কোনো অধিকার নেই।
আরও পড়ুন:
পাল্টে যেতে পারে আন্দোলনের ধরন