মার্তিনেজের নৈপুণ্যে ইকুয়েডরকে হারিয়ে সেমিতে আর্জেন্টিনা
লিওনেল মেসি এসেছিলেন দলের হয়ে প্রথম পেনাল্টি নিতে। গোলরক্ষক আলেকজান্ডার ডমিঙ্গেজকে ভুল পথে পাঠিয়েছিলেন বটে। কিন্তু তার শট বারপোস্টে লেগে চলে যায় ওপরে। কিন্তু পেনাল্টিতে আর্জেন্টিনার ত্রাতা হয়েছিলেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। দুই পেনাল্টি ঠেকিয়ে আরও একবার নায়ক বনে গেলেন এই গোলরক্ষক। ইকুয়েডরকে ৪-২ ব্যবধানে পেনাল্টিতে হারিয়ে সেমিফাইনালে গেল আর্জেন্টিনা।
ম্যাচে উত্তেজনা ছড়ালো বেশ। প্রথমার্ধে লিসান্দ্রো মার্তিনেজের গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনা ইকুয়েডর। ম্যাচ যখন উন্মাদনার তুঙ্গে, ঠিক তখনই শেষের দিকে দারুণ এক গোল করে ম্যাচ সমতায় নিয়ে আসেন ইকুয়েডরের কেভিন রুদ্রিগেজ।
আগেই জানা গিয়েছিল, কোপার এবারের আসরে কোয়ার্টার ও সেমি-ফাইনালে থাকছে না কোনো অতিরিক্ত সময়। ফলে ম্যাচ গড়ালো টাইব্রেকারে। তাতে আরেকবার অভিজ্ঞতার ভেলকি দেখালেন মার্তিনেজ।
মেসি প্রথম শট মিস করতেই আর্জেন্টাইনদের চোখেমুখে হতাশা। ইকুয়েডরের হয়ে প্রথম শটটি নিতে আসেন অ্যাঞ্জেল মেনা। বামদিকে ঝাঁপিয়ে তার শট রুখে দেন মার্টিনেজ। পরের শটে অ্যালান মিন্দার শটও আটকে সমর্থকদের আনন্দে ভাসান এমি।
বিপরীতে টানা চার শটে গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন হুলিয়ান আলভারেজ, আলেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্তার, গনজালো মন্তিয়েল ও ওতামেন্ডি। তাতে একটি শট বাকি থাকতেই উল্লাসে মেতে ওঠে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
আজ শুক্রবার টেক্সাসের হিউস্টনের এনআরজি স্টেডিয়ামে বল দখলের লড়াইয়ে আর্জেন্টিনা এগিয়ে থাকলেও প্রথম আক্রমণ করে ইকুয়েডর। ম্যাচের পঞ্চাদশ মিনিটে ময়েসেজ কালসেডোর বাড়ানো পাসে জেরেমি সারমিয়েন্তোর রুখে দেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ।
আর্জেন্টিনা ছন্দ ধরে খেলে প্রথম আক্রমণটা শাণায় ম্যাচের ২৭তম মিনিটে। তবে লাহুয়েল মলিনার ক্রসে হেড দিয়েও জাল খুঁজে নিতে ব্যর্থ হন এনজো ফার্নান্দেজ। ৩৪তম মিনিটের মাথায় মেসির পাস থেকে শট নিয়েছিলেন এনজো। তবে প্রতিপক্ষের একজন খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে সেটা লক্ষ্যচ্যুত হয়।
অবশেষে ৩৫তম মিনিটে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। কর্নার থেকে বল উড়িয়ে দিয়েছিলেন মেসি। ডি-বক্সের ভেতরেই মাথা ছুইয়ে সেটার দিক বদলে দেন ম্যাক অ্যালিস্তার। একদম মোক্ষম জায়গায় বল পেয়ে মাথার আলতো ছোঁয়ায় জাল খুঁজে নেন লিসান্দ্রো। বাকি সময়ে আর গোল না হওয়ায় এক গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
বিরতির পর গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে ওঠে ইকুয়েডর। ম্যাচের ৬২ মিনিটে কর্নার পেয়েছিল ইকুয়েডর। তবে সেটা ঠেকাতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবেই বল লাগে রদ্রিগো ডি পলের হাতে। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সে পেনাল্টিটা নিতে আসেন অভিজ্ঞ এনার ভ্যালেন্সিয়া। পেনাল্টিতে অভিজ্ঞ এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে তিনি ধোঁকাটা দিয়েছেন বটে, কিন্তু বলটা রাখতে পারেননি লক্ষ্যে। বলটা বারপোস্টে লেগে ফিরে আসে। ফলে গোল হজম করা থেকে রক্ষা পায় আকাশী-সাদারা। ম্যাচে যখন আর্জেন্টিনা জয়ের সুবাস পাচ্ছিল তখনই ম্যাচের ৯২ মিনিটে ইকুয়েডরের কেভিন রড্রিগেজ গোল করে ইকুয়েডরকে সমতায় ফেরান।
এবারের আসরে অতিরিক্ত ৩০ মিনিট না থাকায় সরাসরি টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। সেখানে প্রথম শটই মিস করেন মেসি। অন্যদিকে আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক লওতারো মার্তিনেজ প্রতিপক্ষের পরপর দুটি শট রুখে দেন। মেসির ভুলের দিনে নায়ক বনে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে জিতে সেমিফাইনালে উঠল আর্জেন্টিনা ।