‘আমরা ভুলে গিয়েছিলাম সেও মানুষ’, হার্দিককে নিয়ে বড়ভাই ক্রুনাল
গত ৬ মাসে জীবনের বড় একটি উত্থান-পতন দেখলেন ভারতের অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া। ঘটনার শুরু আইপিএলে গুজরাট টাইটানস থেকে উড়িয়ে এনে হার্দিক পান্ডিয়াকে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের অধিনায়ক করার পর থেকে। রোহিত শর্মার থেকে অধিনায়কত্ব কেড়ে নিয়ে হার্দিককে এই পদে বসানোয় নাখোশ হন মুম্বাইয়ের সমর্থকরা।
আইপিএলের সবশেষ এই মৌসুমে মুম্বাইয়ের বাজে পারফরম্যান্সে দুয়ো শোনেন হার্দিক। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সও মলিন ছিল এই অলরাউন্ডারের। সেটি যেন আগুনে ঘি ঢালে। মুম্বাইয়ের ঘরের মাঠ ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম থেকে দুয়োর ঝড় বয়ে যায় হার্দিকের ওপর দিয়ে। তবে মুদ্রার উল্টোপিঠ দেখতেও সময় লাগেনি হার্দিকের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অনবদ্য পারফরম্যান্স দেখিয়ে করেন চ্যাম্পিয়ন। এরপর সেই ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামেই ‘হার্দিক হার্দিক’ রব তোলেন সমর্থকরা।
হার্দিকের কঠিন সেই সময়ে সমর্থকরা পাশে না থাকলেও ছিল তার পরিবার। বড়ভাই ক্রুনাল পান্ডিয়াও আইপিএলে নিয়মিত খেলেন। সমালোচনা হজম করা হার্দিকের সেই সময় কত কঠিন ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে জানিয়েছেন ক্রুনাল।
কয়েকটি ছবি শেয়ার করে ক্রুাল লেখেন, ‘হার্দিক ও আমার পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করার এক যুগ হয়ে গেছে প্রায়। এর মধ্যে শেষ কিছুদিন ছিল রূপকথার গল্পের মতো, যার স্বপ্ন আমরা দেখেছি। দেশের প্রত্যেকের মতোই দলের এই অর্জনে ঘোরের মধ্যে ছিলাম এবং আমার ভাই এর মধ্যমণি থাকায় আমার আবেগের পরিমাণ ছিল আরও বেশি।’
হার্দিকের কঠিন সময়ের বর্ণনা দিয়ে ক্রুনাল লেখেন, ‘গত ৬ মাস হার্দিকের জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় ছিল। সে যার মধ্যে দিয়ে গেছে, সেটা তার সঙ্গে হওয়া উচিত ছিল না। ভাই হিসেবে আমার খুবই খারাপ লেগেছে। দুয়ো দেওয়া থেকে শুরু করে মানুষ সবধরনের বাজে কথা বলেছে। দিনশেষে আমরা সবাই ভুলে গিয়েছিলাম যে সে-ও একজন মানুষ, তারও আবেগ আছে। যেভাবেই হোক সে বিষয়গুলো হাসিমুখে অতিক্রম করেছে। যদিও আমি জানি হাসি ধরে রাখা কত কঠিন ছিল তার জন্য। সে কঠোর পরিশ্রম করে গেছে এবং বিশ্বকাপ পেতে যা যা করতে হবে তার উপর লক্ষ্য রেখেছে। কারণ, এটাই ছিল তার চূড়ান্ত উদ্দেশ্য।’
ক্রুনাল আরও লেখেন, ‘হার্দিকের জন্য সবসময়ই দেশ আগে এবং এটা এমনই থাকবে। বারোদা থেকে উঠে আসা একজন তরুণের পক্ষে দলকে বিশ্বকাপ জেতাতে অবদান রাখার চেয়ে বড় কোনো অর্জন হতে পারে না। হার্দিক, আমি তোমার জন্য অনেক অনেক গর্বিত। অনেক ভালোবাসি তোমাকে এবং তুমি সবটুকু সুখ ও তোমার পথে যত ভালো জিনিস আসবে তার প্রাপ্য। তোমার প্রতি আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধা, আমার বাচ্চু (আদরার্থে)।’