চলতি সপ্তাহে মিলবে তৃতীয় কিস্তির অর্থ

আইএমএফের ঋণ

আবু আলী
২৩ জুন ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
চলতি সপ্তাহে মিলবে তৃতীয় কিস্তির অর্থ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে চলমান ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রকল্পের তৃতীয় কিস্তির অর্থ চলতি সপ্তাহে ছাড় হতে পারে। আগামীকাল ২৪ জুন সংস্থাটির নির্বাহী পরিষদের বৈঠকের সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। বৈঠকে প্রস্তাবটি অনুমোদন পেলে পরবর্তী দুই-এক দিনের মধ্যে অর্থ ছাড় হবে। এবার তৃতীয় কিস্তি বাবদ ১১৫ কোটি ২০ লাখ ডলার দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়নের কারণে কিস্তির অর্থও বেড়েছে।

গত ২৬ মে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর কার্যালয়ে তার সঙ্গে বৈঠক করেন আইএমএফের নির্বাহী পরিচালক কৃষ্ণমূর্তি ভি সুব্রামানিয়ান। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, আইএমএফ বলে গেছে, বাংলাদেশ সঠিক পথেই আছে। জুনের মধ্যেই তৃতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশের অনুকূলে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে আইএমএফ। এর মধ্যে দুই কিস্তিতে ১১৬ কোটি ডলার ছাড় করা হয়েছে। এখন তৃতীয় কিস্তি বাবদ ১১৫ কোটি ডলার ছাড় করার পর্যায়ে রয়েছে।

ঋণের বিপরীতে আইএমএফের দেওয়া শর্ত অনুযায়ী আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশকে নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখতে হবে ২ হাজার ১১ কোটি মার্কিন ডলার। অবশ্য অন্য শর্তগুলোর বাস্তবায়নের অগ্রগতি সন্তোষজনক হওয়ায় এ লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ডলার নির্ধারণ করেছে আইএমএফ। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে ১২ জুন পর্যন্ত নিট রিজার্ভ রয়েছে ১৯ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান জানিয়েছেন, আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়া নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই। তিনি বলেন, ‘আইএমএফ নতুন করে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আয় বাড়ানো, সুদহারের বিষয় নিয়ে পরামর্শ দিয়েছে। জলবায়ু ও দুর্যোগ মোকাবিলার পরামর্শ অনুসরণ করে চলতি বছরই কাজ শুরু করবে সরকার।’

ঋণের কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে আইএমএফের দেওয়া শর্ত বাস্তবায়ন ও অর্থনৈতিক সংস্কারের অগ্রগতি দেখতে গত ২৪ এপ্রিল সংস্থাটির একটি মিশন ঢাকায় আসে। তারা ৮ মে পর্যন্ত অবস্থান করে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে। এতে শর্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ সংস্কার কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চায়। প্রতিনিধি দলটি ঢাকা ত্যাগের আগে এমন বার্তা দিয়ে যায়, শর্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতিতে তারা খুশি। তারা আশা প্রকাশ করেন, নির্বাহী পরিষদ ঋণের অর্থ ছাড়ের প্রস্তাবটি অনুমোদন করবে।

এদিকে আইএমএফের শর্ত বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এরই মধ্যে ঋণের সুদের হার বাজারভিত্তিক করেছে। এতে সুদহার বেড়েছে। ডলারের দামে ক্রলিং পেগ (একটি সীমার মধ্যে থেকে ওঠানামা) পদ্ধতি চালু করেছে। এতে ডলারের দাম এক দিনের ব্যবধানে ৮ টাকা বেড়েছে। এখন ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করার বিষয়ে কাজ করছে। জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করছে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি কমানো হচ্ছে।

জানা গেছে, আইএমএফের তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে যাবে। ঈদের রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় রিজার্ভ আরও কিছুটা বেড়েছে। ফলে ঋণের অর্থ ছাড় হলে এবার রিজার্ভ আবার ২ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এতে রিজার্ভে সাময়িক স্বস্তি মিলবে।