অনেক বিষয় খোলাসা করে গেলেন লু

আরিফুজ্জামান মামুন
১৭ মে ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
অনেক বিষয় খোলাসা করে গেলেন লু

দুদিনের ঢাকা সফরে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করেছেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। নাগরিক সমাজ, মানবাধিকারকর্মী ও জলবায়ু নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। নানা কারণে তার এই সফর ছিল আলোচিত। সফরে বাংলাদেশকে অনেক বিষয়েই খোলাসা করে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পেছনে না তাকিয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি যে অনড়, সেটিও পরিস্কার করে গেছেন লু।

সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন ডোনাল্ড লু। এ নিয়ে প্রশ্ন না নিলেও গণমাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে যে শীতলতা চলছে, সেটি লুর আচরণ দেখে মনে হয়নি।

নির্বাচনের আগে-পরে বিভিন্ন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ থাকলেও এখন সম্পর্কের নতুন দিক উন্মোচন করতে চায় ওয়াশিংটন। দুই দেশের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি, সম্পর্ক সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া, র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, শ্রমনীতির সংস্কার ও মানবাধিকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইতিবাচক সহযোগিতা চায় বলে লুর বক্তব্যে

উঠে এসেছে। এ ছাড়া জলবায়ু, শিক্ষা সহায়তা বৃদ্ধি, নতুন বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ খাত, প্রযুক্তি, ট্যাক্স-পে আধুনিকায়ন, দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন নিশ্চিতে কাজ করতে ইতিবাচক সহযোগিতা চায় দেশটি। তবে র?্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, শ্রমনীতির সংস্কার ও মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুগুলোতে অবস্থান পরিবর্তনের তেমন সুযোগ নেই বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে বলে বার্তা দিয়েছেন ডোনাল্ড লু। ভারতের মধ্যস্থতা বা তাদের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থান নরম করেছে- বিভিন্ন মহল থেকে ওঠা এমন দাবিকে হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ভারতের চোখে দেখে না বলেও জানান তিনি। একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লু বলেন, বাংলাদেশকে নিজ স্বার্থ বা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে যুক্তরাষ্ট্র। ভারত, চীন বা রাশিয়ার লেন্স দিয়ে নয়। বিভিন্ন ফোরামের বৈঠকে ডোনাল্ড লু নিজ থেকে বলেছেন কম, শুনেছেন বেশি। তরুণ সমাজের সঙ্গে বসেও তাদের ভাবনাগুলো শুনেছেন। এত ব্যস্ততার মধ্যে পুরো একটি সন্ধ্যা কাটিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়া এক্সপার্ট তরুণদের সঙ্গে। তাদের সঙ্গে দই-ফুচকার স্বাদ নিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন। ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন।