বন বিভাগের বাধায় বন্ধ ১২ প্রকল্পের কাজ
বন বিভাগের বাধায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বাস্তবায়নাধীন ১১টি প্রকল্পের কাজ। এছাড়াও বন্ধ রয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের শ্রীপুর পৌরসভার বর্জ্যশোধনাগার প্রকল্প। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, রাস্তাগুলো খোঁড়াখুঁড়ি করে রাখায় ভোগান্তিতে পড়েছেন বাসিন্দারা। বনবিভাগ বলছে, মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি দেওয়া হলেই কেবল বাধা অপসারণ সম্ভব।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, বনবিভাগের বাধায় বন্ধ প্রকল্পগুলো হলো- গোসিংগা ইউনিয়নের ১ কিমি পটকা-চাওবন সড়ক, ২ দশমিক ৫০ কিমি শ্রীপুর কলেজ-পেলাইদ সড়ক, ৬ দশমিক ৬৪০ কিমি শ্রীপুর-কাপাসিয়া আঞ্চলিক সড়ক, ৪ দশমিক ৯৩ কিমি বাউনি-ইজ্জতপুর সড়ক, ২ কিমি বাউনি বাজার-মিনার বেপারী ঘাট সড়ক। বরমী ইউনিয়নের ১ কিমি বরমী নয়নপুর সড়ক-পোষাইদ টেংরা সড়ক। রাজাবাড়ি ইউনয়নের ২ দশমিক ৯০ কিমি শ্রীপুর হেডকোয়ার্টার-মেম্বার বাড়ি ভায়া ইজ্জতপুর সড়ক, ১ কিমি বিন্দুবাড়ি-কাফিলাতলী সড়ক, ৬ দশমিক শূন্য ১০ কিমি ইজ্জতপুর-রাজাবাড়ি সড়ক। প্রহলাদপুর ইউনিয়নের ৯ দশমিক ৬৯১ কিমি রাজেন্দ্রপুর বাজার-প্রহলাদপুর ইউপি ভায়া লোহাগাছিয়া সড়ক। শ্রীপুর পৌরসভার ১ কিমি শ্রীপুর হাসপাতাল দক্ষিণ মোড়-পৌর কবরস্থান বাঘের বাজার সড়ক। এসব প্রকল্পের সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৮ দশমিক ৬৭১ কিমি। সড়কগুলোর স্থানে স্থানে বনভূমি থাকলেও বাধার কারণে পুরো রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে।
বনবিভাগের বাধায় বন্ধ হওয়া এগারোটি রাস্তার মধ্যে গোসিংগা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ছয়টি রাস্তা রয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান শাহিন বলেন, বহু পুরনো এসব রাস্তার কাজ বন্ধ থাকায় জনদুর্ভোগ বাড়ছে। এলাকার উন্নয়ন ও জনস্বার্থে রাস্তাগুলোর কাজ করা জরুরি। তিনটি রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে রাজাবাড়ি ইউনিয়নে। এই ইউপির চেয়ারম্যান হাসিনা মমতাজ বলেন, এগুলো পুরনো চলমান রাস্তা। কাজ বন্ধ থাকায় জনগণকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
আকতার পারভেজ সর্বোচ্চ ভোটে সিএসই পরিচালক
বনবিভাগের বাধায় বন্ধ হয়ে গেছে শ্রীপুর পৌরসভার বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণ। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি বনের ভেতর দিয়ে গেছে। বহু পুরনো রাস্তাটি বনবিভাগ বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। পৌরসভার মেয়র মো. আনিছুর রহমান জানান, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার দফায় দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেও বিষয়টি সুরাহা করতে পারেননি। ফলে বর্জ্য শোধন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।
শ্রীপুর উপজেলা প্রকৌশলী আবদুস ছামাদ পাওনদার জানান, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে না পারায় দাতা সংস্থার বিরাগভাজন হচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবে।
আরও পড়ুন:
বৃহত্তম হিমশৈল
সহকারী বন সংরক্ষক শ্রীপুর রেঞ্জের কর্মকর্তা মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, পৌরসভার ডামপিং স্থলের চারপাশে বন। রাস্তাটি বন আইনের বিশ ধারাভুক্ত। আমি এসব প্রকল্পের অনুমতি দিতে পারি না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত আছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে প্রকল্পের কাজ করা যেতে পারে।
ঢাকা বিভাগীয় সহকারী বন সংরক্ষক মো. সামসুল আরেফিন বলেন, আমরা এলজিইডিকে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ে অনুমতি নিতে বলেছি। এখনো অনুমতির কপি পাইনি।
আরও পড়ুন:
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম