রাজমিস্ত্রি থেকে ‘রেকর্ড বয়’ শাওন
শুরু হয়েছে শেখ কামাল জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা। আজ শুক্রবার ১৫০০ মিটার দৌঁড়ে পাঁচ বছর আগের রেকর্ড ভেঙে ৪ মিনিট ১৪ দশমিক ১২ সেকেন্ডে নতুন রেকর্ড গড়েছে কুড়িগ্রামের ছেলে মো. শাওন। ২০১৮ সালে ৪ মিনিট ১৯ দশমিক ২০ সেকেন্ডে আগের রেকর্ডটি গড়েছিল নড়াইলের বিজয় মল্লিক।
নতুন রেকর্ড গড়া শাওনের অ্যাথলেট হওয়ার পথটা সহজ ছিল না। এক সময় ফুটবলে মন পড়ে থাকত। পরে কুড়িগ্রামের কোচ শফিকুল ইসলামের পীড়াপীড়িতে অ্যাথলেটিক্সে নাম লেখায় শাওন। অ্যাথলেট হতে তাকে রাজমিস্ত্রির কাজও করতে হয়েছে। রাজমিস্ত্রী থেকে শাওন এখন রেকর্ড বয়।
শাওনের বাবা মোফাসসেল হক পেশায় একজন কৃষক। দিন চুক্তিতে অন্যের জমিতে চাষ করে চার ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়েই সংসার চালান তিনি। তবে সময় বিশেষে বাবাকেও কৃষি কাজে সহযোগিতা করে শাওন। সে বলে, ‘বাবা অনেক কষ্ট করেন। তাই উনাকে আমি সহযোগিতা করি। চার ভাইয়ের মধ্যে আমি বড়। তাই বাবাকে সহযোগিতা করতেই হয়।’
তবে সংসার চালাতে কষ্ট হয় বিধায় নিজের বাড়তি খাবারের জন্য আর বাবাকে চাপে ফেলতে চায় না শাওন। তাই শুক্রবার ও শনিবার দিনে সাড়ে তিনশ টাকা করে চুক্তিতে এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করে সে। রোজগারের সেই অর্থ দিয়েই পুষ্টিকর খাবার জোগানোর চেষ্টা করে শাওন।
পাঁচগাছি দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র শাওন বলে, ‘এমনিতেই সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় বাবাকে। তাই আমি মাদ্রাসা বন্ধের দুই দিন শুক্র ও শনিবার নিজে রাজমিস্ত্রির কাজ করি। ওই টাকা দিয়ে অ্যাথলেটিক্স অনুশীলনের পর পুষ্টিকর খাবার কিনে খাই।’
আগে ১০০ ও ২০০ মিটার স্প্রিন্টে খেলতে গিয়ে দম হারিয়ে ফেলেছিলেন শাওন। তাই ১৫০০ মিটার দৌঁড়কেই বেছে নেয় শাওন। তিনি বলেন, ‘আমি ১০০ ও ২০০ মিটার স্প্রিন্টে দম পেতাম না। তাই ১৫০০ মিটারে খেলছি। এতে তৃপ্তি পাই। অনুভূতিও ভালো।’
নতুন রেকর্ড গড়ায় দশ হাজার টাকা প্রাইজমানি পেয়েছে শাওন। এই অর্থ দিয়ে নিজে পুষ্টিকর খাবার খেতে চায় কুড়িগ্রামের এই অ্যাথলেট।