সামনে স্পেন /
ফ্রান্সের জন্য মঞ্চটা প্রতিশোধেরও
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের আসরে দারুণ ছন্দে আছে স্পেন। একমাত্র দল হিসেবে সবকটি ম্যাচ জিতেছেন লা রোহারা। আজ মিউনিখে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে স্প্যানিয়ার্ডদের প্রতিপক্ষ কিলিয়ান এমবাপ্পের ফ্রান্স। টুর্নামেন্টের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠতে পারে এই ম্যাচ।
স্পেন অবশ্য আরও একটা বড় ম্যাচ খেলে এখানে এসেছে। টুর্নামেন্টের ফেভারিট ও স্বাগতিক জার্মানিকে লা রোহারাই বিদায় করেছে। সেই তুলনায় অনেকটাই ধুঁকছে ফ্রান্স। এ পর্যন্ত টুর্নামেন্টের পাঁচ ম্যাচের কেবল একটিতেই গোল পেয়েছেন দলটির ফুটবলাররা। উন্মুক্ত খেলায় ৪৮০ মিনিট ধরে গোল নেই তাদের পায়ে। তবু ভাগ্যক্রমে ফ্রান্স উঠেছে সেমিফাইনালে।
টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দল স্পেন। জার্মানির মতো তিনবারের চ্যাম্পিয়ন তারাও। তাদের শেষ দুটি ট্রফি এসেছে এই শতাব্দীতেই। ২০০৮ ও ২০১২ সালে ব্যাক টু ব্যাক ট্রফি জেতে তারা। ফ্রান্স অবশ্য ইউরো জিততে পারছে না বহু বছর হবে। ২০১৬ সালে ফাইনালে উঠেও হারতে হয়েছিল পর্তুগালের কাছে। এবার দলটি শেষ চারের টিকিট কাটলেও দলটির ওপর ভরসা রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে।
দলটির সবচেয়ে বড় আশার নাম এমবাপ্পে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেরা ছন্দে আসতে পারেননি রিয়াল মাদ্রিদ সুপারস্টার। সেই তুলনায় দারুণ ছন্দে আছেন স্পেনের ফুটবলাররা। লামিনে ইয়ামাল, দানি ওলমোরা কাঁপিয়ে দিচ্ছেন এবারের আসর। দারুণ ফর্মে ছিলেন পেদ্রিও। কিন্তু চোটের কারণে আসর থেকে ছিটকে গেছেন তিনি। কোয়ার্টার ফাইনালে চোটে পড়েন পেদ্রি। সেই ম্যাচে আবার লাল কার্ড দেখেন ডিফেন্ডার ড্যানিয়েল কারভাহাল। এই দুজনের অনুপস্থিতি স্পেনের দুশ্চিন্তার বড় কারণ।
স্প্যানিয়ার্ডরা অবশ্য আশাবাদী, কারভাহাল-পেদ্রির অভাব পুষিয়ে দেওয়ার মতো ফুটবলারের অভাব নেই দলে। এই দুজনকে ছাড়াও স্পেন ভয়ঙ্কর দল। তবে লা রোহাদের ভয় পায় না ফ্রান্স। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি ফরওয়ার্ড অ্যান্তনিও গ্রিজম্যান বলেছেন, ‘স্পেন অবশ্যই অনেক ভালো দল। কিন্তু তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কোনো দলকে নিয়েই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখি এবং নিজেদের সবটুকু দিয়ে যাব ফাইনালে ওঠার জন্য।’
গ্রিজম্যানের চোখ এখন ফাইনালে। তার ভাষায়, ‘আমাদের হাতে একটি ম্যাচই বাকি আছে ফাইনালে ওঠার জন্য। চার দলের ভেতর একটা হওয়া এমনিতেই অবিশ্বাস্য সাফল্য। আমরা দল হিসেবে উপভোগ করতে চাই। কারণ আমরা জানি আমরা পারব।’
এই মহারণটা দুই দলের জন্য পুরনো হিসাব-নিকাশ চুকানোরও উপলক্ষ্য। শেষবার ইউরোতে তাদের দেখা হয়েছিল ২০১২ সালে। সেবার কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের কাছে হেরে বিদায় নেয় ফ্রান্স। এবার কী হবে? উত্তরটা মিলে যাবে আজ রাতেই। স্পেনের ডিফেন্ডার মার্ক কুকুরেইয়া অবশ্য আশাবাদী জয়ের ব্যাপারে। নিজেদের প্রতি আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই তাদের। দলটি এখন স্বপ্ন দেখছে এক যুগ পর ফাইনালের।
কুকুরেইয়ার ভাষায়, ‘আমরা যেভাবে খেলি এবং আমাদের যেসব খেলোয়াড় আছে, তাতে ফুটবল বিশ্বে স্পেনের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। তবে সম্ভবত (চলতি ইউরোয়) ফেভারিট হিসেবে না আসাটা আমাদের সাহায্য করেছে। আমরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে শুরু করেছিলাম, আমাদের হারানোর কিছু নেই। এখন সেই আত্মবিশ্বাস বেড়েছে এবং আমরা টুর্নামেন্টের আসল সময়ে আছি। আমি জানতাম, আমাদের দারুণ একটি দল আছে, যা প্রমাণিত। আমরা এই পর্যন্ত আসতে কঠোর পরিশ্রম করেছি এবং এখন আমাদের শেষ বড় প্রচেষ্টা দরকার। আর দুটি ধাপ।’