ভিনিসিয়ুস ছাড়া যেমন হতে পারে ব্রাজিল দল
কোপা আমেরিকায় টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে যান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিলের ১-১ গোলে ড্র করা ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখেন তিনি। তাই নকআউট পর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্রাজিলিয়ান নাম্বার সেভেনকে ছাড়াই পরিকল্পনা সাজাতে হবে কোচ দোরিভাল জুনিয়রকে।
প্যারাগুয়ের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ৮৩তম মিনিটে হলুদকার্ড দেখেছিলেন ভিনিসিয়ুস। সেই ম্যাচে ব্রাজিলের হয়ে কার্ড দেখেছেন এদার মিলিতাও, ভেন্দেল ও লুকাস পাকেতার মতো তারকারা। এমনকি কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের নিরাপদে রাখতে এই ম্যাচে খেলানো হবে কিনা সেটা নিয়েও প্রশ্ন শুনতে হয়েছিল।
ম্যাচর জয়ের জন্য অবশ্য একাদশকেই মাঠে নামান কোচ সেটাই করেছেন কলম্বিয়ার বিপক্ষে। যদিও এতে ফলাফল এখন পর্যন্ত দোরিভালের পক্ষে যায়নি। ৭ মিনিটের সেই ফাউলে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে গিয়েছেন ভিনিসিয়ুস।
এদিকে উরুগুয়ে এ মুহূর্তে আর্জেন্টাইন কোচ মার্সেলো বিয়েলসার অধীন অসাধারণ ফুটবল খেলছে। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচের সব কটিতে জিতেই শেষ আটে গেছে তারা। কিছুদিন আগে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেও ব্রাজিলকে হারিয়েছিল তারা। এমনকি আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের পর স্কালোনি-বাহিনীকে হারানো একমাত্র দলও কিন্তু উরুগুয়ে। ব্রাজিলের জন্য দলের অন্যতম সেরা তারকা ভিনিসিয়ুসকে ছাড়া উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটি মোটেই সহজ হবে না।
উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সব মিলিয়েই পুরো দল নিয়েই নতুন করে ভাবতে হবে দরিভালকে। প্রেসিংয়ের সামনে ডিফেন্স যেমন খেই হারাচ্ছে, তেমনি মিডফিল্ডে জোয়াও গোমেজ, ব্রুনো গিমারেস, লুকাস পাকেতারা এখনো নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। এ ছাড়া প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ বাদ দিলে বাকি দুই ম্যাচে হাই প্রোফাইল ফরোয়ার্ড লাইনও ছিল নিষ্প্রভ। আক্রমণের সময় বোঝাপড়া ও স্বতঃস্ফূর্ততার অভাবও বেশ স্পষ্ট।
কোস্টারিকার বিপক্ষে ম্যাচের কথাই ধরা যাক। সেদিন ভিনিসিয়ুস যখন প্রতিপক্ষের কড়া মার্কিংয়ে কোনো উপায় বের করতে পারছিলেন না, তখন তাকে উঠিয়ে এনদ্রিককে নামান দরিভাল। মাঠে নেমে এনদ্রিক সেন্টার ফরোয়ার্ডের জায়গা নেন এবং রদ্রিগো চলে আসেন লেফট উইংয়ে। যদিও এই পরিবর্তনও ফল আনতে পারেনি।
দরিভাল কলম্বিয়ার বিপক্ষেও ম্যাচ চলাকালে ফরমেশনে কিছু পরিবর্তন আনেন । রাফিনিয়া শুরুতে মিডফিল্ডার হিসেবে খেললেও পরে লেফট উইঙ্গারের ভূমিকা পালন করেছেন। আন্দ্রেস পেরেইরাকেও পজিশন বদলে খেলতে দেখা গেছে। কিন্তু এবারও শেষ পর্যন্ত ব্রাজিল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি। ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা হচ্ছে দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ের একসঙ্গে জ্বলে ওঠতে না পারা। এ কারণে একক নৈপুণ্যের ওপরই বেশি নির্ভর করতে হচ্ছে দরিভালকে।
উরুগুয়ের বিপক্ষে ভিনিসিয়ুস না থাকলেও খুব বেশি ঝুঁকি হয়তো নেবেন না দরিভাল। ধারণা করা হচ্ছে, এনদ্রিককে সেন্টার ফরোয়ার্ড রেখে দুই পাশে রদ্রিগো ও রাফিনিয়াকে খেলাতে পারেন ব্রাজিল কোচ। তবে এই ফরমেশন কাজ না করলে দ্রুত পরিবর্তনের দিকে হাঁটতে হবে ব্রাজিলকে। বিকল্প হিসেবে দরিভালের হাতে স্যাভিও কিংবা গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির মতো খেলোয়াড়েরা তো আছেনই। শেষ পর্যন্ত ভিনিসিয়ুসের বদলি হিসেবে যিনিই আসুন, দলীয় ঐক্য ছাড়া ভালো করার সুযোগ নেই ব্রাজিলের; বিশেষ করে উরুগুয়ের মতো দলের বিপক্ষে তো একেবারেই নয়।
