অভিষিক্ত তানজিদের দুরন্ত ফিফটি, জয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

স্পোর্টস ডেস্ক
০৩ মে ২০২৪, ২২:২৩
শেয়ার :
অভিষিক্ত তানজিদের দুরন্ত ফিফটি, জয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

ওয়ানডে সংস্করণে ১৫টি ম্যাচ খেললেও টি-টোয়েন্টিতে তানজিদ হাসান তামিমের অভিষেক হলো আজই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের সিরিজের প্রথমটিতে নিজের সামর্থ্য প্রমাণও করলেন তরুণ এই ব্যাটার। কয়েকবার জীবন পেলেও দারুণ কিছু শটে খেললেন ৬৭ রানের দুরন্ত এক ইনিংস। তাতে ২৮ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের সহজ জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ। 

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে জিম্বাবুয়ে। তবে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাসকিন আহমেদ ও শেখ মেহেদী হাসানের বোলিং তোপে ১২৪ রানেই গুটিয়ে যায় রোডেশিয়ানরা। জবাব দিতে নেমে একেবারে শুরুতেই লিটন দাসের উইকেট হারালেও শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটের সহজ জয় পায় টাইগাররা। 

১২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই ব্লেসিং মুজারাবানির বলে বোল্ড হন লিটন। ৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান যখন ১ উইকেটে ১০, তখনই নামে বৃষ্টি। সোয়া আটটার দিকে বন্ধ হওয়া খেলা আবার শুরু হয় ৮টা ৫৫ মিনিটে। তবে কাটা যায়নি কোনো ওভার। তবে ৭ ওভার ২ বলে আবারও হানা দেয় বেরসিক বৃষ্টি। বাংলাদেশের রান তখন ৭ ওভার ২ বল শেষে ওই ১ উইকেট হারিয়েই ৪৪। উইকেটে তখন তানজিদের সঙ্গে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

বৃষ্টির পর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি শান্ত। ৫৭ রানের মাথায় লুক জংওয়ের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে শন উইলিয়ামসের হাতে ধরা পড়েন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ২৪ বলে ১ বাউন্ডারিতে ২১ রান আসে তার ব্যাটে। তৃতীয় উইকেটে জিম্বাবুয়ের বোলারদের ওপর চড়াও হন তানজিদ ও তাওহিদ হৃদয়। অপরাজিত ৬৯ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন এই দুজন। ৬৭ রানের ইনিংস খেলা তানজিদ নিজের ফিফটি স্পর্শ করেন ৩৬ বলে। ৪৭ বলের ইনিংসে ৮টি চারের পাশাপাশি হাঁকান দুটি ছক্বা। আরেক পাশে হৃদয় অপরাজিত ছিলেন ১৮ বলে ৩৩ রান করে।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে জিম্বাবুয়ে। নেমে শুরুর কয়েক ওভার দারুণ খেললেও আস্তে আস্তে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইনআপ। ৪২ রানেই দলটি হারায় ৭ উইকেট। কোনো রান না করেই ফেরেন ক্রেইগ আরভিন। শরিফুলের করা তৃতীয় ওভারে দারুণ ব্যাট চালান ব্রায়ান বেনেট। ৩ চারে তুলে নেন ১৩ রান।

চতুর্থ ওভারে কোনো উইকেট না হারালেও সাইফউদ্দিনের করা পঞ্চম ওভারে দলীয় দ্বিতীয় উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। জেরল্ড গাম্বিকে তাসকিন আহমেদের ক্যাচ বানান সাইফউদ্দিন। পরের ওভারে জিম্বাবুয়ে শিবিরে চূড়ান্ত আঘাত হানেন মেহেদী। প্রথম দুই বলেই ফেরান বেনেট ও অধিনায়ক সিকান্দার রাজাকে। এর মধ্যে একজন ফেরেন রানআউট হয়ে। তাসকিন আহমেদের করা পরের ওভারের প্রথম দুই বলে আরও ২ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। শন উইলিয়ামস ও রায়ার্ন বার্লকে হারিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইন আপ। পরে অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলে লুক জংওয়েকেও ফেরান সাইফউদ্দিন।

৪২ রানে ৭ উইকেট হারানো দলকে এরপর টেনে তোলেন মাদান্ডে ও ওয়েলিংটন। প্রথমদিকে ধীরগতিতে রান তুললেও শেষ দিকে বেশ মারমুখো ব্যাটিং করেন এই দুজন। এর মধ্যে শরিফুলের করা ১৬তম ওভারে ১১ ও লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের করা ১৮তম ওভারে দুই চার ও এক ছক্কায় নেন ১৬ রান। অবশেষে ১৯তম ওভারে ১১৬ রানের মাথায় তাসকিনের আঘাতে ভাঙে তাদের ৭৫ রানের জুটি। ৩৯ বলে ৪৩ রান করে বিদায় নেন মাদান্ডে। শেষ ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানিকে ফেরান সাইফউদ্দিন। ইনিংসের একেবারে শেষ বলে নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত থ্রোয়ে আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে ৩৪ রান করেন ওয়েলিংটন। 

বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার তাসকিন ও সাইফউদ্দিন। সমান ৪ ওভারে দুজনেই নেন ৩ উইকেট। তাসকিন দেন ১৪ ও সাইফউদ্দিন দিয়েছেন ১৫ রান। ৪ ওভারে ১ মেডেনসহ ১৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন শেখ মেহেদী। ৪ ওভার বল করলেও ৩৭ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন শরিফুল ইসলাম ও রিশাদ হোসেন।