লাল-সবুজ নিশান হাতে এভারেস্ট চূড়ায় বাবর

সাহসী তারুণ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক ও চট্টগ্রাম ব্যুরো
২০ মে ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
লাল-সবুজ নিশান হাতে এভারেস্ট চূড়ায় বাবর

ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে লাল-সবুজের পতাকা ওড়ালেন বাবর আলী। ১১ বছর পর দুর্গম এ যাত্রায় সপ্তমবারের মতো সফল হলেন আরও এক বাংলাদেশি। গতকাল রবিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছান তিনি। এখন বাবর আলীর লক্ষ্য বিশ্বের চতুর্থ উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ ২৭ হাজার ৯৪০ ফুট উঁচু লোৎসে জয় করা।

বেসক্যাম্প টিমের বরাতে অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক ফরহান জামান জানান, লোৎসেতে এর আগে কোনো বাংলাদেশির পদচিহ্ন পড়েনি এবং কোনো বাংলাদেশি একই অভিযানে দুটি আট হাজার উচ্চতাসম্পন্ন শৃঙ্গে চড়েননি। এ লক্ষ্য পূরণ হলে পর্বতারোহণে বাবর আলী বাংলাদেশের হয়ে ইতিহাসের নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করবেন।

গতকাল সকালে ফরহান জামান আরও জানান, বাবর আলী এখন ক্যাম্প ৪-এ নামার পথে রয়েছেন। এটা ডেথ জোন বলা চলে। সেখানে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য ছবি পেতে আরও কিছু সময়

অপেক্ষা করতে হবে। রবিবার ক্যাম্প ৪-এ নেমে মাঝরাতে আবারও পর্বতারোহণ শুরু করবেন বাবর। সবকিছু ঠিক থাকলে সোমবার (২০ মে) ভোরে লোৎসেও জয় করবেন তিনি।

জানা গেছে, গত ১ এপ্রিল নেপালের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন বাবর আলী। সেখানে পর্বতারোহণের প্রয়োজনীয় অনুমতি ও নানা সরঞ্জাম কেনার কাজ শেষে কাঠমান্ডু থেকে লুকলার উদ্দেশে রওনা করেন। প্রায় এক সপ্তাহ ট্র্যাকিং শেষে পৌঁছান এভারেস্টের বেসক্যাম্পে। সেখান থেকেই শুরু করেন মূল অভিযান।

৩৩ বছর বয়সী বাবর আলীর বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বুডিশ্চর গ্রামে। পেশায় তিনি চিকিৎসক। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি এবং এমবিবিএস পাস করে কিছুদিন চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু পর্বতজয়ের নেশা তাকে সেই পেশায় স্থির থাকতে দেয়নি। ট্র্যাকিংয়ে বাবরের হাতেখড়ি ২০১০ সালে। চট্টগ্রামের পর্বতারোহণ ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমারসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। এই ক্লাবের হয়ে ২০১৪ সাল থেকে হিমালয়ের নানা শিখরে চালান অভিযান। ২০১৭ সালে ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের উত্তরকাশী শহরের নেহরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং থেকে মৌলিক পর্বতারোহণ নিয়ে প্রশিক্ষণ নেন বাবর। ২০২২ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২২ হাজার ৩৪৯ ফুট উচ্চতার হিমালয়ের অন্যতম দুর্গম ও টেকনিক্যাল চূড়া আমা দাবলাম আরোহণ করেন তিনি। এভারেস্ট জয়ের আগে বেশ কয়েকটি পর্বতশৃঙ্গ জয় করেন বাবর।

বাবর আলীর আগে ২০১৩ সালের ২০ মে এভারেস্ট জয় করেন মুন্সীগঞ্জের মো. খালেদ হোসাইন (সজল খালেদ)। অর্থাৎ দীর্ঘ ১১ বছর বিরতির পর বাংলাদেশি হিসেবে পৃথিবীর উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ জয় করলেন বাবর। সর্বপ্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০১০ সালের ২৩ মে এভারেস্ট জয় করেছিলেন মুসা ইব্রাহীম। এরপর ২০১৩ সালের মধ্যে আরও চারজন বাংলাদেশি পাঁচবার এভারেস্ট জয় করেন। তারা হলেনÑ এমএ মুহিত (দুবার জয় করেন), নিশাত মজুমদার, ওয়াসফিয়া নাজরীন ও মো. খালেদ হোসাইন।