সরকারি ৯ কোম্পানির কাছে বিপিসির পাওনা ২৩৪৬ কোটি টাকা

লুৎফর রহমান কাকন
৩১ মে ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
সরকারি ৯ কোম্পানির কাছে বিপিসির পাওনা ২৩৪৬ কোটি টাকা

ডলার সংকট, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন এবং বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের বাজারের অস্থিতিশীলতার কারণে বেকায়দায় পড়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এমন অবস্থায় জ্বালানি তেল সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর পাওনাও পরিশোধ করতে পারছে না বিপিসি। বিপিসির তথ্যানুযায়ী, চলতি মাস পর্যন্ত তেল সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর পাওনা হয়েছে ৪২১.১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। অথচ সরকারি ৯টি কোম্পানির কাছে ২ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা পাওনা বকেয়া পড়ে আছে বিপিসির। বছরের পর বছর দেনদরবার করেও টাকা আদায় করা যাচ্ছে না।

বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, সরকারি ৯টি কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাওনা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাছে- প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। অন্যগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের কাছে ২০.৯ কোটি, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে ১১৯.৯৬ কোটি, বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে ১৭২.৮৩ কোটি, প্রতিরক্ষা সার্ভিসেসের কাছে ৫৩.৭১ কোটি, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে ২৫.৭৮ কোটি, বিআইডব্লিউটিসির কাছে ০.৪০ কোটি, পেট্রোবাংলার কাছে ০.০২ কোটি এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাছে পাওনা ০.৫৮ কোটি টাকা।

বিপিসির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, বিমানের কাছে ২১শ কোটি টাকার বেশি পাওনা ছিল। তবে দফায় দফায় বিমানের সঙ্গে বৈঠক করে বকেয়া পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিমান এখন নগদ টাকায় তেল কেনার চেষ্টা করছে। বকেয়া টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী বিমানের কাছে এক হাজার ৯৫২.৫০ কোটি টাকা বকেয়া আছে।

তিনি বলেন, সরকারি কোম্পানিগুলোর পাওনা আদায়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত প্রয়োজন হয়। চাইলেই বিপিসি কঠোর হতে পারে না। সব কোম্পানি বা সংস্থা আবার অন্য কোনো সংস্থা বা কোম্পানির কাছে টাকা পাবে। ফলে সরকারি আন্তঃসংস্থার দেনা-পাওনা আদায়

কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এমন একটা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় আসতে হবে যাতে এক সংস্থা আরেক সংস্থার টাকা আটকে না রাখে।

এদিকে তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পাওনা পরিশোধে বিপিসি চাপের মধ্যে আছে বলে জানা গেছে। জ্বালানি তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তেল পাঠালেও বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করায় কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান তেল খালাসে ফিন্যান্সিয়াল হোল্ড আরোপ করছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেরিতে বিল পরিশোধ করায় বিলম্ব মাশুল বা লেট পেমেন্ট পরিশোধ করতে হচ্ছে।