চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল /
রিয়ালের ১৫তম নাকি ডর্টমুন্ডের শাপমোচন
১৯৫৫-৫৬ মৌসুম থেকে চ্যাম্পিয়নস লিগের মানের ইউরোপিয়ান কাপ শুরুর পর এক দশকে ছয়টি শিরোপা জিতেছিল রিয়াল। ২০১৩-১৪ সাল থেকে হিসেব করলে গত এক দশকে ৫টি শিরোপা জিতেছে রিয়াল। আজ রাত ১টায় ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে হারালেই প্রথম দশকের মতো শিরোপাসংখ্যা মিলে যাবে রিয়ালের। মাঝখানে আরও ৩টি শিরোপা জেতায় ১৫তম শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ধারে-ভারে এই ম্যাচে পরিস্কার ফেবারিটও তারা।
অন্যদিকে জার্মান ক্লাব ডর্টমুন্ডের জন্য এই ম্যাচটি শাপমোচনের। ১৯৯৭ সালে একমাত্র শিরোপা জেতা দলটি ১১ বছর আগে পৌঁছে গিয়েছিল আরও একটি শিরোপার খুব কাছে। এই ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামেই স্বদেশি ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের কাছে শিরোপা হারিয়ে হতাশ হয় ডর্টমুন্ড। এবার শাপমোচনের লক্ষে তাই ঝাঁপিয়েই পড়বে এডিন তেজেসের দল।
ইউরোপীয় ক্লাবগুলোর লিগ যুদ্ধ শেষ হয়েছে আগেই। আজকের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০২৩-২৪ মৌসুমের ক্লাব ফুটবল।
জার্মান লিগ বুন্দেসলিগায় বিদায়ী মৌসুমে পঞ্চম অবস্থানে থেকে শেষ করেছে ডর্টমুন্ড। তবে চ্যাম্পিয়নস লিগে তাদের চেহারা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ‘গ্রুপ অব ডেথ’ পার করে তারা আজ ফাইনালের মঞ্চে। গ্রুপপর্বে প্যারিস সেন্ট জার্মেই, এসি মিলান ও নিউক্যাসল ইউনাইটেডের মতো দলকে পেছনে ফেলে হয়েছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। নক আউটে তারা হারিয়ে দিয়েছে ডাচ ক্লাব পিএইচভি আইন্দহোভেন, অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ ও আবারও পিএসজিকে।
অন্যদিকে, গ্রুপপর্বে বেশ সহজ প্রতিপক্ষ পেয়েছিল মাদ্রিদ। তবে নক আউটে তাদের মতো শক্তিশালী দলের মোকাবেলা আবার করেনি ডর্টমুন্ড। শেষ ষোলোতে জার্মান ক্লাব আরবি লাইপজিগকে হারানোর পর কোয়ার্টার ফাইনালে হারিয়েছে শক্তিশালী ম্যানচেস্টার সিটিকে। আর সেমিফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে হতাশ করে পৌঁছে গেছে ওয়েম্বলির মঞ্চে।
রিয়াল মাদ্রিদের শক্তি তাদের একাধিক ম্যাচজয়ী খেলোয়াড়। চলতি মৌসুমেও ইউরোপীয় মঞ্চে আলো ছড়াচ্ছেন রিয়ালের ব্রাজিল সেনসেশন ভিনিসিউস জুনিয়র। বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে বাম দিক দিয়ে তার আক্রমণ ভয় ধরিয়েছে প্রতিপক্ষের রক্ষণে। অন্যদিকে, রিয়ালে এসে প্রথম মৌসুমেই ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় মঞ্চ চ্যাম্পিয়নস লিগে সাবেক ক্লাব ডর্টমুন্ডের মুখোমুখি হচ্ছেন জুডে বেলিংহ্যাম। ছেড়ে কথা বলার লোক নন এই ইংলিশ তারকা। ঘরের মাঠের সুবিধাও পাবেন তিনি। পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন রিয়ালের আরেক ব্রাজিলিয়ান তারকা রদ্রিগো গোয়েজও। ক্লাব ফুটবলের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলতে নামছেন টনি ক্রুস। বরাবরের মতো মাঝমাঠে খেলার নিয়ন্ত্রণ করবেন তিনিই। আর পাশে তো এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা আর ফেদে ভালভের্দের মতো সারা মাঠ দাঁপিয়ে বেড়ানো ফুটবলার আছেনই।
ডর্টমুন্ডের মূল ভরসা মিডফিল্ডার জ্যাডন স্যাঞ্চো। বেলিংহ্যামের মতো ঘরের মাঠের দর্শকও পাবেন এই ইংলিশ তারকা। সেমিফাইনালে পিএসজির বিপক্ষে তাক লাগানো পারফর্ম করেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে লোনে আসা এই খেলোয়াড়। তাকে আটকানোর দায়িত্ব পড়বে রিয়াল ডিফেন্ডার ফেরল্যান্ড মেন্ডির ওপর। ডর্টমুন্ড ডিফেন্ডার ম্যাট হুমেলসও আছেন দুরন্ত ফর্মে। আরেকদিকে, ডর্টমুন্ডের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলতে নামছেন দীর্ঘদিনের সেনানী মার্কো রয়েস। নিশ্চয়ই তাকে খালি হাতে ফেরাতে চাইবে না তেজেসের দল। তবে মাঠে কে কেমন পারফর্ম করতে পারেন সেটি দেখা যাবে আজ রাতেই। ফয়সালা হবে, ১৫তম বারের মতো রিয়াল নাকি শাপমোচন করবে ডর্টমুন্ড।