অবৈধ স্থাপনা রেখেই চলছে খাল খনন
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলা
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কনকসার ইউনিয়নের কনকসার-নাগেরহাট খাল। সাড়ে তিন কিলোমিটার খালের সীমানা নির্ধারণ করে উপজেলা প্রশাসন লাল নিশানা টানিয়ে দিয়েছে। সেই লাল নিশানার ভেতর খাল খননের কাজ এগিয়ে চলছে পুরোদমে, কিন্তু পাড়জুড়ে প্রভাবশালীদের
গড়ে তোলা অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা। সরেজমিনে উপজেলার ওই খালের কনকসার, সিংহের হাটি, ফকিরবাড়ি ও নাগেরহাট গ্রাম ঘুরে এমন চিত্র ফুটে উঠেছে।
উপজেলার ফকিরবাড়ি গ্রামে খালের পাড়ে নিজের কয়েকটি দোকানঘর রেখেই খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদারের অন্যতম অংশীদার শামীম মোড়ল। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা হলে তারা জানিয়েছেন, কনকসার গ্রাম থেকে ফকিরবাড়ি পর্যন্ত খালের পাড়ে ওই ঠিকাদারের নিজেরই রয়েছে আটটি অবৈধ স্থাপনা। আর নাগেরহাট বাজারে খালের পাড়েই স্থানীয় প্রভাবশালী শেখ শাহীনের নিজের একটি মার্কেট। নিজের নামে গড়ে তোলা শাহীনের ওই মার্কেটে রয়েছে ৬ থেকে ৭টি দোকানঘর। এক সময় উপজেলার কনকসার-নাগেরহাট খালের ছিল ভরা
আরও পড়ুন:
আকতার পারভেজ সর্বোচ্চ ভোটে সিএসই পরিচালক
যৌবন। তখন কনকসার ব্রিজের মুখ থেকে ঢাকার সদরঘাট অভিমুখে লঞ্চ চলাচল করত। তালতলা-ডহরী খালের সঙ্গে যোগ হয়ে এ খালটি মিশেছে ইছামতি ও ধলেশ^রীতে। আর এ নৌপথ হয়েই ঢাকার সদরঘাটের নৌ-যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল। কিন্তু কালক্রমে এ খালের দুই পাশে পলি জমে ছোট হয়ে আসে। খালের পাড়ে গড়ে ওঠে অবৈধ স্থাপনা। সম্প্রতি এ খালের সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকা খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। লৌহজং উপজেলা এলজিইডি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে এ খাল খনন কাজ বাস্তবায়ন করছে। দরপত্র আহ্বানের মধ্য দিয়ে খনন কাজ পেয়েছেন উপজেলার লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মোল্লা। তার সঙ্গে অংশীদার হিসেবে কাজ করছেন কনকসার গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি শামীম মোড়ল।
সিংহেরহাট গ্রামের বাসিন্দা লালু ফকির ও আব্দুস সালাম মীরধা জানান, সরকারি খালের পাড় দখল করে ঠিকাদারের অংশীদার শামীম মোড়লের রয়েছে চারটি দোকানঘর। সেগুলো পাশ কাটিয়েই নিজেই খাল খনন করছেন শামীম। ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। কনকসার গ্রামের বাসিন্দা আতাউর রহমান (৬৩) বলেন, ৭০ দশকে এ খাল কানায় কানায় ভরা ছিল। ধীরে ধীরে খালটি ভরাট হয়ে গেছে। অনেকে এখনও খালের জমি দখলে নিতে মরিয়া। প্রশাসনের উচিত খাল খননের পাশাপাশি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা।
আরও পড়ুন:
বৃহত্তম হিমশৈল
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার শামীম মোড়ল বলেন, কনকসার থেকে নাগেরহাট পর্যন্ত খাল পাড়ে বৈধ-অবৈধ বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে। কিন্তু খনন কাজ চলাকালে আমরা কোনো স্থাপনাই ভেঙে ফেলিনি। তবে নিজের অবৈধ স্থাপনার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে গেছেন।
উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী সোয়াদ-বিন-আজাদ বলেন, খাল খনন কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন দেখবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়ে শিগগিরই খালের পূর্বপাশের অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হবে।
আরও পড়ুন:
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম