বিটিআরসির কাছে নথি চাইল তদন্ত কমিটি
৩৪ আইআইজির পাওনা আদায়ে অনীহা
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) দ-প্রাপ্ত পরিচালককে পদায়ন এবং ৩৪টি আইআইজি কোম্পানির পাওনা আদায়ে অনীহার ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার। তদন্তে বিটিআরসির কাছে ৯ ধরনের কাগজপত্র চেয়েছে তিন সদস্যের ওই কমিটি। গত ৯ মে এক চিঠিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের পক্ষ থেকে এসব কাগজপত্র চাওয়া হয়।
বিভাগের অতিরিক্ত সচিব একেএম আমিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত দুটি সংবাদের বিষয়ে অনুসন্ধানে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সরকার। তাই অভিযোগের বিষয়ে বিটিআরসির বক্তব্য ও ৯টি নথি পাঠানোর জন্য বলা হয়। নথিগুলোর মধ্যে বিটিআরসির ২৭৩ ও ২৭৫ নম্বর কমিশন সভার কার্যবিবরণী, ২০২১-২২ থেকে পরবর্তী তিন অর্থবছরে ৩৪টি আইআইজি প্রতিষ্ঠান থেকে রাজস্ব ও জরিমানা সংক্রান্ত হিসাব, ইঅ্যান্ডআই বিভাগের ২৭ আইআইজি পরিদর্শনের প্রতিবেদন, ৩৪টি আইআইজি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিটিআরসির রেভিনিউ শেয়ারিং পাওনার ক্ষেত্রে ব্যাকআপ ব্যান্ডউইথের পরিমাণসহ বিটিআরসির দ-প্রাপ্ত পরিচালক এয়াকুব আলী ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার নথি এবং সেই সংক্রান্ত প্রতিবেদন রয়েছে।
জানা গেছে, ব্যান্ডউইথ বিক্রির আয়ের অংশ থেকে (রেভিনিউ শেয়ারিং) ৩৪টি আইআইজি প্রতিষ্ঠানের কাছে রাজস্ব বাবদ ১০৯ কোটি টাকার বেশি পাওনা বিটিআরসির। এর আগে বিটিআরসির এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড ইন্সপেকশন (ইঅ্যান্ডআই) বিভাগ ২০২১-২৩ সালের মে পর্যন্ত ২৭টি আইআইজি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে। এ সময় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকিসহ ৩০টির বেশি অনিয়ম পায়। সে সময় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক ও জরিমানা করা হয়। কোম্পানিগুলো জরিমানা পরিশোধ করলেও রেভিনিউ শেয়ারিং বাবদ মূল পাওনা পরিশোধ করেনি।
গত ৬ মার্চ অডিট কমিটির দাখিল করা প্রতিবেদনের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন প্রতিবেদন প্রকাশের প্রস্তাব করায় বিটিআরসির দ-প্রাপ্ত পরিচালক মো. এয়াকুব আলী ভূঁইয়াকে সংস্থাটির অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগে পদায়ন করা হয়। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে ৩ এপ্রিল তাকে অপসারণ করে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের আদেশ দেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। তবে মন্ত্রণালয়ের সে নির্দেশ মানা হয়নি। এ সংক্রান্ত নথি চাওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে। এ বিষয়ে জানতে বিটিআরসির সচিব নূরুল হাফিজের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’
তবে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠির জবাব দিয়েছে বিটিআরসি। চিঠিতে উল্লিখিত দুটি বিষয়েই তদন্তের প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছে কমিশন। এর আগে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করায় বিটিআরসির সংশ্লিষ্ট সবার দায়দায়িত্ব নিরূপণ করার জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন:
একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী