বাফুফের কাছে ৭ দফা দাবি ফুটবলারদের

স্পোর্টস ডেস্ক
১৭ আগস্ট ২০২৪, ১৯:২২
শেয়ার :
বাফুফের কাছে ৭ দফা দাবি ফুটবলারদের

ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। এরপরই দেশজুড়ে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। এবার বাংলাদেশ ফুটবলেও এর প্রভাব পড়েছে।

অন্তবর্তী সরকার আসার আগামী বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে অংশ নেবে না তিনটি ক্লাব। যদিও ক্লাবগুলো বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানায়নি। তবে ইতোমধ্যেই ক্লাব থেকে ফুটবলারদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এরই প্রেক্ষিতে আজ শনিবার প্রিমিয়ার লিগে দল না পাওয়ার শঙ্কায় থাকা ফুটবলাররা বাফুফে ভবনে ৭ দফা দাবি নিয়ে হাজির হয়েছেন।

তিনটি ক্লাব একসঙ্গে লিগে অংশ না নেওয়াতে জাতীয় ফুটবলারদের পাশাপাশি বিপাকে পড়তে যাচ্ছেন দেশের শীর্ষ লিগে খেলা ফুটবলাররা। কারণ প্রিমিয়ার লিগ হচ্ছে খেলোয়াড়দের রুটি-রুজির প্রধান উৎস। একসঙ্গে এতগুলো ক্লাব অংশ না নিলে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির মুখে পড়বেন দেশের ফুটবলাররা।

আসন্ন মৌসুমে চুক্তি সম্পন্ন করেছেন প্রত্যাহার করা ক্লাবগুলোর প্রায় অনেক ফুটবলার। এখন ওই ক্লাবগুলো লিগে অংশ না নিলে প্রায় দেড়শ থেকে দুইশত ফুটবলারদের ভবিষ্যৎ হয়ে পড়বে অনিশ্চিত! এমতাবস্থায় নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে এক ছাদের তলায় এসে দাঁড়িয়েছেন ফুটবলাররা। স্মারকলিপি তুলে দেন সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষারের হাতে । পরে গণমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলেন।

এদিন ফুটবলারদের দেওয়া ৭ দফা দাবিগুলো হলো- অনতিবিলম্বে দলবদল পেছানো নিশ্চিত করতে হবে, প্রত্যেক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে, দায়সারা লিগ চালানো যাবে না, যে দলগুলো খেলবে না বলছে ওই দলের খেলোয়াড়দের দায়ভার কে নেবে, এ বছর বিদেশি খেলোয়াড় ছাড়া লিগ চালাতে হবে, যে সকল পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ইতোপূর্বে ক্লাবের স্পনসর ছিল তাদের পুনরায় ক্লাবের স্পনসর করার ব্যবস্থা করতে হবে এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সঙ্গে সকল খেলোয়াড়দের একটি বৈঠক আগামীকালের মধ্যে ব্যবস্থা করতে হবে।

পরে বাফুফে ভবনে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে জাতীয় দল এবং আবাহনীর ফুটবলার রেজাউল করিম রেজা বলেন, ‘আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি আমাদের কিছু দাবি জানাতে। হঠাৎ করেই কিছু ক্লাব এবারের মৌসুমে দল করবে না বলে জানিয়েছে। এতে করে আমাদের অনেক ফুটবলারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়ে গেছে। প্রায় ২০০ জনের ওপর রানিং ফুটবলার কোনো দল পাচ্ছে না।‘

‘আমরা চাই ফুটবল ফেডারেশন এই বিষয়ে চেষ্টা করুক। দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে তাদের খেলানোর বিষয়ে রাজি করাক। এছাড়া আমরা বর্তমান সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে বসতে চাই। বাফুফের সাধারণ সম্পাদককে জানিয়েছি যেন আগামীকালের মধ্যে আমাদের বসার ব্যবস্থা করা হয়। ‘

চট্টগ্রাম আবাহনীর জার্সিতে খেলা ডিফেন্ডার রায়হান হাসান বলেন, ‘দিনকে দিন প্রিমিয়ার লিগে দলের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ৫ বছর আগে ১৩ দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রিমিয়ার লিগ। এরপর প্রতি বছর দল কমতে কমতে সবশেষ লিগে অংশ নেয় ১০টি দল। এখন যদি সেই সংখ্যা কমে ৬/৭ তে দাঁড়ায় তাতে কিভাবে খেলব আমরা। এমন দায়সারা লিগে আমরা অংশ নিতে চাই না। আমরা চাই সবার অংশগ্রহণ। ফুটবল বাঁচাতে সবার এগিয়ে আসা উচিত। কারণ আমরা ফুটবলার এর বাইরে আমাদের কোনো পরিচয় নেই। এটাই আমাদের রুটি-রুজি।’

এ নিয়ে তুষার বলেন, ‘ফিফার উইন্ডো যেহেতু আন্তর্জাতিকভাবে সংযুক্ত, তো আমাদের জন্য তারা বিশেষ কিছু করতে পারবে না। তারা আমাদেরকে না-সূচক ইমেইল দেয়। যার প্রেক্ষিতে…আমরা সব ক্লাবকেও জানিয়ে দিয়েছিলাম, এটা সম্ভব নয়। পরের দিনই আমরা চিঠি দেই যে, আমরা এই উইন্ডো টোটাল ১২ সপ্তাহের করতে চাচ্ছি। ১১ সপ্তাহ তিন দিন হয়েছে, আমরা ১২ সপ্তাহেই করতে যাচ্ছি, কিন্তু আরও চার দিন অতিরিক্ত দেওয়া হোক...এর প্রেক্ষিতে ওরা তিন দিন বাড়িয়ে ২২ অগাস্ট পর্যন্ত বাড়িয়ে দলবদলের সুযোগ দিয়েছে। ’

‘আমরা চাই সবগুলো ক্লাব খেলুক। আমরা প্রফেশনাল লিগ কমিটির সাথে কথা বলে অতি দ্রুত বসব, এরপর জানাব। ক্লাবগুলোর আরেকটি দাবি ছিল, যে স্পন্সররা ছিল, তারা যেন পৃষ্ঠপোষকতা করে, আমরা তাদের সাথেও কথা। গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা মহোদয়ের সাথেও আমরা ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করেছি, আমরা চাচ্ছি, তিনি যেন আমাদের কালকের মধ্যেই শিডিউল (সময়) দেন, যাতে আমরা ক্লাব ও খেলোয়াড়দের প্রতিনিধি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে পারি।’